আড়িয়াল খাঁ, পদ্মা ও মেঘনার নদী ভয়াবহ ভাঙন; দিশেহারা ৭০০’রও বেশি পরিবার

0
19

সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণ ও আড়িয়াল খাঁ, পদ্মা ও মেঘনার নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুরের কালকিনি ও শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নিম্ন এলাকায় নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে আড়িয়াল খাঁ, পদ্মা ও মেঘনার নদী ভাঙনে কালকিনির ২ শতাধিক এবং শরীয়তপুরের জাজিরার ৫ শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনে শিকার হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

সরেজমিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসে, কালকিনি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল পূর্র্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের আলীপুর ও সাহেবরামপুর এলাকার নতুন আন্ডারচর লঞ্চঘাট ও উত্তর আন্ডারচর গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁ নদ। বছরের পর বছর আড়িয়াল খাঁর তান্ডবে বিলীন হয়ে গেছে হাজারো বাড়িঘর। এ বছর নতুন করে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে নদীগর্ভে চলে গেছে প্রায় দুই শতাধিক বসতঘর। গৃহহীন হয়ে এখন তারা দিশেহারা।

এছাড়াও একটি গ্রামীণ সড়কের ৫০০ মিটার অংশ নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে নদী ভাঙন শুরু হওয়ায় ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছে লঞ্চঘাট এলাকার আরো শতাধিক পরিবার। এছাড়া নতুন আন্ডারচর এলাকার বঙ্গবন্ধু কলেজ, নতুন আন্ডারচর হাজী করিমখানের হাট, ৭৩নং নতুন আন্ডার প্রাথমিক বিদ্যালয়, নবারন উচ্চ বিদ্যালয়, নতুন আন্ডারচর ইমদদুলউলুম দাখিল মাদরাসা, আল মাহমুদ হাফিজিয়া মাদরাসা, করিমখানের হাট পোস্ট অফিস, গোলপাতা বাজারসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

এদিকে, এ নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে ইতোমধ্যেই স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যানারে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। কিন্তু ভাঙন রোধে নদীর পাড়ের ভাঙনকবলিত জায়গাগুলোতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর।

এদিকে পদ্মা ও মেঘনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবা ও গোসাইরহাটের আলাওলপুরের পাঁচ শতাধিক পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ভাঙনকবলিত এসব পরিবার অনেকে রাস্তাঘাট ও উঁচু জায়গায় অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নিয়েছে। দ্রুত পুনর্বাসন ও ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে। গত ২ দিন ধরে ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোত ও পানি বৃদ্ধির কারণে আবারো নদীতে ধসে পড়েছে জাজিরা উপজেলার নাওডোবায় পদ্মা সেতুর কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষা বাঁধের প্রায় ১৫০ মিটার এলাকা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভাঙন শুরু হয় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট এলাকায়। পদ্মা সেতু থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পূর্বে মাঝিরঘাটের অবস্থান। এই এলাকায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙন শুরু হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই। পদ্মার ডান তীররক্ষা বাঁধের এ পযর্ন্ত প্রায় অর্ধ কিলোমিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে ঘরবাড়ি, দোকানপাট, রাস্তা, মসজিদ, ফসলি জমিসহ অর্ধশত স্থাপনা। ভাঙন আতংকে পদ্মা পাড় থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বহু স্থাপনা। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পযর্ন্ত নদীতে বিলীন হয়েছে অন্তত ১০টি স্থাপনা। আতঙ্কিত হয়ে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন নদী পাড়ের মানুষ। আর ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ডাম্পিং শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রবল স্রোত ও বৃষ্টির কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ডাম্পিংয়ের কাজ।


তথ্যসূত্র:
১ কালকিনিতে ২০০ ও জাজিরায় ৫০০ পরিবার দিশেহারা
– https://tinyurl.com/ye22kf4e

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধচাঁদাবাজির দায়ে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের ২ নেতা আটক
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে পনির চাপে ভেঙে দুইভাগ হয়ে গেল কালভার্ট; দূর্ভোগে সাধারণ মানুষ