সম্প্রতি তিন দফা বন্যায় সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের পুটি-পুশি ব্রিজ ধসে প্রায় দুই মাস ধরে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জেলা শহরের সাথে দোয়ারাবাজার উপজেলার তিন ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই সড়ক পথ। এই সড়কটি জেলা শহর থেকে সরাসরি দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের আমবাড়ি-পুটি-পুশি হয়ে সুরমা নদীর পাড়ে নূরপুর সিএনজি স্টেশনে এসে সংযুক্ত হয়েছে।
উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী সুরমা, লক্ষীপুর ও বোগলা ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ নূরপুর সিএনজি স্টেশন থেকে প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে জেলা শহরে আসা-যাওয়া করেন।
সুনামগঞ্জে সম্প্রতি দ্বিতীয় দফা বন্যায় সড়কের পুটি-পুশি ব্রিজটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যার পানির তীব্র স্রোতের বেগে পিলার থেকে মাটি সরে গিয়ে গত ২৯ জুলাই এই ব্রিজটি সম্পূর্ণভাবে ধসে যায়। পুটি-পুশি ব্রিজ ধসে ব্রিজ ধসে পড়ার প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও এখনো মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়নি এলজিইডি।
বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এবং মেরামতের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে জনদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ৪ ইউনিয়নের জনসাধারণের। ব্রিজটি ধসার পর থেকে এখনো স্থানীয় নূরপুর সিএনজি স্টেশনে অনির্দিষ্টকালের জন্য যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সাধারণ যাত্রীসহ শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও সরকারি-বেসরকারি চাকুরিজীবীরা পড়েছেন বিপাকে। সময়মতো কর্মস্থলে যেতে পারছেন না তারা। জেলা শহরমুখী গাড়ি ধরতে অর্ধেক পথই হেটে পাড়ি দিতে হচ্ছে। জান চলাচল ব্যাহত থাকায় অসুস্থ ও বয়স্ক মানুষদের চিকিৎসা সেবার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে নানান ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বাড়ছে জনদুর্ভোগ।
স্থানীয় বাসিন্দা রিটন দাস জানান, ব্রিজটি ধসে পড়ার পর থেকে নূরপুর সিএনজি স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সময়মতো কর্মস্থলে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হয়ে গাড়ির জন্য অনেক পথ হেটে যেতে হচ্ছে।
যাত্রীবাহী সিএনজি চালক কলমদর আলী জানান, প্রায় দুই মাস ধরে নূরপুর সিএনজি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। গাড়ি ধরতে দীর্ঘপথ হেটে আসতে হয়। এ কারণে এখন যাত্রীদের আনাগোনা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। বেশিরভাগ সিএনজি চালক এখন বেকার সময় পার করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা দীপক দাস জানান, পুটি-পুশি ব্রিজ ধসে যাওয়ার পর উপজেলা পিআইও অফিস এবং এলজিইডি অফিসকে অবহিত করেছি। কর্তৃপক্ষকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজের ছবিও পাঠিয়েছি। কিন্তু এর প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও কোনো ধরনের খোঁজখবর পর্যন্ত নেয়নি। দীর্ঘ দিন যাবৎ গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিন স্থানীয় বাসিন্দাসহ বাইরের এলাকার মানুষদের যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ব্রিজটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানান তিনি।
জনদুর্ভোগ লাঘবে ধসে পড়া পুটি-পুশি ব্রিজটি অবিলম্বে মেরামত করার দাবি জানিয়েছেন পথচারীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। নয়া দিগন্ত
//////