দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আবারো গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফাকে ঘিরে সামরিক অভিযান শুরু করেছে। যার ফলে এই হাসপাতালে আশ্রয় নেওয়া হাজারো বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। ১৮ মার্চ, সোমবার এই অভিযান শুরু হয়েছে।
গাজা শহরের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা বেশ কিছু ট্যাংককে হাসপাতাল ঘিরে ফেলতে দেখেছেন। তারা হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় বিমান হামলার কথাও উল্লেখ করেছেন।
তারা বলেছেন যে, আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের গেটে আগুন লেগেছে, যার ফলে হাসপাতালের বাস্তুচ্যুত নারী ও শিশুদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শ্বাসরুদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দখলদার বাহিনী স্পেশালাইজড সার্জারি বিল্ডিং এবং ইমার্জেন্সি রিসেপশন বিল্ডিংয়েও হামলা চালিয়েছে, এমনকি যারা সরে যাওয়ার চেস্টা করছিল তাদের ওপর সরাসরি গুলি পর্যন্ত চালিয়েছে।
আগুনের তীব্রতার কারণে মেডিকেল টিম আহতদের বাঁচাতে পারেনি, কারণ দখলদার বাহিনী জানালার কাছে আসা মাত্র সবাইকে লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছিল। বন্দুকের গুলি ও কামানের গোলার তীব্রতায় কেউ আহতদের হাসপাতালের ভেতর নিয়ে যেতে পারছিল না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই হাসপাতালে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ইসরায়েলি হামলার মুখে আটকা পড়েছেন। এর মধ্যে আছেন বাস্তুচ্যুত বেসামরিক মানুষ, আহত রোগী ও চিকিৎসাকর্মীরাও।
৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর বেশ কয়েকবার গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রকে ঘিরে হামলা ও অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েল।
এর আগে গত নভেম্বরেও আল-শিফায় অভিযান চালিয়েছিল দখলদাররা। সে সময় সারা বিশ্ব এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছিল।
আল শিফা হাসপাতালে ট্যাংক, ড্রোন ও অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে আসা এবং হাসপাতালের ভেতর গুলি চালানো যুদ্ধাপরাধের শামিল। আর এই কাজ একাধিকবার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকার ১৫৫টি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সন্ত্রাসী ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩১ হাজার ৬৪৫ জন মানুষ। নিহতের মধ্যে ১৩ হাজার শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বাকিদের মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি। ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭২ হাজার ৮৮৯ জন মানুষ।
তথ্যসূত্র:
1. Dozens killed in Israeli bombing of Gaza’s Shifa hospital
– https://tinyurl.com/yxa968dp