ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের রসুলবাগ ভাঙ্গাপুল এলাকায় প্রতিপক্ষের হামলায় ও অবরুদ্ধ অবস্থায় আব্দুল কাদের (৫৫) নামের এক সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় হামলার পরে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে নিজ বাড়িতেই অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটে। পরে রবিবার ভোরে মারা যান আব্দুল কাদের। মৃত আব্দুল কাদের কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক। হামলাকারীরা কুতুবপুর ইউনিয়ন সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের সভাপতি জসিমউদ্দিন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রোকন মিয়ার আস্থাভাজন বলে অভিযোগে জানা গেছে।
আব্দুল কাদেরের স্ত্রী ফিরোজা বেগম থানায় অভিযোগে উল্লেখ করেন, ইব্রাহিম খান (৪৫), মহিদুল (৪০), সোহাগ বেপারী (৪২), সজিব (৩০), মাহফুজ খান (৫৫), আবুল হোসেন শেখ (৫৫), মো. হারুন মিয়া (৫৬), রাসেল (২৫), ফয়সাল (২০), নাঈম (১৯), রিপন শেখ (৪০), সেলিম শেখ (৩৫), শাওন (২৬) সহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আসছে।
এছাড়াও বিবাদীরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার স্বামীর সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পঞ্চায়েত কমিটির নেতৃবৃন্দদেরকেও হুমকি-ধামকি দিয়া আসছিলো।
শনিবার ৯ মে দুপুর ২টায় বিবাদীরা শত্রুতার জের ধরে আমার বাসার সামনে আসিয়া আমার স্বামীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরপর বিকাল ৫টায় আমার স্বামী হাজী আব্দুল কাদের (৭০) স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মো. লাল মিয়া শেখ সাহেবের বাসায় গিয়ে বিবাদীদের হুমকি-ধামকির বিষয়ে নালিশ করে।
বিষয়টি বিবাদীরা জানিতে পেরে আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে অজ্ঞাতনামা আরো ৮/১০ জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকসহ বেআইনি জনতাবদ্ধে সংঘবদ্ধ হয়ে পঞ্চায়েত সভাপতির বাসায় প্রবেশ করে। এরপর পঞ্চায়েত সভাপতির কথাকে তোয়াক্কা না করে তার বাসার মধ্যেই ইব্রাহিম খান ও মহিদুলের হুকুমে অন্যান্য সকল বিবাদীরা আমার বৃদ্ধ স্বামীকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে মারতে পঞ্চায়েত সভাপতির বাসা হতে বাহির করে।
এরপর বিবাদীরা লাঠিসোটা দ্বারা আমার স্বামীকে পিটিয়ে এবং কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে মারপিট করতে করতে আমার বাসার গেট পর্যন্ত নিয়ে যায়। আমার স্বামীর চিৎকার শুনে আমি বাসা হতে বের হলে বিবাদীরা আমার স্বামীকে আমার বাসার সামনে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে হত্যার হুমকি দেয়।
কালের কন্ঠের রিপোর্ট
এরপর আমার স্বামীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে বিবাদীরা আমার স্বামীকে হাসপাতালে নিতে বাঁধা প্রদান করে। ফলে আমার স্বামীকে হাসপাতালেও নিতে পারি নাই। এরপরও বিবাদীরা ক্ষান্ত না হয়ে একই তারিখ রাত ১০টায় ধারাল ছুরি, চাপাটি, রাম দা ও লোহার রড নিয়া সংঘবদ্ধ হয়ে আমার বাসার নিচে অবস্থিত আমার ছেলে মো. রাসেল (২৩) এর মুদি দোকানে হামলা চালায়।
বিবাদীরা ধারাল ছুরি ও রাম দা দিয়া দোকানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দোকানের আসবাবপত্র ও মালামাল ভাঙচুর এবং লুট করে। বিবাদীদের মারধরের ফলে আমার স্বামীর শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটে। রবিবার সকাল ৬টায় আমি ও আমার ছেলে আমার স্বামীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করিয়া ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাস্তায় সে মৃত্যুবরণ করেন। বিবাদীদের মারধরের ফলে আমার স্বামী বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন।