ফেসবুকে ভারতবিরোধী পোস্ট দেওয়ায় হত্যা করা হলো বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে। খুন হওয়া আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। সহপাঠীদের ভাষ্যমতে, তিনি মেধাবী হওয়ার পাশাপাশি ধার্মিকও ছিলেন। আর, ফেসবুকে তাঁর সর্বশেষ পোস্টটি ছিল শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরে করা দেশবিরোধী চুক্তির নিরীহ প্রতিবাদ।
আবরার ফাহাদের এ কাজ পছন্দ হয়নি হিন্দুত্ববাদের দালাল আওয়ামী লীগের কুখ্যাত সন্ত্রাসী অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার নেতাকর্মীদের। তাই, ভারতবিরোধী পোস্ট দেওয়ার পরদিন রাতেই (৬ই অক্টোবর) ফাহাদকে তুলে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। এসময় হলের একটি কক্ষে নিয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা দুই দফায় নির্মমভাবে পিটিয়ে ফাহাদকে হত্যা করে।
ঢাকা ট্রিবিউনসহ অন্যান্য বার্তাসংস্থার তথ্য মতে, ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রলীগের উগ্র হিন্দু নেতা অমিত সাহা। অর্থাৎ, ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস দেওয়ায় একজন মুসলিম মেধাবী ছাত্রকে এক হিন্দুর নেতৃত্বে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার উপর সে ইসকনের সাথেও সম্পৃক্ত ছিল!
ভারতের বিরুদ্ধে বলায় ছাত্রলীগ কেন একজন মুসলিমকে মারছে? নাকি ছাত্রলীগকে এখন নিয়ন্ত্রণ করছে হিন্দুরা? কিছুদিন আগে কিন্তু আমরা দেখেছি যে, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে এক হিন্দুকে বসানো হয়েছে। লেখক ভট্টাচার্য নামক ছাত্রলীগের ঐ সাধারণ সম্পাদক উগ্র হিন্দু এবং ইসকন সদস্যদের মত উগ্রবাদের চিহ্ন হিসেবে লাল সুতা পরে থাকে। তাহলে কি আমরা ধরে নিবো, ইসকনের সদস্যরা এখন আওয়ামী লীগের খোলসের আড়ালে হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে?
নাকি পুরো ছাত্রলীগই এখন বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হিন্দু সংগঠন আরএসএস এর অগ্রবর্তী বাহিনী হিসেবে কাজ করছে?
আবরার ফাহাদকে হত্যা করার পর উগ্ররা আবার তাকে ‘শিবির’ ট্যাগ লাগিয়ে হত্যাকে ‘বৈধ’ করণের চেষ্টা চালাচ্ছে। ভারতে যেমন মুসলিম হওয়ার কারণে হত্যা করে পরে ‘গো-রক্ষা’র অজুহাত দেওয়া হয়, বাংলাদেশে কি এখন তাহলে ভারতের বিরোধিতা করার কারণে হত্যা করা হবে, তারপর শিবির কিংবা জঙ্গির অজুহাত দেওয়া হবে?
আবার দেখুন- আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কৃষ্ণপদ রায় নামে আরেক হিন্দুকে । ভারতের বিরোধিতা করায় মুসলিম মেরে ফেলেছে, হত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছে হিন্দু, তদন্তও করেছে হিন্দু- পুরো প্রশাসন, পুরো দেশ কি তাহলে হিন্দুদের হাতে জিম্মি হয়ে গেল? কোন মুসলিম পুলিশ অফিসার কি ছিলো না?
প্রশ্ন তো অনেক । কিন্তু, হিন্দুত্ববাদের দালাল হলুদ মিডিয়াগুলোর কারসাজিতে আড়ালেই রয়ে যাচ্ছে বহু তথ্য। হলুদ মিডিয়াগুলো এখনো অবধি ‘হত্যার অভিযোগ উঠেছে’ শব্দ ব্যবহারে ব্যস্ত! ভারতের মিডিয়াগুলোও কিন্তু কোন মুসলিমকে কথিত ‘গো-রক্ষক’রা পেটালে এই ধরণের প্রতারণামূলক শব্দ ব্যবহার করে। কাল যদি ইসকনের কোন সদস্যকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়, তাহলে মিডিয়া কি একই সুরে কথা বলবে? কথিত সুশীলদের প্রতিক্রিয়া তখন কেমন হবে?
মুসলিম অধ্যুষিত এ বাংলাদেশে ভারতীয় যে আগ্রাসন শুরু হয়েছে তারই প্রতিবাদ করে ভারতপন্থী হিন্দুত্ববাদী ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হলেন বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আমাদের মুসলিম ভাই আবরার ফাহাদ। বুয়েটের মত জায়গায়ও এভাবে একটা ছেলেকে খুন করা হলো। বাংলাদেশে এখন কেউ নিরাপদ না, আপনি না, আপনার সন্তানও নিরাপদ না। কার কাছে বিচার চাইবে বাংলাদেশের মুসলিমরা? পুলিশও হিন্দু, আর সরকার হলো হিন্দুদের সবচেয়ে বড় দালাল। সরকার ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দেবে, কিন্তু মানুষ কিছুই বলতে পারবেন না। বললেই আপনার উপর লেলিয়ে দেওয়া হবে আরএসএসের ভূমিকায় এদেশে হিন্দুত্ববাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে যাওয়া ছাত্রলীগের মত কোন সন্ত্রাসী সংগঠনকে। যাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে এখন উগ্র হিন্দুরা।
It is very sad-full news for us