বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তসন্ত্রাসী বাহিনী চলতি বছরটা শুরুই করেছিলো ভয়ঙ্কর রকমের হত্যাযজ্ঞেরর মাধ্যমে। তখন একমাসেই সীমান্তে ১৫ জনের বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে খুন করা হয়েছিলো। পরিস্থিতির ভয়াবহতা দেখে বাংলাদেশ সরকারের একাধিক মন্ত্রণালয় থেকে সীমান্ত হত্যা বিষয়ে কথা বলা হয়েছিলো। এত বন্ধুত্বের পরেও সীমান্তের সীমাহীন হত্যাকাণ্ডে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে মাঠেও আন্দোলন। তবে থামেনি বিএসএফের আগ্রাসন।
‘দুই দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিদ্যমান এমন সীমান্ত থেকেও বাংলাদেশ সীমান্তে প্রতিবছর বিএসএফের হাতে বেশি মানুষ খুন হয়’। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এ বছর সংগঠিত হওয়া হত্যাকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সংবাদমাধ্যমটি জানাচ্ছে, ভারত-বাংলাদেশের দীর্ঘ সীমান্তে এমন কোনো মাস অতিক্রান্ত হয় না যে মাসে অন্তত কয়েকজন বাংলাদেশি বিএসএফের হাতে প্রাণ হারান না।
“হত্যার ঘটনাগুলিও বড়ই পৈশাচিক। কাউকে পিটিয়ে, কাউকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে, কাউকে গুলি করে হত্যা করা হয়। কাঁটাতারে ঝুলিয়ে হত্যার নজির রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে”।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বরাতে আল জাজিরা আরও জানিয়েছে, চলতি বছরের সবে ছয়টি মাস অতিবাহিত হয়েছে। এ ছয় মাসেই অন্তত ২৫ বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন সীমান্তে। মারাত্মক আহত হয়েছেন আরও ১৭ জন।
প্রতিবেদনে বিএসএফের তথ্যে হত্যার শিকার বাংলাদেশিদের সীমান্ত অতিক্রমকারী হিসেবে দেখানোর প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আল জাজিরা।
নিছক সীমান্ত অতিক্রম করার দায়ে মৈত্রী দেশের নাগরিকদের খুন করে ফেলার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে প্রতিবেদনে।
পাকিস্তান, চীন, এমনকি ক্ষুদ্র দেশ নেপালের সীমান্তে নমনীয় ভারতের অন্যরূপ দেখে বাংলাদেশিরা। সম্প্রতি উল্লেখিত তিনটি রাষ্ট্রের সীমান্ত বিরোধের মধ্যেও বাংলাদেশ সীমান্তে তারা চালিয়ে যাচ্ছে বর্বরতা। গত জুন মাসে অন্তত ১০ জন বাংলাদেশি হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
বিপরীতে বাংলাদেশের পদক্ষেপ পতাকা বৈঠক পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। অনেক সময় পতাকা বৈঠকের পরও বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি কাছে নিহতের লাশ হস্তান্তর করা হয় না।
সীমান্ত হত্যাকে পাশের রাষ্ট্রের প্রতি শান্তি বিঘ্নিত করার উস্কানি হিসেবেই দেখেন বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ এবং বিশিষ্ট জনেরা।