পাকিস্তান সরকার কাতারে অবস্থিত ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান ও তালেবানের উপ-নেতা মোল্লা আবদুল গনি ব্রাদার এবং হাক্কানি নেটওয়ার্কের বর্তমান আমীর সিরাজউদ্দিন হাক্কানিসহ বেশ কয়েকজন তালেবান উমারাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। যে কারণে তালেবানদের রাজনৈতিক কার্যালয়েরর মুখপাত্র সোহাইল শাহিন হাফিজাহুল্লাহ্ সহ পাকিস্তান ও আফগান জনগণ নাপাক সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনা করেন।
কিন্তু পাকিস্তান সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার আরোপের ২ দিন পরেই দেশটির সরকারি আমন্ত্রণে পাকিস্তান সফরে ইসলামাবাদ পৌঁছেন মোল্লা আবদুল গনি হাফিজাহুল্লাহ্ সহ তালেবানদের ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। যা অবশ্যই সাধারণ মানুষের অন্তরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বলা হয়েছিল যে, নাপাক সরকার ইমারতে ইসলামিয়ার উপ-প্রধান মোল্লা আবদুল গনী ব্রাদার, হাক্কানী নেটওয়ার্ক সহ তালেবানদের আরও বেশ কয়েকজন নেতাকে একটি তালিকায় যুক্ত করেছে, যার অধীনে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা, দেশে ভ্রমণ করা এবং অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন না। তবে বিশ্লেষকদের মতে, তালেবান নেতারা শান্তি আলোচনায় অংশ নেওয়ার ভিত্তিতে জাতিসংঘ বহির্বিশ্বে তালেবানদের ভ্রমণের অনুমতি দিতে বাধ্য থাকবে। আর সেই ভিত্তিতেই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই তালেবান পাকিস্তান সফর করেছে।
সর্বশেষ সকল জল্পনাকল্পনার পরিসমাপ্তি টেনে গত ২৫ আগস্ট মঙ্গলবার ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের উপ-প্রধান মোল্লা আবদুল গনী ব্রাদার এর নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের তালেবান প্রতিনিধি দলটি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আফগানিস্তানে নিয়োজিত পাকিস্তানের বিশেষ দূত এবং দেশটির অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাত করেছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
সোহাইল শাহিন হাফিজাহুল্লাহ্ জানান, তালেবানদের প্রতিনিধি দলটি প্রথমেই পাকিস্তানে অবস্থিত আফগান শরণার্থী সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছিল, যা পাকিস্তানী পক্ষ গ্রহণ করেছিল এবং আশ্বাস দিয়েছিল যে এটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা সমাধান করবে।
তিনি আরও জানান, পাকিস্তানে আফগান শরণার্থীদের চলাচল ও ডকুমেন্টেশন সম্পর্কিত বিষয়, করাচি বন্দরে আফগান ব্যবসায়ীদের সম্পত্তি বিলুপ্তির বিষয়টি, পাশাপাশি আফগানীদের রফতানির জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এবং পথে বিলম্বের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছিল।
এছাড়াও আফগান শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি এবং আফগান শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দাবিও করা হয়েছে। এছাড়াও পাকিস্তান সরকারের কারাগারে বন্দী আফগান শরণার্থীদের মুক্তি নিয়েও আলোচনা করেছিল তালেবান প্রতিনিধিদল, পাকিস্তানি কর্মকর্তারা ছোটখাট অপরাধে জড়িত আফগান বন্দীদের মুক্তি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর কঠিন অপরাধীদের কারাবাস কমানোর কথাও জানিয়েছে তারা।