রাজধানীর বাজারগুলোয় নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ছেই। ধানের বাম্পার ফলন হলেও মাত্র দুই সপ্তাহে চালের দাম প্রতি কেজিতে ১ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম প্রকারভেদে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। অনেকটা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আলু, পটোল, বেগুন, বরবটি, ঢেঁড়স, ধুন্দল, ঝিঙা, করলা, পেঁপেসহ প্রায় সব ধরনের সবজি।
মাছের দাম কেজিতে বেড়েছ ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
এর সঙ্গে ডিমের দাম প্রতি ডজনে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। মুরগি আকার ও প্রকারভেদে কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর আজিমপুর, নিউমার্কেট, চানখাঁরপুল, হাতিরপুল, কাঁঠালবাগান, হাজীপাড়া, রামপুরা, মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেট, মগবাজার, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা ও খিলগাঁও বাজারে ঘুরে নিত্যপণ্যের দামে এ চিত্রের দেখা মিলেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার মহামারী করোনার মাঝেও সফলতার সঙ্গে ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষক। ফলে চাল সংকটের সুযোগ নেই। তার পরও দাম না কমে উল্টো প্রকারভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ১ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
জানা গেছে, প্রতি সপ্তাহে চালের দাম চালকলগুলো থেকেই ১ থেকে ২ টাকা করে বাড়ানো হচ্ছে। বড় হাটগুলোয়ও ধানের দাম বাড়ছে। ধানের সরবরাহ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। বর্তমানে মোটা ধান প্রতি মণ ৮৫০ থেকে ৯৫০, মাঝারি মানের ধান ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ ও সরু চাল ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত সোমবার পর্যন্ত সরকারি গুদামগুলোয় ৮ লাখ ৮১ হাজার টন চাল, ২ লাখ ৯৮ হাজার টন গম মজুদ আছে
বর্তমানে মোটা চাল ৪০ থেকে ৪৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর সরু চাল ৫৫ থেকে ৬০, মাঝারি চাল ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সরু চালের দাম গত এক সপ্তাহে আড়াই শতাংশ বেড়েছে। গতকাল সপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর বাজারগুলোয় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯০ থেকে ৯৫ টাকার মধ্যে। এ প্রসঙ্গে খিলগাঁও বাজারের বিক্রেতা মো. সবুর মিয়া বলেন, কয়েকদিন ধরে ডিমের চাহিদা বেড়েছে, সরবরাহ কমেছে। এমন পরিস্থিতি থাকলে দাম আরও বাড়তে পারে। এদিকে মান ও বাজার ভেদে চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। বেগুনের কেজি ৭০ থেকে ১০০, গাজর ৮০ থেকে ১২০, পাকা টমেটো ও বরবটি ৬০ থেকে ৮০, চিচিঙ্গা, পেঁপে, পটোল, ঝিঙা ৫০ থেকে ৬০, করলা ৫০ থেকে ৭০, কচুর লতি ৪০ থেকে ৬০, কচুর মুখি, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৭০, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি ২৮ থেকে ৩২ টাকা। এ প্রসঙ্গে শান্তিনগর বাজারের বিক্রেতা আহমেদ মিলন বলেন, কয়েকদিন ধরেই সবজির দাম বাড়তি। মৌসুম শেষ। সহসা দাম কমবে না। হাতিরপুলের বিক্রেতা শাহিন সরদার বলেন, করোনার শুরুতে দাম অনেক কম ছিল। এখন সবজি ফুরিয়ে যাচ্ছে। ফলে দাম কিছুটা চড়া। গত সপ্তাহে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া পিয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। দেশি পিয়াজের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। দেশি পিয়াজের পাশাপাশি দাম কমেছে আমদানি করা পিয়াজের। আমদানি করা পিয়াজের কেজি ৩০-৩৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ৩০ থেকে ৪৫ টাকা ছিল। সবজি সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি, গরু ও খাসির মাংস। বয়লার মুরগির কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। পাকিস্তানি কক মুরগি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা। দেশি মুরগি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা আর খাসির মাংস ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। মাছের বাজারে দাম বেড়ে বর্তমানে প্রতি কেজি কাঁচকি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০, মলা ৩৮০ থেকে ৪০০, ছোট পুঁটি (তাজা) ৫০০ থেকে ৫৫০, ছোট পুঁটি ২৮০ থেকে ৩৫০, টেংরা মাছ (তাজা) ৬৫০ থেকে ৭৫০, দেশি টেংরা ৪৫০ থেকে ৫৫০। কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে শিং (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫৫০, পাবদা ৩২০ থেকে ৫০০, চিংড়ি (গলদা) ৪০০ থেকে ৬৫০, বাগদা ৫৫০ থেকে ৯৫০, হরিণা ৩৮০ থেকে ৫০০, দেশি চিংড়ি ৩২০ থেকে ৫০০, রুই (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৫০, মৃগেল ২০০ থেকে ৩০০, পাঙ্গাশ ১৪০ থেকে ২০০, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০, কই ১৮০ থেকে ২০০, কাতল ২২০ থেকে ৩২০ টাকা। বর্তমানে এসব বাজারে ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭৫০ থেকে ৮০০, ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি। বিডি প্রতিদিন
ইসলামি শরীয়া এর একমাত্র সমাধান