ফেলানি হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর, এখনো বিচার পায়নি তার পরিবার

0
696
ফেলানি হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর, এখনো বিচার পায়নি তার পরিবার

ফেলানি হত্যার ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। এখনো বিচার পায়নি তার পরিবার। ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় দিন গুনছে ফেলানির মা-বাবা এবং স্বজনরা। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা সত্বেও আশায় বুক বেঁধে আছেন তারা।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ফুলবাড়ীর উত্তর অনন্তপুর সীমান্তের ৯৪৭ নম্বর আন্তর্জাতিক পিলারের পাশে মই বেয়ে কাঁটাতার পার হচ্ছিল ফেলানি । বাবার সঙ্গে দেশে ফিরছিল সে। সে সময় টহলরত ভারতীয় চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ ফেলানিকে গুলি করে হত্যা করে। সাড়ে চার ঘণ্টা ফেলানির দেহ কাঁটাতারের ওপর ঝুলে থাকার পর লাশ নিয়ে যায় বিএসএফ।

বিচারের নামে প্রহসন

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অব্যাহত চাপের মুখে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলায় বিএসএফ’র ১৮১ সদর দফতরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানি হত্যার বিচারকার্য শুরু হয়। কিন্তু ৫ সেপ্টেম্বর ওই আদালত ফেলানি হত্যায় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করেন। ১১ সেপ্টেম্বর ওই রায় প্রত্যাখ্যান করে ভারতীয় হাই কমিশনের মাধ্যমে ভারত সরকারের কাছে ফেলানি হত্যায় ন্যায় বিচার চেয়ে একটি চিঠি দেন ফেলানির বাবা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনরায় ফেলানি হত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। পুনর্বিচারে ২০১৫ সালের ২ জুলাই একই আদালত ফের আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেন।

২০১৫ সালের ১৩ জুলাই ভারতীয় মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানি হত্যার বিচার ও ৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণের দাবিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে রিট করেন। এর জবাবে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্টো ফেলানির বাবা নূরুল ইসলামকে দায়ী করে বক্তব্য দেয়। ২০১৬ ও ১৭ সালে কয়েক দফা ফেলানি হত্যা মামলার শুনানি পিছিয়ে যায়। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হলেও এখন পর্যন্ত শুনানি হয়নি।

অভিশাপ দিয়ে যায় ঝুলন্ত ফেলানি

সীমান্ত হত্যা কমছে না বরং বাড়ছেই। ফেলানি যেমন বিচার পায়নি, তেমনি বিচার পায়নি তার পরে সীমান্ত হত্যার শিকার কেউ-ই। বাবার চোখের সামনে কাঁটাতারে ঝুলে থাকলো ফেলানির লাশ, কিন্তু আদালতে তরতর করে খালাস পেয়ে গেলো খুনি বিএসএফ। গেরুয়া আদালতে বিএসএফ খালাস পায়, খালাস পায় না কেবল আমাদের ফেলানিরা। সীমান্তে ফেলানিরা ঝুলে থাকে না, ঝুলে থাকে বাংলাদেশ।

তাই বিচারহীনতার এই সময়ে এবং সমাজে ফেলানিদের চিৎকার গুমরে গুমরে উঠে বারবার। অভিশাপ দিয়ে যায় আমাদের। আমরা কি শুনতে পাই?

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২০২০ সালে ৪০৯২টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৪৯৬৯ জন
পরবর্তী নিবন্ধমিয়ানমারে অবৈধ ভ্রমণের অজুহাতে প্রায় একশ’ রোহিঙ্গাকে আটক করল পুলিশ