
লন্ডনের ট্র্যাফালগার স্কোয়ারে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’-এর সমর্থনে আয়োজিত শান্তিপূর্ণ নীরব বিক্ষোভে অংশ নেয়া প্রায় ৫০০ মানুষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৪ অক্টোবর, শনিবারের তাদের গ্রেফতার করা হয়। ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠনকে সমর্থন জানানোর অভিযোগে এই গণগ্রেফতার ঘটলেও সমালোচকরা বলছেন, এটি মূলত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা স্তব্ধ করার নগ্ন প্রচেষ্টা।
শনিবার বিকেলে হাজারো মানুষ ট্র্যাফালগার স্কোয়ারে সমবেত হয়ে গাজার নিহত শিশুদের নাম উচ্চারণ করে শোক ও সংহতি প্রকাশ করেন। এ সময় তাদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল—“আমি গণহত্যার বিরোধী, আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি।” বিক্ষোভটি ছিল নীরব ও শান্তিপূর্ণ। তবুও ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করে মুহূর্তেই কঠোর অভিযান শুরু হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৮৮ জনকে আটক করা হয়েছে। সবচেয়ে কনিষ্ঠ গ্রেফতারকৃতের বয়স ১৮ এবং প্রবীণের বয়স ৮৯। এর বাইরে আরও কয়েকজনকে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে ব্যানার টানানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর একটার কিছুক্ষণ পরেই প্রথম গ্রেফতারটি ঘটে। ওই সময় বসে থাকা বিক্ষোভকারীরা প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের সমর্থনে প্ল্যাকার্ড লিখছিলেন।
গ্রেফতার অভিযানের সময় অনেকে শান্তভাবে বসে থাকা সত্ত্বেও পুলিশ বল প্রয়োগ করে তাদের টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে বসে থাকা মানুষদের এভাবে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া লজ্জাজনক এবং অমানবিক।”
ব্রিটেন সরকার জুলাই মাসে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। অভিযোগ করা হয়েছিল, সংগঠনটির সদস্যরা সামরিক স্থাপনায় অনধিকার প্রবেশ ও ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করেছে। তবে অনেকের মতে, প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনকে স্তব্ধ করা এবং সরকারের নীতির বিরোধী কণ্ঠকে আইন দিয়ে দমন করা।
গ্রেফতারকৃতদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তবে প্রশ্ন উঠছে—শান্তিপূর্ণভাবে বসে থাকা মানুষদের শুধুমাত্র ব্যানার বা পোস্টারের কারণে গ্রেফতার করা হলে তা কতটা ন্যায়সঙ্গত। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, লন্ডনের গণগ্রেফতার শুধু একদিনের ঘটনা নয়—এটি সরকারের স্বাধীন কণ্ঠরোধ নীতির একটি প্রতীকী দৃষ্টান্ত। এটি সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দমননীতির নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।
তথ্যসূত্র:
1. Nearly 500 arrested at Palestine Action protest in London
-https://tinyurl.com/5bsddn8k


