আরাকানে কৃষিকাজ ও মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আরাকান আর্মি

0
60

মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের বুথিডং এলাকায় রোহিঙ্গা মুসলিমরা চরম সংকটের মুখোমুখি। বৌদ্ধ গোষ্ঠী আরাকান আর্মি কৃষিকাজ ও মাছ ধরার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, ফলে তাদের জীবিকা অর্জন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে এবং মৌলিক খাদ্য ও প্রয়োজনীয়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্থানীয়রা।

গত ৪ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে আরাকান নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের কৃষি কার্যক্রমে অতিরিক্ত কর আরোপ করা হয়েছে এবং ফসলের একটি বড় অংশ মিলিশিয়াদের কাছে তুলে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এক বাসিন্দা বলেন, ‘এটা যদিও আমার নিজস্ব জমি হয়, তাও আমি স্বাধীনভাবে চাষ করতে পারি না। যদি কর বা ফসল না দিই, মিলিশিয়ারা শাস্তি দেয়। এভাবে বেঁচে থাকা অসম্ভব।’

অনেক রোহিঙ্গাদের জীবিকার প্রধান উৎস মাছ ধরা হলেও বর্তমানে তা প্রায় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। মিলিশিয়া বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা নদী ও হ্রদগুলোতে মাছ ধরা থেকে তাদের বিরত রাখা হচ্ছে। আরেকজন গ্রামবাসী অভিযোগ করেন, ‘আগে আমরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতাম, কিন্তু এখন আরাকান মিলিশিয়া সেটা অনুমতি দিচ্ছে না। আমাদের কাছে খাবার পাওয়ার আর কোনো উপায় নেই, আর কেউই আমাদের ক্ষুধায় মারা যাওয়ার কথা চিন্তা করে না।’

এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে বাজারে চাল, শাকসবজি ও মাছের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে, যা ক্ষুধা ও অপুষ্টির সমস্যা আরও প্রকট করে তুলছে। অনেক পরিবার এখন একবেলা খাবার খেয়ে বা ঋণ নিয়ে কোনোভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিজ ভূখণ্ড থেকে বাস্তুচ্যুতির ইতিহাস অনেক পুরনো হলেও ইদানিংকালে তাদের উপর অত্যাচারের হার ভয়ংকরভাবে বেড়েছে। বিশেষকরে ২০২৩ সালের শেষ দিকে আরাকান আর্মি মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে উত্তর আরাকানের বেশিরভাগ এলাকা দখল করে নেয় এবং এরপর থেকে স্থানীয় মুসলিমরা সহিংসতা, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ও অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার হয়ে অত্যন্ত কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।


তথ্যসূত্র:
1. Rohingyas struggle as farming and fishing restricted by Arakan militias
– https://tinyurl.com/9937x7t4

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশকে অস্থিতিশীল করতে ও আ.লীগের পুনর্বাসনে দিল্লিতে সেমিনার আয়োজন করছে ভারত; আলোচক তিন আ.লীগ দালাল
পরবর্তী নিবন্ধলাশ পোড়ানো নিন্দনীয়, মুসলিম জনতার ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষায় ব্যর্থ প্রশাসন: হেফাজতে ইসলাম