পার্বত্য অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ ও জেএসএসকে একত্রিত করছে ভারত

0
134

খাগড়াছড়িতে এক মারমা কিশোরী ধর্ষণের কথিত অভিযোগ তুলে চলছে ব্যাপক অরাজকতা। শহরে প্রশাসনিক তৎপরতা বাড়ানোয় গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সহিংসতা। এরই অংশ হিসেবে রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিনভর জেলার গুইমারা এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় বাঙালিদের বাড়িঘর ও স্থাপনায় হামলা হচ্ছে। সংঘর্ষে তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সহিংসতা পুরো পার্বত্যাঞ্চল, এমনকি গোটা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, পাহাড় অশান্ত করতে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত হচ্ছে। হাত আছে বিশেষ মহলেরও। তারা ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এবার স্থানীয় দুটি সশস্ত্র ও বিবদমান সংগঠন ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)’ ও ‘ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ)’ ঐক্যবদ্ধ করছে। আর পুরো বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছে ভারত। যার মধ্যস্থতায় আছে প্রতিবেশী দেশটির রাজধানী দিল্লিতে বসবাসরত দিঘিনালার এক কথিত বৌদ্ধ ভিক্ষু বা ধর্মগুরু।

এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে খাগড়াছড়িতে ওই সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে চলমান অস্থিরতায় জেএসএস (সন্তু) গ্রুপের প্রতি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে আরেক সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ।

স্থানীয় কয়েকটি সূত্র গণমাধ্যমকে জানায়, এই আহ্বান শুধু আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। মূলত ভারতের মধ্যস্থতায় কয়েক মাস আগেই বিবাদমান দুই পক্ষের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতে জড়িত দুই পক্ষের তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে ধর্ষণের অভিযোগকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

তারা আরো জানা যায়, চলতি বছরের ৩ থেকে ১০ মের মধ্যে জেএসএসের তাত্ত্বিক নেতা সন্তু লারমা আর ইউপিডিএফের দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে দুই দফায় সমঝোতা বৈঠক হয় দিল্লিতে। গত ২৭ জুলাই ওই গোপন বৈঠকের খবর প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যম ‘আমার দেশ’। বৈঠকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এক কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিল। এতে দুই পক্ষকেই আশ্বস্ত করা হয় যে, কোনো ইস্যুকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা ছড়িয়ে দিতে সহিংসতায় নেপথ্যে থেকে অর্থনৈতিক ও লজিস্টিক সহায়তা করবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গা-ঢাকা দিয়ে থাকা আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। চাঞ্চল্যকর ওই খবর পেয়ে প্রকাশের পরও সরকারের উদাসীনতা আর প্রশাসনের পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাবে দুই মাসের মধ্যে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।

সহিংসতার নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিদের পরিকল্পনা আছে খাগড়াছড়ির পর একদিনে রাঙামাটি ও বান্দরবানে কথিত এই আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মানুষদেরও মাঠে নামানো হবে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামানোর টার্গেট রয়েছে কথিত এই আন্দোলনের নেপথ্যের কারিগরদের। এসব কর্মসূচি থেকে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে উসকানি দিয়ে ছাত্রসমাজকে বিভ্রান্ত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জোর তৎপরতা চলছে।

উস্কানি ছড়ানো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে

পার্বত্য চট্টগ্রামের এ ঘটনায় অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অযাচিতভাবে টেনে আনা হচ্ছে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীকে টার্গেট করে নেতিবাচক প্রচার চালানো অর্ধশতাধিক ফেসবুক পেইজ ও অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। যার অধিকাংশই পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতীয় নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। এসব পেজ থেকেই গত এক বছর ধরে সরকারের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো ও পতিত আওয়ামী লীগের পক্ষে জনমত গঠনে কাজ করা হচ্ছে।

গত এক সপ্তাহ ধরে তারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করতে সক্রিয় রয়েছে। রাঙামাটি চাকমা সার্কেলের চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়ান ইয়ান রাখাইন তার ফেসবুক আইডি থেকে উস্কানিমূলক পোস্ট প্রচার করছে। একইভাবে কানাডা প্রবাসী প্রজ্ঞা তাপস চাকমা (ফেসবুক আইডি PT Chakma) সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ঘেরাও করার মতো উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়কে উত্তেজিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে।


তথ্যসূত্র:
১.ভারতের ইশারায় এক হচ্ছে জেএসএস-ইউপিডিএফ
-https://tinyurl.com/mpfrjmzu

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাহাড়ের অদৃশ্য দুঃখ ও রক্তাক্ত বাস্তবতা
পরবর্তী নিবন্ধপার্বত্য চট্টগ্রামে চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে ‘দেশদ্রোহী’ ঘোষণাপূর্বক সামরিক নিরাপত্তা বাড়াতে হবে: হেফাজতে ইসলাম