বহু বছর ধরেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের উগ্র বৌদ্ধ বাহিনীগুলো। ২০২১ সালে দেশটিতে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর তাদের দুর্দশা আরও বাড়তে শুরু করে। সর্বশেষ, রাখাইনে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি ও জান্তাবাহিনীর মধ্যকার লড়াইয়ে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা আরও বেড়েছে। সম্প্রতি এই দুই বাহিনীর মধ্যকার লড়াইয়ে হাজারো রোহিঙ্গা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
তাদের অনেকেই বাংলাদেশে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, ‘আবারও, রোহিঙ্গা জনগণকে তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করা হচ্ছে এবং মেরে ফেলা হচ্ছে। বিষয়টি আবারও তাদের ২০১৭ সালের দেশত্যাগের ঘটনাকে দুঃখজনকভাবে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। আমরা এমন লোকদের সঙ্গে দেখা করেছি যারা আমাদের বলেছে, তারা মিয়ানমারে পালিয়ে যাওয়ার কারণে বাবা-মা, ভাইবোন, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের হারিয়েছেন। যারা ভাগ্যবান, তারা বাংলাদেশে আসতে পেরেছেন। কিন্তু তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার, ঘুমানোর উপযুক্ত জায়গা, এমনকি নিজেদের কাপড়ও নেই।’
গত বছরের নভেম্বরে রাখাইনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরও দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে জান্তাবাহিনীর সঙ্গে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে। এরই মধ্যে, আরাকান আর্মি অঞ্চলটির বড় একটি অংশই দখল করে নিয়েছে। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গারা কেবল জান্তাবাহিনীর হামলার মুখোমুখি হলেও এবার তারা আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনী উভয়েরই আক্রমণের শিকার হচ্ছে।
সদ্য আগতরা জানিয়েছে, আরাকান আর্মি বেআইনিভাবে রোহিঙ্গাদের হত্যা করেছে, তাদের বাড়িঘর থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে এবং তাদের আক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলেছে। জান্তাবাহিনীও একই ধরনের আচরণ করছে তাদের সঙ্গে। সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে গিয়ে অনেক রোহিঙ্গাই শিশুসহ ডুবে মারা গেছে।
এদিকে বাংলাদেশেও নতুন করে রোহিঙ্গাদের স্থান দেওয়ার জায়গা নেই বলে জানাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। নিজ দেশে গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এখন কোথায় যাবে, সেই সংশয় এখন তাদের মনে।
তথ্যসূত্র:
১. ভয়াবহ হুমকির মুখে রোহিঙ্গারা, আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান অ্যামনেস্টির
– https://tinyurl.com/ye8yp49e