শেরপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৫ হাজার হেক্টর ধানক্ষেত; বিধ্বস্ত ৫,০০০ ঘর-বাড়ী

0
12

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বন্যার বেশির ভাগ পানি নেমে গেছে। পানি নেমে যাওয়ায় ভেসে উঠছে নিমজ্জিত আমন ধানক্ষেত। প্রায় ১০ দিন পানিতে ডুবে থাকায় পচে নষ্ট হয়েছে নিম্ন এলাকার ১৫ হাজার ১০০ হেক্টর জমির আমন ধানক্ষেত।

এবারের স্মরণকালের পাহাড়ি ঢলের বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ধসে পড়েছে শতশত মাটির কাঁচা দালান, টিনশেড ও আধপাকা ঘর, ভেসে গেছে শতশত পুকুরের মাছ, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন আবাদের উঠতি ফসল ও নষ্ট হয়েছে সবজি-ক্ষেত। ইতোমধ্যে ৪৮ হাজার ৫০০ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা প্রণয়ন করে এসব তথ্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

পাহাড়ি ঢলের পানি ভাটির দিকে নেমে গেছে। সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। ইতিমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরেছেন অনেকেই।

তবে অধিকাংশ ভুক্তভোগীর বাড়ির ঘরই বন্যার পানিতে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন ফসলের মাঠ, মাছের ঘের ও মাটির দালান। পানি কমার সাথে সাথেই দেখা দিয়েছে গো খাদ্য সংকট। ঢলের পানিতে খড়ের গাদা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গবাদিপশু খাদ্য সংকটে পড়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যমতে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ৪ হাজার ৬৮টি ঘর সম্পূর্ণ, ১ হাজার ২০০টি ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাস্তুহারা এসব পরিবারের সদস্যরা। ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ায় রাত কাটছে তাদের অন্যের বাড়িতে কিংবা অস্থায়ী ছাউনিতে।

১৫ হাজার ১০০ হেক্টর জমির আমন ধানক্ষেত, ১০৮ হেক্টর জমির শাকসবজি ক্ষেত ও বস্তায় লাগানো আদা চাষ নষ্ট হয়ে প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া উপজেলার ২ হাজার ৮৭৫টি পুকুরের মাছ ঢলের পানিতে ভেসে গেছে।

উপজেলার আন্ধারুপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম (৪০) গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বাড়িতে ৩টি মাটির দালান ঘর ছিল। ঢলের পানি এসে ৩টি ঘরই ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। এখন আমি অন্যের বাড়িতে অনেক কষ্ট করে থাকতেছি। এখন আমার মাথা গুজার ঠাঁই নেই।’

ফকিরপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী আছিয়া বেগম (৭০) বলেন, ‘গাঙ্গে (নদী) আমার ঘরবাড়ি ভাইঙ্গা নিছে গা। অনেক কষ্ট কইরা থাকতাছি। একটা ঘর পাইলে কষ্টডা একটু কমতো।’

বেনীরগোপ গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান ও মুনছুর আলী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কষ্ট করে যা ধান আবাদ করেছিলাম সব নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষি আবাদই আমাদের উপার্জনের উৎস। ক্ষেতের ধান নষ্ট হয়ে যাওয়া এখন আমাদের দিন চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।’


তথ্যসূত্রঃ
১.‘কষ্ট করে ধান আবাদ করেছিলাম সব নষ্ট হয়ে গেছে’
-https://tinyurl.com/ym6unmuh

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধভিডিও || কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতির শাসন তুলে নিল ভারত;গত ৫ বছরে হত্যা করেছে ৯৩৩ কাশ্মীরিকে
পরবর্তী নিবন্ধজাফর ইকবালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি