
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক র-এর এজেন্ট ও ইসকন ঘনিষ্ঠ কুশল বরণ চক্রবর্ত্তীকে পদোন্নতি দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলাসহ বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি বোর্ডের সাক্ষাৎকারে ডেকেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) সকালে উপাচার্যের সম্মেলনে কক্ষে তার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। সে সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য আবেদন করেছিল। এই পদোন্নতি বোর্ডের প্রধান ছিল উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।
এর আগে গত ৪ জুলাই কুশল বরণের পদোন্নতি দিতে বোর্ড বসানো হয়েছিল। তবে তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ও দেশ বিরোধী নানা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে পদোন্নতি বোর্ড বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেসময় পদোন্নতি বোর্ড স্থগিত করে প্রশাসন।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. হাছান মিয়া বলেন, কুশল বরণকে আজকে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এই পদোন্নতি বোর্ডে যে সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেটি পরবর্তী সিন্ডিকেটে অনুমোদন করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার গণমাধ্যমকে জানায়, ‘তিনি কি কোন অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন? আর দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র দেখার জন্য গোয়েন্দা সংস্থা, মামলা হলে কোট-কাচারি, জুডিশিয়াল বডি রয়েছে। আমরা শাস্তি দেওয়ার কেউ না। আমাদের শাস্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া আলাদা। প্রথম ও দ্বিতীয় তদন্ত কমিটি–এসব করতে হয়।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ২৬ নভেম্বর হেফাজতে ইসলামের কর্মী এনামুল হক চৌধুরী চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীদের হামলার শিকার হন। এ সময় তিনি কিরিচের কোপে মাথায় গুরুতর জখম হন এবং তার ডান হাত ভেঙে যায়। এ ঘটনায় এনামুল হক চৌধুরী গত বছর ৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রধান আসামি করে ১৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলার আবেদন করেন। এই মামলার ২০তম আসামি কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী।
এ ছাড়া গত বছরের ২৬ অক্টোবর ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর গণহত্যা’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করায় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী। ‘ভারতের প্রেসক্রিপশনে’ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে তার গ্রেপ্তারও দাবি করেন তারা। কুশল বরণ চক্রবর্ত্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, সে ভারতীয় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সমর্থক এবং ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র-এর এজেন্ট।
কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ঘনিষ্ঠদের একজন। গত বছর ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করা হলে তার মুক্তির দাবিতে সোচ্চার ছিল সে। এ ছাড়া তার ভারত সরকারের পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তিলি, সংগঠন মন্ত্রী শ্রী আসিস চৌহান, ত্রিপুরা প্রদেশের উপাধ্যক্ষ শ্রী রাম প্রসাদ পাল এবং ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা’র অন্যতম দোসর ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমারের সঙ্গে তোলা ছবিও রয়েছে।
তথ্যসূত্র:
1. অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও চবির পদোন্নতি বোর্ডে ইসকনঘনিষ্ট সেই কুশল
– https://tinyurl.com/27bzucch


