আল-কায়েদা সাহেল অঞ্চলের প্রতিরোধ যোদ্ধারা অঞ্চলটির বেনিন ও টোগোতে সামরিক অপারেশন জোরদার করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে দেশ দু’টিতে প্রতিরোধ বাহিনী (জেএনআইএম) এর মুজাহিদদের পৃথক অপারেশনে অন্তত ২৭ সেনা নিহত এবং বহু সংখ্যক সৈন্য আহত হয়েছে।
আঞ্চলিক সংবাদ মাধ্যম আয-যাল্লাকার রিপোর্ট অনুযায়ী, মুজাহিদগণ প্রথম অপারেশনটি পরিচালনা করেন গত ২০ জুলাই দুপুর বেলায়। সামরিক এই অপারেশনটি পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম দেশ টোগোর উত্তরে (বুরকিনা ফাসো) সীমান্ত রেখায় সেনা বাহিনীর অন্তর্গত একটি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ৪ মিনিটের একটি ভিডিওতে অভিযানে অংশ নেওয়া কয়েক শতাধিক মুজাহিদকে হালকা ও মাঝারি অস্ত্রের পাশাপাশি ZPU-4 স্বয়ংক্রিয় কামান এবং OG-7 প্রজেক্টাইল সহ ভারী অস্ত্র ব্যাবহার করতে দেখা যায়।
সূত্রমতে, টোগোলিজ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কয়েক ঘন্টার তীব্র লড়াই শেষে মুজাহিদগণ ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হন।
এসময় মুজাহিদদের তীব্র আক্রমণে ১৫ এরও বেশি টোগোলিজ সৈন্য নিহত হয়। আর আহত এবং নিখোঁজ হয় আরও অনেক সৈন্য। ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত্রু বাহিনীর ২টি সাঁজোয়া যান, ৩টি গাড়ি এবং প্রচুর সংখ্যক মোটরসাইকেল। অপরদিকে ঘাঁটি থেকে মুজাহিদগণ গনিমত হিসাবে অর্জন করেছেন ২টি যানবাহন এবং ২টি দুশকা, ২২টি মেশিনগান (M16), ২টি ক্লাশিনকোভ, ২টি রকেট লঞ্চার, ৪টি মর্টার, ১টি পিকা মেশিনগান, ২৭৬টি মেশিনগান বুলেট চেইন। এছাড়াও বিভিন্ন অস্ত্র এবং প্রচুর পরিমাণে গোলাবারুদ, বুলেট বাক্স ও অন্যান্য অনেক সামরিক সরঞ্জাম মুজাহিদগণ জব্দ করেছেন।
এমনিভাবে গত ২৪ জুলাই বুধবার, পশ্চিম আফ্রিকার আরেক দেশ বেনিনেও সামরিক অপারেশন পরিচালনা করেন ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদগণ। অভিযানটি করম নামক অঞ্চলের চাল্লা-দোটিবী এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো হয়। মুজাহিদগণ অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই ঘাঁটিতে তীব্র ঝড় তুলেন। এর ফলে বেনিন সেনাবাহিনীর ১৩ সৈন্য নিহত হয়। এসময় মুজাহিদগণ ঘাঁটি থেকে ২টি পিকা, ১টি আরপিজি, ১৩টি ক্লাশিনকোভ এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম গনিমত হিসাবে অর্জন করেন।
এটি লক্ষণীয় যে, আল-কায়েদা শাখা জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম), তাদের সামরিক কার্যক্রম পশ্চিম আফ্রিকার অভ্যন্তর থেকে উপকূলরেখা পর্যন্ত সম্প্রসারণের কৌশল অনুসরণ করছে।
আর এই সম্প্রসারণ কৌশলের অধীনে আল-কায়েদা যোদ্ধারা মালি, বুরকিনা ফাসো এবং নাইজারে নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর পর আইভরি কোস্ট, গিনি, সেনেগাল, ঘানা, টোগো নাইজেরিয়া এবং বেনিনের মতো দেশগুলোর সীমান্তের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।