
শরীয়তপুরে শিক্ষার্থী পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা এক সহপাঠীকে বেঁধে মারধর ও টাকা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শরীয়তপুর জেলা শহরের বনবিভাগ কার্যালয়ের পাশের এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানায়, তিনি শরীয়তপুরের একটি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পরীক্ষা শেষে বিকেলে তিনি এক সহপাঠীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে বাসের অপেক্ষা করছিলেন। বাস না পেয়ে দুজনে হেঁটে রওনা দেন। এ সময় বনবিভাগের সামনে পৌঁছালে কয়েকজন যুবক তাদের পথরোধ করে। এক পর্যায়ে অভিযুক্তরা তাদের জোর করে বনবিভাগের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে ওই সহপাঠীকে আটকে রেখে মারধর করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং টাকা দাবি করে। একই সময়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে পাশের একটি ঝোপের মধ্যে নিয়ে তিনজন যুবক পালাক্রমে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে প্রায় দুই ঘণ্টা পর তাদের সড়কে ছেড়ে দেয়া হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাকে প্রথমে অনেক মারধর করা হয়। ওরা কমপক্ষে ১০ জন ছিল। তাদের মধ্যে তিনজন আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে। আমি অনেক কান্নাকাটি করেছি, তবুও আমাকে ছাড়েনি। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’
অন্যদিকে আহত সহপাঠী বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে পড়াশোনা করি। আজকে শেষ পরীক্ষার দিন ছিল। বাস না পেয়ে আমরা হাঁটা শুরু করি। পরে কয়েকজন মিলে বনবিভাগের সামনে আমাদের থামিয়ে ভয় দেখিয়ে ভেতরে নিয়ে যায়। আমাকে মারধর করে মোবাইল কেড়ে নেয় ও টাকা দাবি করে। আর আমার বান্ধবীকে জোর করে ঝোপের দিকে টেনে নিয়ে যায়। প্রায় দুই ঘণ্টা আমাদের আটকে রাখা হয়।’
ঘটনার পর প্রথম তাদের দেখতে পান শাহাবুদ্দিন নামের এক স্থানীয় ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমি বাড়ি ফিরছিলাম। দেখি কয়েকজন যুবক এক মেয়েকে নিয়ে বনবিভাগের দিক থেকে আসছে। জায়গাটি নির্জন হওয়ায় সন্দেহ হয়। মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলে ভয় পাচ্ছিল। সঙ্গে থাকা ছেলেটি আমাকে ইশারা করলে বুঝি তারা বিপদে আছে। তখন আমি পরিচয় জানতে চাইলে ওই যুবকরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটি কান্না জড়িত কণ্ঠে সব ঘটনা জানায়।
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দ রাব্বি বলেন, আমাকে দেখে মেয়েটি পায়ে ধরে সাহায্য চায়। আমি দ্রুত তাকে একটি দোকানে বসাই। সে অসুস্থ হয়ে পড়লে লোকজন নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করি এবং পুলিশে খবর দিই। দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. খন্দকার রাশেদ আহম্মেদ বলেন, মেয়েটি আমাদের জানিয়েছে, তাকে শারীরিকভাবে মারধর ও যৌন নিপীড়ন করা হয়েছে। নারী চিকিৎসক উপস্থিত হওয়ার পর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।
তথ্যসূত্র:
https://tinyurl.com/y5b2u386


