রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে তালিকাভুক্ত ভিক্ষুক ও রেস্টুরেন্ট কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণের চাল অন্যদের মাঝে বিতরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের যোগসাজসে কতিপয় মেম্বার তালিকাভুক্ত দুস্থদের না দিয়ে অনৈতিকভাবে তারা তাদের নিজ নিজ পছন্দের লোকজনের মাঝে ওই চাল বিতরণ করেন। পরে বিতরণকালে তালিকার সঙ্গে ত্রাণ গ্রহিতাদের নামের মিল না পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে চাল বিতরণ বন্ধ করে দেয়া হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ইউনিয়নে।
গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ইউপি কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য সহায়তা দিতে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন এলাকার ভিক্ষুক ও রেস্টুরেন্ট কর্মচারীদের একটি নামের তালিকা গত ২ এপ্রিল চূড়ান্ত করা হয়। আড়াই শ জনের ওই তালিকার মধ্যে ভিক্ষুক ৭৯ ও রেস্টুরেন্ট কর্মচারী ১৭১ জন। সরকারি খাদ্য সহায়তা গ্রহণের জন্য তাদের সকলের নামে দৌলতদিয়া ইউপি কার্যালয় থেকে ‘স্লিপ’ তৈরি করে তা বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বারদের কাছে দেওয়া হয়। এদিকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গত রবিবার সন্ধ্যায় দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ‘হেলিপ্যাড’ এলাকায় তালিকাভুক্ত ২৫০ ভিক্ষুক ও রেস্টুরেন্ট কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ত্রাণের চাল বিতরণ চলছিল।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে ত্রাণ গ্রহিতাদের কাছ থেকে ‘স্লিপ’ নিয়ে প্রতিজনকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করছিলেন দৌলতদিয়া ইউপি চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন ওয়ার্ড মেম্বার। তখন তালিকাভুক্ত ভিক্ষুক ও রেস্টুরেন্ট কর্মচারীদের আশানুরূপ উপস্থিতি দেখতে না পেয়ে স্থানীয় অনেকের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সঙ্গে সঙ্গে খতিয়ে দেখতে পান ভিক্ষুক ও রেস্টুরেন্ট কর্মচারীদের নামের তালিকার সঙ্গে অনেক ত্রাণ গ্রহিতার নামের কোনো মিল নেই। বিষয়টি টের পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেখানে বাকি চাল বিতরণকাজ বন্ধ করেন।
দৌলতদিয়া ইউপির একজন মেম্বার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানের যোগসাজসে কতিপয় মেম্বার তালিকাভুক্ত দুস্থদের না দিয়ে অনৈতিক কৌশলে তারা তাদের নিজ নিজ পছন্দের লোকজনের মাঝে সরকারি ওই চাউল বিতরণ করেন। এতে তালিকাভুক্ত অনেক ভিক্ষুক ও রেস্টুরেন্ট কর্মচারী সরকারি ওই ত্রাণ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
এদিকে দৌলতদিয়া ইউপির সচিব পরিমল দাশ বলেন, ‘রবিবার সন্ধ্যায় আড়াই শ জনের মধ্যে ১৮১ জনকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করার পর ওই অনিয়ম ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ইউএনও স্যার বিতরণ বন্ধ করে দিয়ে বাকি চাল (৬৯০ কেজি) তিনি প্রত্যাহার করে নিয়ে গেছেন।’
সূত্র: কালের কণ্ঠ