
আসামের বিধানসভায় প্রায় ৯০ বছর ধরে চলা জুমার নামাজের জন্য নির্ধারিত দুই ঘণ্টার বিরতি বাতিল করা হয়েছে। বিজেপি সরকার গত বছরের আগস্টে এই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এ বছর তা কার্যকর করা হয়েছে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি মুসলিম মিররের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আগে আসাম বিধানসভা সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯:৩০ থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলত এবং শুক্রবার অধিবেশন শুরু হতো সকাল ৯টায়, যেখানে মুসলিম বিধায়কদের নামাজ আদায়ের জন্য দুই ঘণ্টার বিরতি দেওয়া হতো। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে বিধানসভার অধিবেশন প্রতিদিন সকাল ৯:৩০ থেকে বিরতিহীনভাবে চলবে, শুক্রবারেও এর ব্যতিক্রম হবে না।
এই সিদ্ধান্তে মুসলিম বিধায়করা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিরোধীদলীয় নেতা ও মুসলিম বিধায়করা এটিকে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাপট এবং মুসলিম বিদ্বেষী নীতির বহিঃপ্রকাশ বলে অভিহিত করেছেন।
অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ)-এর বিধায়ক রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে এটি চাপিয়ে দিয়েছে। বিধানসভায় প্রায় ৩০ জন মুসলিম বিধায়ক থাকলেও, তাদের ধর্মীয় অধিকার উপেক্ষা করা হয়েছে।’
এদিকে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা এটিকে ঔপনিবেশিক প্রথা হিসেবে উল্লেখ করে বলেছে, ‘১৯৩৭ সালে মুসলিম লিগ নেতা সৈয়দ সাদুল্লার সময় এই নিয়ম চালু হয়েছিল, যা এখন বন্ধ করা হয়েছে।’ সে আরও দাবি করেছে, ‘এই বিরতি বাতিলের ফলে বিধানসভার কার্যকারিতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়বে।’
অন্যদিকে, বিধানসভার হিন্দুত্ববাদী স্পিকার বিশ্বজিৎ দৈমারি বলেছেন, ‘সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ নীতির সাথে সামঞ্জস্য রাখতে এই বিরতি বাতিল করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য যে, ভারতে বিজেপি সরকার ধারাবাহিকভাবে এমন নীতি নিচ্ছে, যা মুসলিমদের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করছে। সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলা হলেও, বাস্তবে মুসলিমদের ধর্মীয় চর্চায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। জুমার নামাজের বিরতি বাতিল সেই বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশ, যেখানে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে মুসলিমদের অধিকার সীমিত করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র:
1. Assam Assembly discontinues ‘namaz break’ for first time
– https://tinyurl.com/4v9bcf59