গাজায় বাস্তুহারা ৯০ শতাংশ মানুষ, তীব্র খাদ্য সংকটে ৯১ শতাংশ

0
55

১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় সংঘাত চলছে। সহিংসতার অবসানের জন্য ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে এবং যুদ্ধবিরতি এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় ধরে গাজাকে রীতিমত ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করেছে দখলদার ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬ হাজার ৮৯৯ জনে পৌঁছেছে। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চলমান এই আগ্রাসনে আরও অন্তত এক লাখ ১০ হাজার ৭২৫ জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তারা ৪৬ হাজার ৯১৩ জনের মৃত্যুর হিসাব পেয়েছেন। হাসপাতাল এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই সংখ্যা তৈরি করেছেন তারা।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত অর্থাৎ সংঘাতের এক বছরে শনাক্ত হওয়া নিহতদের মধ্যে ৫৯ শতাংশই ছিল নারী, শিশু এবং বৃদ্ধ। তবে নভেম্বরে জাতিসংঘের বিশ্লেষণে নিহতের মধ্যে নারী এবং শিশুর সংখ্যা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বলে উল্লেখ করা হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক লাখ ১০ হাজার ৭৫০ জন ফিলিস্তিনি এই সংঘর্ষে আহত হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত ১৩ জানুয়ারি এক প্রতিবেদনে জানায়, আহতদের মধ্যে ২৫ শতাংশের আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে, তাদের জীবন আর আগের অবস্থায় ফিরবে না।।

ইসরায়েল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শহুরে এলাকায় বোমাবর্ষণ করেছে এবং কিছু অবকাঠামোয় একাধিকবার হামলা চালানো হয়েছে। জাতিসংঘের স্যাটেলাইট সেন্টারের (ইউএনওস্যাট) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ডিসেম্বরের শুরুতে গাজার ৬৯ শতাংশ ভবন ও স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে গাজার রাস্তাঘাটের ৬৮ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, গাজায় অন্তত ১৯ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে যা কিনা গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ।অর্থাৎ এই মানুষগুলো গাজায় তাদের বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় যেতে বাধ্য হয়েছেন। কেউ কেউ একাধিকবার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, অক্টোবর থেকে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত গাজার উত্তরাঞ্চলে প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা থেকে মানুষকে সরে যেতে বলা হয়। কারণ ইসরায়েল উত্তর গাজায় বড় আকারে হামলা চালিয়েছে। এমনকি মানবিক অঞ্চল (হিউমেনিটেরিয়ান জোন) যেখানে ফিলিস্তিনিদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য যেতে বলা হয়েছিল সেখানেও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

আগে যেখানে খালি কৃষিজমি ছিল এখন সেখানে হাজার হাজার তাঁবু ও অস্থায়ী কাঠামো নির্মাণ করে আশ্রয় নিয়েছে গাজার সাধারণ মানুষ।

এদিকে জাতিসংঘের হিসেবে, গাজার ৯১ শতাংশ মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটে আছে। সরকার, দাতব্য সংস্থা এবং এজেন্সির সাথে কাজ করে আইপিসি নামের একটি গ্রুপ। এই সংস্থাটি জানিয়েছে, উত্তর গাজায় সাম্প্রতিক অভিযানের পর সেখানে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।


তথ্যসূত্র:
1. How 15 months of war has devastated Gaza
– https://tinyurl.com/2nfaknsm

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধকয়েক মিনিটে বাংলাদেশ দখলের হুমকি দিলো বিজেপি নেতা শুভেন্দু
পরবর্তী নিবন্ধভারতের পাঞ্জাবে কাশ্মীরি ব্যবসায়ীকে মারধর ও মালামাল লুটপাট করলো হিন্দুত্ববাদীরা