পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে সম্প্রতি জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ৪টি সফল অপারেশন পরিচালনা করেছেন ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদগণ। এসময় দেশটির জান্তা বাহিনী থেকে ২টি সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন মুজাহিদগণ।
সূত্রমতে, আল-কায়েদা ইসলামি মাগরিব সংশ্লিষ্ট জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম) মুজাহিদগণ সাহেল অঞ্চলের নাইজারে সাম্প্রতিক সময়ে সামরিক অপারেশন জোরদার করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় মুজাহিদগণ গত ১৪ থেকে ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশটির জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ৪টি বড় ধরনের সামরিক অপারেশন চালিয়েছেন।
আয-যাল্লাকার রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদগণ তাদের প্রথম অভিযানটি পরিচালনা করেছেন গত ১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার। অভিযানটি নাইজারের দোসো রাজ্যের তানুগা শহরে সেনাবাহিনীর একটি সামরিক পয়েন্ট লক্ষ্য করে চালানো হয়। পরে ঘটনাস্থলে উভয় বাহিনীর মাঝে তীব্র লড়াই সংঘটিত হয়। এসময় মুজাহিদগণ বীরত্বের সাথে শত্রু বাহিনীকে পরাস্ত করেন এবং সামরিক পয়েন্টের নিয়ন্ত্রণ নেন। ধ্বংস করেন শত্রু বাহিনীর ২টি সামরিক গাড়ি, ২টি মোটরসাইকেল। আর মুজাহিদগণ ঘটনাস্থল থেকে গনিমত হিসাবে অর্জন করেন ১টি ক্লাশিনকোভ, ৩টি পিস্তল এবং অন্যান্য অনেক সামরিক সরঞ্জাম।
তবে এই অভিযানে মুজাহিদদের হাতে কত সংখ্যক শত্রু সৈন্য হতাহত হয়েছে বা বন্দী হয়েছে তা নিশ্চিত করেনি জেএনআইএম।
এই অভিযানের পরের দিন মুজাহিদগণ নাইজারের টিলাবেরি রাজ্যে একটি দুর্দান্ত সফল অভিযান পরিচালনা করছেন। অভিযানটি রাজ্যের নিটিকিয়া শহরের টোরোডি এলাকায় নাইজারের স্পেশাল ফোর্সের সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। এতে স্পেশাল ফোর্সের অন্তত ৪৫ সেনা সদস্য নিহত এবং আরও কয়েক ডজন সৈন্য আহত হয়েছে। বাকি সৈন্যরা ঘাঁটি ছেড়ে নিটিকিয়া শহরের কেন্দ্রের দিকে পালিয়ে যায়। সেনাদের এই পলায়নের পর মুজাহিদগণ স্পেশাল ফোর্সের ঘাঁটিটির নিয়ন্ত্রণ নেন।
আয-যাল্লাকার তথ্যমতে, মুজাহিদগণ স্পেশাল ফোর্সের এই ঘাঁটি থেকে প্রচুর সংখ্যক অস্ত্র ও গোলাবারুদ গনিমত হিসাবে অর্জন করেছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে ৬টি সামরিক যান, ১টি মর্টার, ১টি ১৪.৫ ক্যালিবারের মেশিনগান, ১৩টি দুশকা, ১টি রকেট লঞ্চার, ৪টি আরপিজি, ৫টি পিকা, ১টি আরবিকা, ৬টি ক্লাশিনকোভ, ৫টি পিস্তল, ২টি ড্রোন, ৯৪টি গোলাবারুদ বাক্স এবং অন্যান্য অনেক সামরিক সরঞ্জাম ও বুলেট বাক্স।
এরপর গত ১৭ সেপ্টেম্বর, রাজ্যটির ডিরকৌ শহরের সিরফা এলাকায় একটি অতর্কিত আক্রমণ চালান মুজাহিদগণ। আক্রমণটি এই এলাকায় অবস্থিত নাইজার সেনাবাহিনীর একটি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো হয়। এতে অন্তত ১৬ সেনা সদস্য নিহত হয়।
এদিকে নাইজারের প্রতিবেশি নাইজেরিয়া সীমান্তেও উপস্থিতি বাড়াচ্ছেন ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিনরা। ধারণা করা হচ্ছে সীমান্ত হয়ে নাইজেরিয়ার প্রতিরোধ বাহিনী জামা’আত আনসারুল মুসলিমিনকে শক্তি যোগাচ্ছে আল-কায়েদা। আর তারই অংশ হিসাবে গত ২১ সেপ্টেম্বর ভোরে, জেএনআইএম মুজাহিদগণ নাইজেরিয়া সীমান্তবর্তী নাইজারের ডোসোর অঞ্চলে একটি অতর্কিত আক্রমণ চালিয়েছেন। এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন জেএনআইএম-এর কয়েক ডজন মুজাহিদ। এই মুজাহিদিনরা ডোসোর অঞ্চলের টোম্বোত এলাকায় অবস্থিত নাইজার সেনাবাহিনীর একটি সামরিক চৌকি লক্ষ্য করে তীব্র আক্রমণ চালান। ফলশ্রুতিতে দেশটির সামরিক বাহিনীর অন্তত ৬ সেনা সদস্য এবং ২ পুলিশ সদস্য নিহত হয়।
