রোহিঙ্গাদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদfলতে (আইসিসি) স্বীকারোক্তি দিয়েছেন মিয়ানমারের দুই সন্ত্রাসী সেনা সদস্য। ক্লিয়ারেন্স অপারেশন নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই মিশনে সৈনিকদের ওপর নির্দেশ ছিল ‘যাকে দেখবে তাকে গুলি করবে’। সেখানে হত্যা, গণকবর, ধর্ষণ ও গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার বর্ণনা দিয়েছেন ওই দুই সেনা সদস্য।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটসের বরাত দিয়ে আজ মঙ্গলবার এ খবর জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। স্বীকারোক্তি দেওয়া মিয়ানমারের দুই সেনা সদস্য হলেন মিও উইন তুন (৩৩) ও জ নায়েং তুন (৩০)।
মিও উইন তুন জানিয়েছেন, তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ পালন করে ৩০ জন রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যায় অংশ নিয়েছিলেন। সে সময় সেল টাওয়ার ও সামরিক ঘাঁটির কাছে একটি গণকবর দিয়েছেন।
মিও উইন তুন স্বীকারোক্তিতে বলেন, ‘কর্নেল থান থাকি রোহিঙ্গাদের সমূলে হত্যার নির্দেশ দেন। এরপর সৈনিকরা মুসলিমদের কপালে গুলি করে এবং লাথি মেরে কবরে ফেলে দেয়।’
বুথিডং অঞ্চলে কয়েকটি গ্রাম ধ্বংস করা ও আরও ৬০ থেকে ৭০ জন রোহিঙ্গা হত্যার সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়েও স্বীকারোক্তি দেন মিও।
জ নায়েং তুন বলে, ‘মংদু টাউনশিপে ২০টি গ্রাম ধ্বংস এবং অন্তত ৮০ জনকে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলাম। এ ছাড়া সার্জেন্ট পায়ে ফোয়ে অং এবং কিয়েত ইয়ু পিন তিনজন রোহিঙ্গা নারীকে ধর্ষণ করেছে, যার সাক্ষী আমি।’
স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শুধুমাত্র এই দুজন কমপক্ষে ১৫০ জন রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া কয়েক ডজন গ্রাম ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত।
এদিকে ফরটিফাই রাইটসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই স্বীকারোক্তির ফলে ধারণা করা হচ্ছে, ওই দুই সৈনিক কোর্টের কাছে নিজেদের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে ভবিষ্যতে মামলায় কাজ করবে। আইসিসির বিভিন্ন ধরনের সাক্ষী সুরক্ষার (উইটনেস প্রটেকশন) নিয়ম আছে এবং তার অধীনে এ ধরনের সাক্ষীদের সব ধরনের সুরক্ষা দেওয়া হয়।
ওই দুই সেনা সদস্য ১৯ জন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছে, যারা সরাসরি এ ধরনের নৃশংসতা করেছে। এ ছাড়া ছয়জন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা এসবের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।