অতি সম্প্রতি (২৪ জুন) তালিবানদের “ভয়েস অফ জিহাদ” ওয়েবসাইটে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের সহকারী (ডিপুটি) আমীর, মুহতারাম সিরাজউদ্দীন হাক্কানি হাফিযাহুল্লাহ এর নসীহতমূলক একটি বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে।
আফগানিস্তানে আল-কায়েদার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসাবে পরিচিত সিরাজউদ্দীন হাক্কানী আফগানিস্তানের সর্বশেষ অবস্থা ও বিদেশী শক্তিকে লক্ষ্য করে সবচাইতে বেশি হুশিয়ারি বার্তা প্রদান করে আসছেন। সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট নিয়েও তালিবান যোদ্ধা, গভর্নর এবং বিচারকদের জন্য দিকনির্দেশনাও প্রদান করে আসছেন তিনি। তাঁর সর্বশেষ বার্তাটি মুজাহিদদের “ধারাবাহিক বিজয়” তত্ত্বাবধানকারী তালিবানের সামরিক কর্মকর্তাদের সম্বোধন করে দিয়েছেন।
উক্ত বার্তায় আমীরে মুহতারাম আফগান মুজাহিদিনদের একের পর এক বিজয় অভিযানের প্রশংসা করেন এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নসীহা করেন।
বার্তাটিতে তিনি তালিবানদের জেলা ও প্রাদেশিক গভর্নর এবং কমান্ডারদের-কে দলটির নেতৃত্বের “নির্দেশের প্রতি মনোনিবেশ” করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন- অস্ত্র এবং ক্ষমতা একজন ব্যক্তিকে জালিমে পরিণত করতে পারে। তাই তিনি সকল তালিবান যোদ্ধা ও গভর্নরদের ইমারতে ইসলামিয়ার আমীর শাইখ হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং তালিবানের সামরিক কমিশনের নির্দেশ কঠোরভাবে পালন করতে বলেছেন।
সিরাজউদ্দীন হাক্কানি মুজাহিদীনদের ক্রমাগত বিজয়গুলোকে তাঁদের জন্য পরীক্ষা বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, একের পর এক এলাকা বিজয়ের ফলে মুজাহিদিনদের কার্যক্রম জিহাদ ও সামরিক অভিযান থেকে ক্রমেই শাসনব্যবস্থার দিকে বিস্তৃত হচ্ছে। তিনি তাঁদের বিজয় অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি বিজিত এলাকার সামরিক, প্রতিরক্ষা এবং জনকল্যাণমূলক পরিকল্পনা তৈরিতে মনোনিবেশ করতে বলেছেন। তিনি মুজাহিদিনদের সাধারণ জনগণের সাথে সদাচরণ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বিস্তৃত করতেও পরামর্শ দিয়েছেন।
এছাড়াও তিনি মুজাহিদিনদের দূর্নীতিগ্রস্ত ও দূর্বল কাবুল শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে সতর্ক করার পর বলেন, “সুশাসন ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি, তাই অবশ্যই আমাদের ভাইদের এই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সর্বদা সোচ্চার থাকা উচিত।” তিনি আরো বলেন, “মানুষের অধিকার রক্ষার ব্যাপারে মুজাহিদিনদের সর্বদা সচেতন থাকা অত্যাবশ্যক। তাঁদের শরীয়াহ মোতাবেক এবং উলামায়ে কেরামদের সাথে মাশওয়ারা করে শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করা উচিত। আলেমদের অর্থব্যবস্থা ও কোষাগার, আয় এবং ব্যায়ের খাত কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে”।
তিনি মুজাহিদিনদের বলেন, “যারা শরীয়াহর ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছেন, তাদের সম্পত্তিকে গণিমত গণ্য করে জব্দ করবেন না। গণিমত তো শুধু তাই যা যুদ্ধলব্ধ”।
আমীরে মুহতারাম এরপর মুরতাদ সরকারের পদলেহী ও তাদের সাহায্যকারী আফগান গোত্র নেতাদের নসীহা করেছেন।
এছাড়া মুরতাদ বাহিনীর সদস্য ও সংশ্লিষ্ট যারা আত্মসমর্পণ করতে রাজি নয় তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
সিরাজউদ্দীন হাক্কানি বিগত প্রায় ১৪ মাস যাবত চলমান শান্তিচুক্তির প্রক্রিয়াকে “অত্যন্ত ফলদায়ক” হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ইমারতে ইসলামিয়ার বিরোধী শক্তিগুলোর ব্যপারে আমাদের সেনাদের সদা সতর্ক ও প্রস্তুত থাকতে হবে।
উপদেশমূলক এই বার্তা আফগান মুজাহিদ ভাইদের জন্য ফলদায়ক ও দিকনির্দেশনামূলক হবে। একই সাথে এই ধরণের বার্তা মুজাহিদীনদের শৃঙখলাবদ্ধ রাখতে সহায়তা করবে, ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য যে, আল-কায়েদার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখায় এবং হক্কানী নেটওয়ার্কের নেতৃত্বের ফলে ক্রুসেডার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও সিরাজউদ্দিন হাক্কানী হাফিজাহুল্লাহ্-কে তাদের মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টে তালিকাভুক্ত করে রেখেছে।
আল্লাহ তা’আলা শাইখকে নেক হায়াত দান করুন। সমস্ত বিপদাপদ থেকে হেফাজত করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন ।
আল্লাহ তিনাকে নেক হায়াত দান করুক!
বারাকাল্লাহু ফী হায়াতিকা।ওয়া আাদামাল্লাহু সিহ্হাতাহু।আমীন।