ক্রুসেডার আমেরিকা ও ইমারতে ইসলামিয়ার মাঝে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর আফগান জুড়ে সাধারণ জনতা বিজয়ের আনন্দে আনন্দ মিছিল করে এবং শহর ও শহরতলিতে সাধারণ মানুষ বড় বড় জনসভাও করে, যেখানে সাধারণ মানুষ তালেবান উমারাদের স্বাগত জানায়। কিন্তু আফসোস ও পরিতাপের বিষয় হচ্ছে খোদ আমেরিকা ও কাবুলের পুতুল সরকার একের পর এক এই চুক্তি বিরুধী কাজ আঞ্জাম দিতে থাকে। এখনো সামরিক ও রাজনৈতিক ভাবেও চুক্তি বিরুধী কাজ করে যাচ্ছে।
যেমন, ইমারতে ইসলামিয়া ও ক্রুসেডার আমেরিকার মধ্যে হওয়া চুক্তির ধারায় এটাও ছিল যে, ক্রুসেডার আমেরিকা ও তার মিত্র আফগান পুতুল সরকারি বাহিনী যুদ্ধের ময়দান ছাড়া কোন এলাকা ও জনসাধারণের উপর হামলা করতে পারবেনা, এবং ক্রুসেডার আমেরিকা ও তালেবান তারা একে অন্যের বিরুদ্ধে কোন অভিযান পরিচালনা করবেনা। তা শর্তেও চুক্তির মাত্র কয়েকদিনের মাথায় ক্রুসেডার আমেরিকা হেলমান্দ প্রদেশের “নাহার সিরাজ” জেলায় মুজাহিদদের উপর এমন এক সময় হামলা চালিয়েছে, যখন চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর মুজাহিদগণ নিজ অবস্থানে ফিরছিলেন।
এই ঘটনার পরে ক্রুসেডার আমেরিকা ও কাবুলের পুতুল মুরতাদ সরকারি বাহিনী বিভিন্ন স্থানে মুজাহিদদের পাশাপাশি জনসাধারণের উপর হামলা চালানো শুরু করে।যার ফলে জনসাধারণে জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিভিন্ন প্রদেশ ও শহরগুলোতে ক্রুসেডার আমেরিকা ও তাদের গোলাম আফগান মুরতাদ বাহিনীর বোমা, ড্রোন ও রকেট হামলায় নিরাপরাধ অনেক নারী পুরুষ ও শিশু শহিদ এবং আহত হয়। তাদের বাড়ি-ঘর ও আসবাবপত্র ধ্বংস হয়ে যায়।
চুক্তির ধারাগুলো ভঙ্গের ধারাবাকিতায় কাবুল পুতুল সরকার বন্দিদের মুক্তি দিতেও বলম্ব করে, অথচ চুক্তিতে প্রতিজ্ঞা করা হয়েছিল যে, ১০এ মার্চের মধ্যে কাবুল সরকার ইমারতে ইসলামিয়ার তালিকাভুক্ত ৫ হাজার মুজাহিদিনকে মুক্তি দিবে, বিপরীতে ইমারতে ইসলামিয়া কাবুল সরকারের ১ হাজার বন্দিকে মুক্তি দিবে। কিন্তু আজ এক মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও বন্দী বিনিময়ের কার্যক্রম শুরু করেনি কাবুল সরকার।
বন্দীদের মুক্তির ইস্যুটি যদি নিখুঁতভাবে সম্পূর্ণ করা হয়, তাহলে আন্তঃ আফগান সংলাপের সূচনা নিয়ে চিন্তা করা যেতে পারে, কারণ চুক্তিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে ১০ই মার্চের আগে বন্দী বিনিময় করা হবে এবং তারপরে আন্তঃ আফগান আলোচনার সূচনা শুরু হবে, সুতরাং এখন বন্দি বিনীময়ে যত বিলম্ব করা হবে আন্তঃ আফগানিস্তানের আলোচনাও ততটাই বিলম্বিত হতে থাকবে।
বন্দী বিনিময়ের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছায় হোক বা না হোক, তথাপি এই প্রতিবন্ধকতা আন্তঃ আফগান সংলাপ বিলম্বের কারণ হবে। আর এই বলম্ব যুদ্ধের আগুণকে আরো উত্তপ্ত করে তুলবে। যাতে অনেক মূল্য দিতে হবে আমেরিকা ও তার মিত্র বাহিনী। সুতরাং যারা বন্দীদের মুক্তি ক্ষেত্রে বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে এবং শান্তি প্রচেষ্টায় ছলনার আশ্রয় নিচ্ছে, তারা যুদ্ধের লেলিহান শিখায় তেল ছিটানোর জন্য দায়ী থাকবে।
ইমারতে ইসলামিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চুক্তি অনুসারে নিজেদের কাজ সম্পাদনা করে আসছে। তারা চুক্তির কোনও ধারা লঙ্ঘনও করেনি। বিরোধীরাও স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে যে ইমারতে ইসলামিয়া এখনো চুক্তি লঙ্ঘন করেনি এবং তার প্রতিশ্রুতি অনুসারে জীবনযাপন করছে, সুতরাং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যেও এটা অবশ্যক যে এই চুক্তি মেনে চলা এবং কাউকে এই চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে না দেওয়া।