করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সহায়তা করার অজুহাতে বাংলাদেশে ১৪ সদস্যের সেনাবাহিনীর দল পাঠাবে ভারত। বুধবার (২২ এপ্রিল) ভারতের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জি নিউজে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা যায়, করোনা প্রতিরোধে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভূটান ও আফগানিস্তানে একটি করে টিম পাঠাতে প্রস্তুত ভারতের সেনাবাহিনী। এরই লক্ষ্যে করোনা মোকাবিলায় কথিত সহায়তার জন্য বাংলাদেশে ১৪ সদস্যের একটি দল পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছে ভারত।
গত মার্চ মাসে করোনাভাইরাস টেস্ট সেন্টার তৈরি ও স্থানীয় চিকিৎসকদের ভাইরাসের মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নেপালে ১৪ সদস্যের দল পাঠিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। এছাড়া কুয়েতেও ১৫ সদস্যের দল পাঠিয়েছে তারা। ইতোমধ্যে ৫৫টি দেশে করোনার তথাকথিত সম্ভাব্য ওষুধ হাইড্রক্সিক্লরোকুইন পাঠিয়েছে ভারত। বাংলাদেশ, নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, ভূটান, আফগানিস্তানের মতো দেশে এই ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা রোগীদের হাইড্রক্সিক্লরোকুইন ঔষধ প্রয়োগে মৃত্যুর হার দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে । ১১ এপ্রিলের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন অথবা মৃত্যু হয়েছে এমন ৩৬৮ জন করোনা রোগীর চিকিৎসার নথি ঘেঁটে দেখেছে মার্কিন গবেষণা সংস্থা ভেটেরানস হেলথ অ্যাসোশিয়েসান। তাঁদের দেওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ৯৭ জন ব্যক্তিকে এই ম্যালেরিয়া ড্রাগ(হাইড্রক্সিক্লরোকুইন) দেওয়া হয়েছিলো, তাঁদের মধ্যে ২৮ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে। ১১৩ জন রোগীকে অ্যাজিথ্রোমাইসিন জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২২ শতাংশের। আর এই ধরণের কোনও ড্রাগই দেওয়া হয়নি এমন ১৫৮ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১ শতাংশের। এই সমীক্ষাই হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, যাঁরা এই ড্রাগ নিয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর সম্ভাবনা অন্যদের থেকে দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
উগ্র হিন্দুত্ববাদী ভারত সরকার এই বিতর্কিত প্রাণঘাতী ঔষধ উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাংলাদেশে পাঠাতে চাচ্ছে, সাথে পাঠাচ্ছে সম্ভাব্য ধর্ষকগোষ্ঠী ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী সেনাবাহিনীর কিছু সদস্যকে। ভারতের দাবি বন্ধু দেশগুলির প্রতি পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশসহ আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী সেনাবাহিনীর টিম প্রেরণের যে সীদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাতে দেখা যায়, উল্লেখিত প্রতিটি রাষ্ট্রে পূর্ব থেকে আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে। প্রতিটি দেশের সাথেই কর্তৃত্ববাদী সামরিক চুক্তি ইতোমধ্যে সম্পাদিত হয়েছে । দীর্ঘদিন যাবত অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালানোর পর এবার সরাসরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনী প্রেরণের ঘোষণা এলো।
উল্লেখ্য যে, নব্য উপনিবেশিক সময়ে সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রসমূহ সেবার অজুহাতে কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্রে সেনা প্রেরণ করে , এরপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। যা সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চরিত্র মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য যুদ্ধবিধ্বস্ত মুসলিম দেশসমূহের ক্ষেত্রে পৃথিবীবাসী দেখতে পাচ্ছে। শিক্ষা-স্বাস্থ্য-অর্থনীতি প্রতিটি সূচকে পিছিয়ে পড়া, কুসংস্কারে আচ্ছন্ন উগ্র হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় প্রশাসন নিজ দেশের করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেলেও অন্য দেশে কেন সেনাবাহিনী পাঠাতে চাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, করোনা পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে এটা বাংলাদেশের উপর সামরিক নিয়ন্ত্রণের পাঁয়তারা নয়তো?