খুনি হাসিনার আমলে ১৫ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়েছে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

0
44

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে বলে দাবি করেছে ব্রিটিশ দৈনিক ফিনান্সিয়াল টাইমস। গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত একটি প্রামাণ্যচিত্রে এ তথ্য উঠে আসে। ডকুমেন্টারির শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশের হারানো বিলিয়নস: চোখের সামনেই লুট।‘

প্রামাণ্যচিত্রে বলা হয়, অর্থ পাচারের জন্য বাণিজ্যে অতিরিক্ত বা কম ইনভয়েসিং, হুন্ডি ও হাওয়ালা চক্র এবং যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি কেনাবেচার পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। লন্ডনকে মূল গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের বিস্তৃত আর্থিক খাত ও লাভজনক সম্পত্তি বাজার এই অর্থ পাচারের জন্য বিশেষভাবে আকর্ষণীয় ছিল।

ডকুমেন্টারিতে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার অভিযোগ উঠে এসেছে। এছাড়া ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক, প্রাক্তন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের নামও অর্থপাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। জন রিড জানান, এমন ঘটনাও ঘটেছে যেখানে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বন্দুকের মুখে ব্যাংকের পরিচালককে অপহরণ করে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করেছে এবং শেয়ার শাসকগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠদের কাছে ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করতে বাধ্য করেছে।

লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক মোশতাক খান বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে দুর্নীতি কোনো গোপন বিষয় ছিল না। তিনি আরও জানান, অনেক কিছু যেন চলচ্চিত্রের গল্পের মতো ছিল। তার কয়েকজন বন্ধু কুখ্যাত কারাগার (হল অব মিররস) আয়না ঘরে বন্দি ছিল, যেখানে বন্দিদের শুধু নিজেকেই দেখা যেত। তিনি উল্লেখ করেন, গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের সহায়তায় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ঘনিষ্ঠরা ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্পদ পুনরুদ্ধার টাস্কফোর্সের উপদেষ্টা ইফতি ইসলাম বলেন, এটি ইতিহাসের সবচেয়ে জটিল প্রক্রিয়াগুলোর একটি। তিনি জানান, ব্যাংক ও ব্যবসা খাত থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার লোপাট হয়েছে, যা সম্ভবত বিশ্বের ইতিহাসে কোনো দেশের সবচেয়ে বড় অর্থপাচার। তিনি আরও বলেন, যতটা সম্ভব সম্পদ পুনরুদ্ধারের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সংগ্রহ, লেনদেনের ধারা অনুসরণ এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন।


তথ্যসূত্র:
1. Bangladesh’s missing billions, stolen in plain sight
– https://tinyurl.com/mr3wu4vs

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাজায় শহীদ আরও ৪৯, গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জাতিসংঘ আশ্রয়কেন্দ্র
পরবর্তী নিবন্ধরূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কেন্দ্র প্রকল্পে ভয়াবহ দূর্নীতির প্রমাণ মিলেছে