উদ্বোধনের দুই দিনের মাথায় আসামে মিয়া মুসলিমদের জাদুঘর সিল করে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছে, পুলিশ এই জাদুঘরের তহবিলের উৎস তদন্ত করবে।
গত ২৩ অক্টোবর গোয়ালপাড়া জেলার লখিপুর এলাকায় আসামে মিয়া মুসলিমদের ঐতিহ্য সম্বলিত জাদুঘরটি উদ্বোধন করা হয়েছিল। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “ডিসি গোপালার নির্দেশ অনুসারে মোহর আলীর এই জাদুঘরটি পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে।”
উগ্র হেমন্ত শর্মা বলেছে, এমনিতেই মিয়া মুসলিমদের উত্থান এবং মিয়া স্কুলগুলো গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। “মিয়া জাদুঘর” স্থাপনের সাথে জড়িতদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। এই জাদুঘরের সাথে সংশ্লিষ্টরা উপযুক্ত জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উগ্র শর্মা সাংবাদিকদের বলেছে, “তারা এই জাদুঘর স্থাপন করার জন্য কোথা থেকে অর্থ পেয়েছে, তা পুলিশ তদন্ত করবে। এই বিষয়ে একটি মামলা হবে।”
শর্মার পাশাপাশি হিন্দুত্ববাদী বিজেপি বিধায়করাও মিয়া মুসলিমদের কমিউনিটি মিউজিয়ামের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডামূলক প্রচারণা শুরু করেছে।
এদিকে, আসাম মিয়া পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ তিনজনকে কথিত সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে। আসাম পুলিশের বরাত দিয়ে পিটিআই এ তথ্য জানিয়েছে।
আল কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ (একিউআইএস) এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সাথে তাদের কাল্পনিক যোগসূত্রের অভিযোগ তুলে তদন্ত করার নামে পুলিশ তাদের হয়রানি করছে।
গত মঙ্গলবার রাতে, মিয়া পরিষদের সভাপতি এম মোহর আলীকে জাদুঘর থেকে তুলে নেওয়া হয়। সাধারণ সম্পাদক আবদুল বাতেন শেখকে ধুবরি জেলার আলমগঞ্জে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটক তৃতীয় ব্যক্তি হলেন নাহারকাটিয়া জুনিয়র কলেজের অধ্যাপক তনু ধাধুমিয়া। তিনি জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন।
বাঙালি বংশোদ্ভূত মুসলিম জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্য প্রদর্শন করা জন্য এ জাদুঘরটি নির্মাণ করা হয়েছিল। হিন্দুত্ববাদী আসাম সরকার সেখানকার প্রায় দেড় কোটি মুসলিমের পরিচয় মুছে দিতে চায়। তাই তারা এ জাদুঘরের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন শুরু করেছে।
তথ্যসূত্র:
——–
1. Miya museum sealed in Assam within days of inauguration, CM says police will probe funding ( Maktoob Media)
– https://tinyurl.com/yc5ckz43
2. Assam: Three activists associated with Miya museum detained in UAPA case
– https://tinyurl.com/5xhchmet