বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর কাছে হিজরী সন ও তারিখের গুরুত্ব অপরিহার্য। হিজরী সন গণনার সূচনা হয়েছিল ঐতিহাসিক এক অবিস্মরণীয় ঘটনাকে কেন্দ্র করে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তদীয় সাথীবর্গের মক্কা থেকে মদীনা হিজরতের ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই আরবী মুহাররাম মাসকে হিজরী সনের প্রথম মাস ধরে সাল গণনা শুরু হয়েছিল। দ্বীনের স্বার্থে মক্কা থেকে মদীনায় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কিরামের হিজরত থেকেই হিজরী সনের সূচনা। মুসলমানগণ হিজরী সনকে ভিত্তি করে বিভিন্ন ধর্মীয় বিধি-বিধান যথা- রমযানের রোযা, ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল আয্হা, শবে-বরাত, শবে-ক্বদর, শবে-মি’রাজ এবং বিভিন্ন মাসের নফল রোযা ইত্যাদি পালন করে থাকেন।
হিজরী সন মুসলিম উম্মাহ্কে মনে করিয়ে দেয় প্রিয়নবী রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মক্কা থেকে সুদূর মদীনায় হিজরতের ঘটনাকে। বস্তুত রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করার সেই ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্মৃতিবাহী হচ্ছে হিজরী সন। এই হিজরত ইসলামের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচনকারী ঘটনা। হিজরতের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মক্কী জীবনের অবসান ঘটে এবং মাদানী জীবনের সূচনা হয়। হিজরতের মাধ্যমেই ইসলামের সুদীর্ঘ বিজয়ের পথ সুপ্রশস্ত হয়।
এ হিজরতের মধ্য দিয়েই ইসলাম এক নবশক্তি লাভ করেছিল। এতদিন পর্যন্ত মুসলমানরা কেবল আত্মরক্ষাই করে এসেছে, মুখ বুজে যুলুম অত্যাচার সহ্য করে এসেছে। অবশেষে হিজরতের মধ্য দিয়ে এতসব যুলুম-অত্যাচারের প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ক্ষমতা তাঁদের অর্জিত হয় এবং রাষ্ট্রশক্তি হিসাবে ইসলাম আত্মপ্রকাশ করে। হিজরত পরবর্তী সময়ে মুসলমানরা ক্রমেই সুসংহত ও সম্প্রসারিত হয়েছে। ইসলাম বিশ্বজনীন রূপে ভাস্বর হয়ে উঠেছে। ইসলামের অবদানে বিশ্ব সভ্যতা সমৃদ্ধশালী হয়েছে।
এক সময়ে মুসলমানরা বিশ্বের এক অজেয় শক্তিতে পরিণত হয়েছিল, জ্ঞান বিজ্ঞানের সকল শাখাকে অবিস্মরণীয় অবদানে সমৃদ্ধ করে তুলেছিল, তার শুভ সূচনা এই হিজরত থেকেই। হিজরত পূর্ব প্রাথমিক যুগের মুসলমানগণের ন্যায় বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলমানগণ অমুসলিমদের হাতে নিপীড়িত নিগৃহিত হচ্ছে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে সে সময়কার মুসলমানদের শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে এবং ক্রমান্বয়ে সুসংহত হয়ে নিজ পায়ে দাঁড়াতে হবে।
ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর (রাযি.) তাঁর শাসনামলে একটি স্থায়ী সনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। হিজরতের বছর থেকে মানুষের মুখে মুখে হিজরতের ঘটনা স্মরণ করে যে বর্ষ গণনা ইতোমধ্যে প্রচলিত হয়ে আসছিল, ৬৩৭ খ্রীষ্টাব্দে সে বর্ষ গণনাকে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সংস্থাপন করে হযরত উমর (রায.) হিজরী সনের প্রবর্তন করেন। যা একমাত্র নির্ভেজাল চান্দ্র সন হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়।
হিজরী সনের কথা আসলেই এই সনের উৎপত্তি তথা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের সেই ঐতিহাসিক ঘটনার কথা এসে যায়। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্মৃতি বিজড়িত সে ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ হিজরতের অপরিহার্য প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে কিছু আলোকপাত করার প্রয়াস পাব, ইন্শাআল্লাহ্।
হিজরত ও দেশত্যাগের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যঃ হিজরত ও দেশত্যাগ মানব ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য বিষয়। প্রাচীনকাল থেকে আজ পর্যন্ত দেশত্যাগ ও হিজরত প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। যুগে যুগে এ প্রক্রিয়ায় সমাজ সভ্যতা এবং জাতির উত্থান-পতন ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আজো এর ভূমিকা শেষ হয়ে যায়নি।
সাধারণতঃ দেশত্যাগ বলতে আপন জন্মভূমি বা আবাসস্থলের যাবতীয় মোহ-মায়া ত্যাগ করে কোন ব্যক্তি বা জাতিগোষ্ঠীর অন্য কোন এলাকায় বা অঞ্চলে স্থানান্তর হওয়াকে বুঝায়। এক কথায় বাস্তুভিটা পরিত্যাগ করে অন্যত্র স্থায়ীভাবে গমন করা।
হিজরত হচ্ছে দেশত্যাগেরই একটি বিশেষ রূপ। যখন কোন মুসলমান ধর্ম ও ধর্মীয় আদর্শ রক্ষার্থে অথবা আদর্শিক কোন প্রয়োজনে নিজের জন্মভূমি বা স্থায়ী আবাসস্থল ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায় বা যেতে বাধ্য হয়, তখন তাকে হিজরত নামে অভিহিত করা হয়। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে হিজরত হচ্ছে, জন্মভূমি বা স্বদেশে যখন মুসলমানদের নিরাপত্তা থাকেনা, যখন সেখানে স্বীয় আদর্শ নিয়ে বাস করা যায় না, তখন সে স্থান ত্যাগ করে সম্ভাব্য নিরাপদ অঞ্চলে স্থানান্তর হওয়া। কোন দেশ যখন শত্রু কর্তৃক বিজিত হয়ে পড়ে, যখন সে অঞ্চলে থেকে শত্রুর সাথে মোকাবিলা করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে, তখন সে দেশ পরিত্যাগ করে অন্য দেশে চলে যাওয়াকে হিজরত বলে।
এককথায় ধর্মীয় প্রয়োজনে বা কারণে বাস্তুভিটা ত্যাগ করে কোন মুসলমানের অন্যত্র গমন বা আশ্রয় গ্রহণকে হিজরত বলা হয়। হিজরত বাধ্যতামূলক বা স্বেচ্ছামূলক উভয়ই হতে পারে। যখন কোথাও মুসলমানদের পক্ষে ধর্মীয় জীবন যাপন করা সম্ভব না হয় বা ধর্মীয় কারণে তাদের উপর নির্যাতন চলে, অথবা কোথাও ধর্মীয় কারণে তাদের জান-মাল ইজ্জত-সম্মানের কোন নিরাপত্তা থাকেনা, তখন তথাকার মুসলমানদেরকে বাধ্য হয়ে হিজরত করতে হয়। আবার বৃহত্তর দ্বীনি প্রয়োজনেও যেমন, দাওয়াতের সম্প্রসারণ, ইল্ম চর্চা ও প্রসার ইত্যাদি কারণেও কোন মুসলমান বাস্তুভিটা পরিত্যাগ করে অন্যত্র স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের হিজরত হচ্ছে স্বেচ্ছামূলক হিজরত। তবে পারিভাষিকভাবে হিজরতের সঙ্গে বাধ্য-বাধকতার বিষয়টি গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট।
মোটকথা, ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, দেশত্যাগের ধারা অব্যাহত রয়েছে এবং থাকবে। ইতিহাসের বিভিন্ন স্তরে সভ্যতার বিকাশে, জাতির উত্থান-পতনে, ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রসার ও মিশ্রণে, জনসংখ্যা বন্টনে এবং নতুন নতুন অঞ্চল আবাদকরণে দেশ ত্যাগ ও হিজরত অত্যন্ত বড় ধরণের উপাদানরূপে কাজ করছে।
হিজরত ইসলামের ইতিহাসে যুগে যুগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমানেও এর গুরুত্ব শেষ হয়ে যায়নি। বস্তুত হিজরত বিভিন্ন কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। কারণগুলো প্রধানত নিম্নরূপ-
ঈমান রক্ষাঃ যদি কোন পরিবেশে কোন মুসলমানের ঈমান রক্ষা ও প্রকাশ দুরূহ হয়ে পড়ে, দ্বীন অনুযায়ী চলা সম্ভব না হয়, তখন সেখান থেকে হিজরত করে অনুকূল পরিবেশে নিরাপদ অঞ্চলে বা দেশে গমন জরুরী হয়ে পড়ে।
ধর্ম পালনঃ যদি কোথাও একজন মুসলমান তার ন্যূনতম ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করতে বাধাগ্রস্ত হয়, তখন সেখান থেকে অবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রামে অন্যথায় হিজরত ছাড়া বিকল্প কোন পথ থাকে না।
ইসলামী বিপ্লবের প্রস্তুতিঃ কোন দেশের অভ্যন্তরে অবস্থান করে যদি সেখানকার পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব না হয়, ইসলাম কায়েম যদি কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে, তখন অন্য কোন অঞ্চলে আশ্রয় নিয়ে সেখান থেকে আন্দোলন ও জিহাদ পরিচালনার জন্য হিজরত প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
ইসলামী রাষ্ট্র গঠনঃ যদি কোন এলাকায় ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয় তখন প্রতিকূল পরিবেশ থেকে হিজরত করে এসে অনুকূল পরিবেশের সম্ভাবনা কাজে লাগানো যেতে পারে।
ইসলামের দাওয়াতের প্রসারঃ ইসলামের দাওয়াতের প্রসারের ক্ষেত্রে হিজরতের ভূমিকা সর্বদাই গুরুত্বপূর্ণ। মুসলমানগণ যুগে যুগে হিজরতের মাধ্যমেই দেশে দেশে ইসলামের প্রসার ঘটিয়েছেন। প্রাথমিক যুগে অনেকেই নিজেদের বাস্তুভিটা ছেড়ে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে গিয়েছিলেন বলেই পৃথিবীর বিরাট অংশে আজ মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। পৃথিবীর কোণে কোণে আজ ইসলাম পৌঁছে গেছে।
বিশ্বব্যাপী খিলাফত প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতিঃ বিশ্বব্যাপী খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য হিজরত ও দেশত্যাগ খুবই প্রয়োজন। মুসলিম বিশ্বের সম্পদকে কাজে লাগানো, উম্মাহ্ কেন্দ্রিক ভাবধারা তৈরী, বিভিন্ন রক্তের মিশ্রণ, স্থানীয় ও ভাষাগত সংকীর্ণতা দূরীকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে হিজরত ও দেশত্যাগের ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। তাছাড়া মুসলিম উম্মাহ্কে এককেন্দ্রিক করতে হলেও ব্যাপকভাবে হিজরত ও দেশত্যাগের প্রয়োজন হতে পারে। যাতে একটি আন্তর্জাতিক চরিত্র সম্পন্ন উম্মাহ্ গড়ে উঠতে পারে। বস্তুতঃ ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক বহুবিধ কার্যকরণেই মুসলিম উম্মাহ্র জন্য হিজরত ও দেশত্যাগ প্রক্রিয়া অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
আত্মরক্ষা ও যুলুম নির্যাতন থেকে মুক্তিঃ যেখানে মুসলমানদের জানমাল ও সম্মানের নিরাপত্তা থাকে না, যেখানে যুলুম অত্যাচার প্রকট আকার ধারণ করে, সেখানে নিরাপদে বসবাস করা সম্ভব হয় না। সুতরাং সেখানকার উদ্ভুত অবস্থার প্রতিকারের কোন সম্ভাবনা না থাকলে সেখান থেকে হিজরত করা ছাড়া উপায় থাকে না।
শত্রুর মোকাবিলায় প্রস্তুতিঃ কোন মুসলিম দেশ যদি অন্যরা দখল করে নেয়, সেখানে থেকে যদি মোকাবিলা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে, তখন শত্রুর মোকাবিলার প্রস্তুতির জন্য অনুকূল কোন অঞ্চলে হিজরত করা অপরিহার্য় হয়ে পড়ে।
স্থবিরতা পরিহারঃ একটি জাতির স্থবিরতা কাটাতে হলে হিজরত গুরুত্বপূর্ণ। হিজরতের মাধ্যমে জাতির মধ্যে আসে গতিশীলতা, দৃঢ়তা, ঝুঁকি নেয়ার প্রবণতা এবং সংগ্রামী মনোভাব। হিজরতের মাধ্যমে জাতীয় জীবনে আসে উজ্জীবন ও জাগরণ।
জনসংখ্যার সুষম বন্টনঃ বিশ্বের জনসংখ্যার সুষম বন্টন ও যেসব এলাকায় মুসলমানরা সংখ্যায় অপ্রতুল, সে এলাকায় মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম প্রক্রিয়া হচ্ছে হিজরত ও দেশত্যাগ। হিজরতের মাধ্যমে আমরা বিভিন্নদেশে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়াতে পারি।
আবাদকরণঃ যেসব এলাকা অনাবাদী হয়ে আছে, যেসব দেশে ভূমির প্রাচুর্য রয়েছে অথচ আবাদ নেই, সেসব এলাকায় হিজরত ও দেশত্যাগের মাধ্যমে মুসলিম আবাদীতে রূপান্তর করা সম্ভব।
অব্যবহৃত সম্পদ কাজে লাগানোঃ যেসব এলাকায় সম্পদ অব্যবহৃত আছে, সেখানে হিজরতের বা দেশত্যাগের মাধ্যমে সম্পদ কাজে লাগানো সম্ভব। এতে সামগ্রিকভাবে মানব সম্পদ কাজে লাগানো সম্ভব। এতে সামগ্রিকভাবে মানব জাতির সম্পদ স্বাচ্ছন্দে বৃদ্ধি পাবে।
আন্তর্জাতিকতাঃ হিজরত ও দেশ ত্যাগের মাধ্যমে মৌলিক দেশীয়, গোত্রীয় বা ধর্মগত সংকীর্ণতা দূর হয়ে আন্তর্জাতিক চরিত্র সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে আন্তর্জাতিক ভাবধারা প্রসার লাভ করে। সংকীর্ণতা দূরীভূত হয়ে উম্মাহ্ কেন্দ্রিক চেতনাবোধ প্রবল হয়।
মুসলমানদের উত্থানের জন্য হিজরত অনিবার্য। তবে হিজরত শুধু নিজেদের বাস্তুভিটা ত্যাগ করা নয়, হিজরত হতে হবে লক্ষ্যাভিমুখী। হিজরত হবে জুলুম-অত্যাচারের উৎখাত ও ইনসাফ ও ন্যায়-নিষ্ঠ আদর্শ প্রতিষ্ঠার জিহাদ প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত। যে হিজরত অত্যাচার উৎখাত করে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জিহাদে রূপান্তরিত হয় না, বা যে হিজরত নিছক দেশত্যাগ, নিছক আত্মরক্ষার কারণেই হয়ে থাকে, সে হিজরত মুসলমানদের উল্লেখযোগ্য কোন কল্যাণ বয়ে আনে না। যে হিজরত মুসলিম উম্মাহর প্রয়োজন পূরণ করবে, কেবল সে হিজরতই অর্থবহ ও ফলপ্রসূ হতে পারে।
যে হিজরত মুসলমানদের মধ্যে আদর্শিক শক্তি সঞ্চার করে, ঈমানী চেতনা বাড়িয়ে দেয়, ক্রমবর্ধমান ত্যাগে উদ্বুদ্ধ করে, জালেমের উৎখাত ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে দৃঢ় সংকল্প সৃষ্টি করে জাতীয় জীবনে আলোড়ন তোলে, যাবতীয় স্থবিরতা ও নিস্পৃহতা কাটিয়ে দেয়, নতুন সমাজ ও সভ্যতা বিনির্মাণে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে, সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে ঐক্যের ভিত্তিকে সুদৃঢ় করে, সর্বোপরি শাহাদাতের প্রেরণাকে শাণিত করে, আজ সে ধরণের হিজরতই মুসলমানদের প্রয়োজন। তাহলে মুসমলমানদের হক্ব ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুনের বিকাশ হবে গতিশীল।