আজ ৯ নভেম্বর শনিবার ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের চুড়ান্ত রায় ঘোষণা করেছে হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্ট। হিন্দুত্ববাদী আদালত রায়ে বলেছে যে, বাবরি মসজিদের সম্পূর্ণ জায়গা পাবে হিন্দুরা, সেখানে রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে। আর, মুসলিমদেরকে শান্ত রাখতে আলাদা জায়গায় সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে মসজিদ নির্মাণের জন্য ৫ একর জমি দেওয়ার কথা বলা হয়।
১৯৯২ সালে উপমহাদেশের মুসলিমদের ঐতিহ্য ও অস্তিত্বের অংশ হিসাবে পরিচিত বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে দেয় উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা। তখন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রাণ হারান কয়েক হাজার মুসলিম। তারপর থেকে নতুনভাবে শুরু হয় মামলা-মোকদ্দমার নামে বিভিন্ন নাটক মঞ্চায়ন, যদিও হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় সন্ত্রাসীদের এই নাটকীয় পর্ব আরো আগ থেকেই শুরু হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে দশটা থেকে বাবরি মসজিদ মামলার রায় দেয় ভারতের হিন্দুত্ববাদী সুপ্রিম কোর্ট।
ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় অবস্থিত মুসলিমদের পবিত্র এই মসজিদের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সেখানে ভারতীয় সন্ত্রাসী সামরিক বাহিনীর অতিরিক্ত বারো হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়। এছাড়াও অযোধ্যায় কারফিউ জারি রয়েছে গত প্রায় দুসপ্তাহ ধরে।
এ দিন ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, রাজস্থান ও মুম্বাইয়ে ভারতীয় সামরিক সন্ত্রাসী বাহিনীর অতিরিক্ত আরো অনেক সদস্যকে নিয়োগ করার মাধ্যমে মুসলিমদেরকে দমিয়ে রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এসব রাজ্যের স্কুল-কলেজসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শনিবার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের প্রধান “ও পি সিং” ইকোনমিক টাইমসকে জানায়, এখন পর্যন্ত ৫০০ জনকে তারা গ্রেফতার করেছে। পুলিশের প্রধান বার্তা হচ্ছে যেকোনো উপায়ে শান্তি রক্ষা করার নামে মুসলিমদেরকে দমিয়ে রাখা। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৭০ জনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাবরি মসজিদ মামলার রায় নিয়ে উসকানিমূলক বার্তা ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী পুলিশ প্রধান।
এদিকে, উগ্রবাদী হিন্দু সন্ত্রাসীরা দাবি করে বাবরি মসজিদের জায়গাতেই তাদের মিথ্যা ভগবান রামের জন্ম হয়েছিল এবং একটি রামমন্দির ভেঙ্গে মোগল আমলে সেখানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তারা এই বিষয়ে কোন প্রমাণ পেশ করতে পারেনি। বরং বারবারই সন্ত্রাসী কায়দায় তারা মসজিদের জায়গা নিজেদের করে নেওয়ার চেষ্টা চালায়।
বাবরি মসজিদের জায়গা দখলের জন্য কয়েক শতাব্দী ধরেই বিভিন্ন কৌশলে চেষ্টা চালায় ভারতীয় উগ্র হিন্দুরা। আর কট্টরপন্থী হিন্দু সন্ত্রাসী দল RSS ও BJP সহ সকল হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো এতে একযোগ হয়ে কাজ করতে থাকে। ক্ষমতাসীন বর্তমান বিজেপি তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ৩টি বিষয়কে সবচাইতে বেশি জোড় দিয়েছিল, যার প্রত্যেকটাই ছিল মুসলিমদের স্বার্থের বিরুদ্ধে। ইতিপূর্বে তারা ২টি সম্পন্ন করে দেখিয়েছে। তাই এটা কোন আশ্চর্যের বিষয় ছিল না যে, সকল সাক্ষ্য প্রমাণ মুসলিমদের পক্ষে থাকলেও রায় ঘোষণা করা হবে হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীদের পক্ষেই। আর হলোও তাই। আসলে, তাগুতদের কাছে বিচারের দাবি নিয়ে যাওয়ার কোন মানে যে হয় না, বাবরি মসজিদ মামলার রায়ও তার একটি প্রমাণ।
অবশেষে হিন্দুদের পক্ষেই রায় ঘোষনা করে ভারতের হিন্দুত্ববাদী সুপ্রিম কোর্ট। তারা বাবরি মসজিদের জায়গাটি সম্পূর্ণভাবে হিন্দুদেরকে দিয়ে দেয়, আর সেখানে রাম মন্দির নির্মাণের জন্য একটি ট্রাস্ট গঠনের নির্দেশও দেয়। আদেশ দেওয়া হয় ৩ মাসের মধ্যেই যেন মন্দির নির্মাণ করা হয়।
মন্দির নির্মাণে একজন বিচারপতির এত তাড়াহুড়া দেখে মনে হচ্ছে যে, রামমন্দির নির্মাণের তাড়াহুড়া উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠন RSS-BJP-VHP মতই এই বিচারকেরও ছিল। রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এটাও বলে দেওয়া “তিন মাসের মধ্যেই যেন মন্দির নির্মাণ করা হয়”! তার আগে আবার ঐ বিচারপতি জানায় যে, সে অবসর গ্রহণের পূর্বেই বাবরি মসজিদ মামলার রায় দিয়ে যেতে চাচ্ছে! ১৭ই নভেম্বর অবসর নিবে সে, তার আগেই এই রকম ইসলামবিদ্বেষের আরেকটি নমুনা পেশ করে গেলো ঐ হিন্দুত্ববাদী বিচারপতি। এর আগেও সে ইসলাম ও মুসলিমদের উপর নির্যাতনের রায় দেয়। আসামে কথিত এনআরসির নামে লাখ লাখ মুসলিমকে বাড়িহীন করার রায়ও দেয় এই হিন্দুত্ববাদী বিচারক।
একদিকে হিন্দুত্ববাদী বিচারপতি মুসলিমদের প্রতি নিজের মায়াকান্না দেখাতে গিয়ে বলল- বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে দেওয়ার ঘটনা বেআইনী! অন্যদিকে সে ঐসকল হিন্দু সন্ত্রাসীদের পক্ষেই রায় দিলো যারা বাবরি মসজিদ ধ্বংস করেছিল! যে উদ্দেশ্যে ধ্বংস করা হয়েছিল বাবরি মসজিদ, সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের পক্ষেই রায় দিলো হিন্দুত্ববাদীরা।
অর্থাৎ, কেমন যেন তারা এটাই বুঝাতে চায়, আইন-আদালতে যাই থাকুক, তারা নিজেদের ইচ্ছামাফিক তা পরিবর্তন করে নিবে। যখন ইচ্ছা, যেভাবে ইচ্ছা আইন বানিয়ে নিবে। অথবা, যদি ১০জন মুসলিমকে মারলে বেআইনী কাজ হয়, তাহলে তারা সেই বেআইনী কাজটাই করবে। যদি মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির নির্মাণ করাটা বেআইনী হয়, তবুও তারা মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির নির্মাণ করবে! অর্থাৎ, তাদের হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠায় যা করার দরকার, সবই তারা করবে। এমনকি এক্ষেত্রে তারা নিজেদের বানানো আইনেরও তোয়াক্কা করবে না।
সর্বশেষ কথা হলো- হিন্দুত্ববাদী বিচারকরা হিন্দুদের পক্ষেই রায় দিয়েছে। অর্থাৎ, তাদের কথা অনুযায়ী, বাবরি মসজিদের সম্পূর্ণ জায়গার মালিক এখন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা। আল্লাহর ঘর মসজিদ ভেঙ্গে তাঁর স্থলে নির্মাণ করা হবে নিজেদের হাতে তৈরিকৃত মিথ্যা ইলাহ্ এর রাম মন্দির। আর, মুসলিমদেরকে শান্তনাস্বরূপ ভিন্ন জায়গায় ৫ একর জমি দেওয়া হবে। অথচ, ইসলামিক রীতি অনুযায়ী মসজিদ আল্লাহর ঘর। পাঁচ একর জমি তো দূরের কথা পাঁচ হাজার একর জমিও মসজিদের বদলা হতে পারে না। মুসলিমরাও বদলা হিসেবে এই জমি নিবে না। বাবরি মসজিদ ছিল, থাকবে বিইযনিল্লাহ। গাজওয়াতুল হিন্দ যেমন দরজায় কড়া নাড়ছে, তেমনি বেজে উঠেছে হিন্দুত্ববাদের বিদায়ী ঘন্টাও! প্রতিটি পাওনা মিটানো হবে, অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
লেখক: ত্বহা আলী আদনান, প্রতিবেদক, আল-ফিরদাউস নিউজ।
মশাআল্লাহ লাহাওলা ওয়ালা কুওয়াতা
ইল্লা বিল্লাহিল আলিউল আজিম
ইনশাআল্লাহ আবার মোহাম্মাদ বিন কাসেম
খালেদ বিন ওয়ালিদে সন্তানরা আবার ভারোতে
হিন্দুদের সপ্ন কে ধুলিসাৎ করে দিবে
ওদের মন্দির ঘর গুলো কে ধংস ইস্তপে
পরিনতি করবে সমগ্র উপমহাদেশে
কালিমার যানডা উরাবে
ইনশাআল্লাহ্…
নিশ্চয় অচিরেই আল্লাহর সৈনিকরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
ইয়া আল্লাহ্..আমাদেরকে গাজওয়াতুল হিন্দের যোদ্ধা হিসেবে কবুল কর।
in’sa’allah- ei babri mosjider jonno jibon utsorgo kore dibo . allahu akbar
ইনশাআল্লাহ্…
নিশ্চয় অচিরেই আল্লাহর সৈনিকরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
ইয়া আল্লাহ্..আমাদেরকে গাজওয়াতুল হিন্দের যোদ্ধা হিসেবে কবুল কর।