ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বাবরী মসজিদ-রাম জন্মভূমি ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে মসজিদের ধ্বংসাবশেষ হস্তান্তরের আবেদন করবে বাবরী মসজিদ অ্যাকশন কমিটি। এ ব্যাপারে আদালতে ‘কিউরেটিভ পিটিশন’ দায়ের করা হবে। গত (বুধবার) লক্ষনৌয়ের ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজে মাওলানা ইয়াসিন আলী উসমানীর সভাপতিত্বে কমিটির বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাবরী মসজিদ অ্যাকশন কমিটির আহ্বায়ক ও সিনিয়র আইনজীবী জাফরিয়াব জিলানী বলেন, এই মুহূর্তে সিদ্ধান্তটি কমিটির, কিন্তু এক্ষেত্রে ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ড’-এর সাথেও আলোচনা হবে।
আইনজীবী জাফরিয়াব জিলানী বলেন, পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি হলে এই সাফাই দেওয়া যেত যে ১৯৯২ সালে বাবরী মসজিদ ধ্বংসকে আদালত ‘অবৈধ’ বলে মনে করেছিল, সেজন্য এর ধ্বংসাবশেষ এবং অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী যেমন পাথর, স্তম্ভ ইত্যাদি মুসলিমদের হাতে তুলে দেওয়া হোক। আদালতের কাছে এজন্য আবেদন করা হবে।
তিনি বলেন, আদালত ১৯৯২ সালে বাবরী মসজিদ ধ্বংসকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে গণ্য করেছেন। সুতরাং এর ধ্বংসাবশেষ এবং অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী যেমন পাথর, স্তম্ভ ইত্যাদি মুসলিমদের হাতে হস্তান্তর করা উচিত।জিলানী বলেন, ধ্বংসস্তূপের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্তে কোনও সুস্পষ্ট আদেশ নেই। এমন পরিস্থিতিতে ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করার সময় এর অমর্যাদা হওয়ার আশঙ্কা আছে। বাবরী মসজিদ অ্যাকশন কমিটির বৈঠকে মাওলানা মেরাজ কামার, মুহাম্মদ কামার, হিসামুদ্দিন, মুহাম্মদ আজম, শাকিল আহমেদ কিদওয়াই, আবরার আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দিয়েছিল। অন্যদিকে, সরকারকে মসজিদের জন্য বিকল্প পাঁচ একর জমির বন্দোবস্ত করতে বলা হয়। মুসলিম পক্ষ ওই রায়ে খুশি না হওয়ায় তাঁরা আদালতে ‘রিভিউ পিটিশন’ দাখিল করেছিল। অন্যদিকে, অযোধ্যায় মুসলিমদের বিকল্প পাঁচ একর জমি দেওয়ার বিরোধিতা করে হিন্দু মহাসভা ও সংশ্লিষ্ট অন্য সংগঠন রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছিল। কিন্ত গত ১২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সমন্বিত বেঞ্চ উভয়পক্ষের সমস্ত আবেদনসহ এসংক্রান্ত ১৮ টি আবেদনই খারিজ করে দেয়। এবার কিউরেটিভ পিটিশনের পথে যাচ্ছে বাবরী মসজিদ অ্যাকশন কমিটি।