মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে, তারা ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেশিরভাগ অংশকে ইসরায়েলের দখলে নেয়ার স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত, তবে সেজন্য ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনিদের সাথে আলোচনায় বসতে আহ্বান জানিয়েছে।
গতকাল সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র মন্তব্য করেন, আমরা ধারাবাহিকভাবেই স্পষ্ট করে বলছি, ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব ও ইসরাইলের আইন প্রয়োগের জন্য পশ্চিম তীরের অঞ্চলসমূহে, যেগুলো বৃহত্তর ইসরাইল রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় আছে, সেগুলোতে ইসরাইলের পদক্ষেপগুলোতে স্বীকৃতি দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। (As we have made consistently clear, we are prepared to recognise Israeli actions to extend Israeli sovereignty and the application of Israeli law to areas of the West Bank that the vision foresees as being part of the State of Israel.)
এ বিষয়ে গত কয়েকদিন ধরে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা, বিবিসি ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডলইস্ট মনিটরসহ অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমে।
তবে ইসরাইলকে ট্রাম্পের পরিকল্পনার গাইডলাইন অনুসরণ করে ফিলিস্তিনের সাথে সমঝোতায় পৌঁছাতে রাজি হতে হবে।
করোনা ভাইরাসের সংকটের মধ্যেই পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দখলদার সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল। আর ইসরাইলের এসব অপকর্মে বরাবরের মতো সমর্থন জানাতে এগিয়ে আসছে বিশ্ব সন্ত্রাসী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
দখলদার ইসরায়েল প্রতিবছরের মতো এবার রামাদানে অতিরিক্ত জুলুম চালাচ্ছে, তবে এ বছর ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। এবারের পরিকল্পনা ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর দখল করার।
যদিও ইসরায়েলের এসব প্রচেষ্টার নামকাওয়াস্তে সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত বলেছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ওপর মারাত্মক আঘাত। আর ইইউ বলছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ওপর ইসরাইলি সার্বভৌমত্বকে স্বীকার করবে না তারা।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও ইসরাইলের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। গুতেরেস বলেছেন, “পশ্চিম তীরে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সমঝোতা ও শান্তি আলোচনা থেমে যাবে শুধু ইসরাইলি একতরফা কর্মকাণ্ডের কারণে।”
[ উল্লেখ যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে দ্বিখণ্ডিত করা সংক্রান্ত ১৮১ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয়। জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে দ্বিখন্ডিত করার প্রস্তাব পাশ করে নিজেদের মাতৃভূমির মাত্র ৪৫ শতাংশ ফিলিস্তিনীদের এবং বাকি ৫৫ শতাংশ ভূমি ইহুদীবাদীদের হাতে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।এভাবেই জাতিসংঘ নামক কুফরিসংঘ ইসলাম ও মুসলিমদেরকে ধোঁকা দিয়ে মুসলিম ভূমিকে ইহুদিদের হাতে তুলে দেওয়ার স্বীকৃতি দেয় । ]
করোনাভাইরাসে সৃষ্ট মহামারি মোকাবেলা করার মতো পর্যাপ্ত সামর্থ্য এমনিতেই নেই দূর্বল ফিলিস্তিনের। এই অবস্থার মধ্যেও ইসরায়েলি সরকার ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড ছিনিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা করে ফিলিস্তিনিদের জীবনযাপন আরো দুর্বিষহ করে তুলেছে।
করোনা পরিস্থিতিতেও যুক্তরাষ্ট্রের মতো তাদের পোষ্যরাষ্ট্র ইসরায়েলও একই চরিত্র দেখিয়ে বেড়াচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। ইসরায়েল নিয়মিতই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিন ও সিরিয়ায়।
একইভাবে, ভারতের বর্বর নরাধম মোদীর হিন্দুত্ববাদী সরকারও সহিংস হামলা অব্যাহত রেখেছে কাশ্মীরে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই কাশ্মীরিদের ভূমিতে হিন্দুত্ববাদীদের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন আইন চালু করেছে নরাধম মালাউন মোদী সরকার।
বিশ্বজুড়ে সৃষ্ট করোনা বিপর্যয়েও ন্যূনতম মানবিকতা জাগেনি আমেরিকা-ইসরায়েল-ভারতের, ইরান-রাশিয়া দানবীয় শক্তির মধ্যে। এই দানব রাষ্ট্রগুলোর সহিংসতা থেকে বিশ্বকে মুক্ত করতে হলে সারা বিশ্বের মুসলিমদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে সশস্ত্র জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।