
গাজায় দখলদার ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর থেকে কানাডায় ইসলাম বিদ্বেষ বেড়েছে। সেইসঙ্গে উদ্বেগজনকহারে বেড়েছে ‘হেইট ক্রাইম’ বা ঘৃণাজনিত অপরাধের সংখ্যা। সম্প্রতি ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামোফোবিয়া রিসার্চ হাবের নাদিয়া হাসানের প্রকাশিত এক নতুন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় দখলদার ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর কানাডাজুড়ে ইসলাম বিদ্বেষ এবং ফিলিস্তিন বিরোধী ‘হেইট ক্রাইম’ (ঘৃণা থেকে হওয়া অপরাধ) ১,৮০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতিবেদনটি ১৬টি কানাডীয় সংগঠনের সঙ্গে পরামর্শ, সরকারি ও সংবাদমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
৬ আগস্ট, বুধবার ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামোফোবিয়া রিসার্চ হাবের লেখক নাদিয়া হাসানের ‘ডকুমেন্টিং দ্য প্যালেস্টাইন এক্সেপশন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে গত ২১ মাসে ইসলাম বিদ্বেষ, ফিলিস্তিন-বিরোধী বর্ণবাদ এবং আরব-বিরোধী বর্ণবাদ তীব্র ও বিপজ্জনকহারে বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
অটোয়াতে এক সংবাদ সম্মেলনে হাসান বলেন, ‘২০২৩ সালের অক্টোবরের পর, কানাডায় ফিলিস্তিন-বিরোধী বর্ণবাদ, ইসলাম বিদ্বেষ এবং আরব-বিরোধী বর্ণবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। কানাডার জনসাধারণের জীবন ও কর্মক্ষেত্রে এর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে।’
ন্যাশনাল কাউন্সিল অব কানাডিয়ান মুসলিমস (এনসিসিএম) জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের পরের মাসে ইসলাম বিদ্বেষের ঘটনা ১,৩০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা পরের বছর ১,৮০০ শতাংশে পৌঁছেছে।
মুসলিম লিগ্যাল সাপোর্ট সেন্টার ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে মার্চ ২০২৪ সালের মধ্যবর্তী সময়ে ৪৭৪টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নথিভুক্ত করেছে। যার মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থনের কারণে চাকরি হারিয়েছেন বা ছুটিতে পাঠানো হয়েছে ৩৪৫ জনকে। লিগ্যাল সেন্টার ফর প্যালেস্টাইন জানিয়েছে, আট মাসে ফিলিস্তিন বিরোধী বর্ণবাদের মামলা ৬০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
নাদিয়া হাসান জানান, ‘এই প্রতিবেদনে বাস্তব পরিস্থিতির মাত্র একটি অংশ তুলে ধরা হয়েছে। বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে সাক্ষাৎকার, তাদের দেওয়া তথ্য, সরকারি ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।’
কানাডায় ইসলাম বিদ্বেষ মোকাবিলার জন্য নিযুক্ত বিশেষ প্রতিনিধি আমিরা এলঘাওয়াবি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি মানবাধিকার রক্ষার পক্ষে কথা বলায় মানুষকে চাকরি হারাতে হচ্ছে, ভবিষ্যত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এসব পরিস্থিতি এখনই মোকাবিলা করা দরকার।’
কানাডাজুড়ে প্রতিদিনই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে উল্লেখ করে সেগুলো মোকাবিলা করার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, ‘৯/১১-এর পরে যে পুরনো অপপ্রচার ছিল তা আবার আবার ফিরে এসেছে। অতি ডানপন্থী এবং অন্যরা তা আরো বাড়িয়ে তুলেছে এবং আমাদের সম্প্রদায় বিশেষ করে ফিলিস্তিন-মুসলিম এবং আরব-কানাডিয়ানদের অবমাননা করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র:
1. Report reveals 1,800% surge in Islamophobic hate crimes in Canada after Oct. 7
– https://tinyurl.com/yhpcykd9


