বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকে ভারতীয় হাই কমিশনকে বলা হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলন দমাতে তারা যেন প্যালেট গানের ব্যবহার আর না করে।
মুহাররম মাসে চলমান স্বাধীনতা আন্দোলনে সিকিউরিটি ফোর্স কর্তৃক প্যালেট গান চালালে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে এবং এতে দশম শ্রেণির এক ছাত্র চক্ষু হারায়। এর প্রতিক্রিয়ায় হিউম্যান রাইটস এই বিবৃত প্রদান করে।
হিউম্যান রাইটসের দক্ষিণ এশিয়ার মহাপরিচালক মিনাক্ষি গাঙ্গুলি বলেন, ‘ভারতের আইন প্রণেতাদের পক্ষ থেকে বারবার কাশ্মীরীদের ওপর শর্টগান ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে আন্দোলনকারীরা ভয়ংকরভাবে আহত হচ্ছেন। ভারতীয় হাইকমিশনের জানা উচিত, এর চেয়ে তীব্র আন্দোলন রুখতেও এই জাতীয় অস্ত্র ব্যবহার করা আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভারতের নেতৃবৃন্দ জোর গলায় দাবি করেন, তাদের পলিসিতে কাশ্মীরবাসী উন্নত হচ্ছে। যদি তাই হয় তবে সিকিউরিটি ফোর্সের হাতে মানুষ হত্যা, চক্ষুহরণ ও নিয়মিত আক্রমণের দায় তারা কী করে এড়াবেন!’ মিনাক্ষি আরো বলেন, ‘ভারত সরকারের উচিত, আন্দোলন দমন নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক আইন মেনে তা পুনর্গঠন করা।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিগত এক দশকে -যখন থেকে ভারত সরকার স্বাধীনতাকামীদের বিরুদ্ধে প্যালেট গান ও শর্ট গান ব্যবহার করছে- হাজারো কাশ্মীরী হতাহত হয়েছেন। বহুজনের চক্ষু হারানোর মতো অঙ্গহানি ঘটেছে।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘ভারত সরকার দাবি করে তারা প্যালেট গানের ব্যবহার কেবল চরম মূহুর্তেই করে থাকেন। অথচ আন্তর্জাতিক আইনে চরম আন্দোলন রুখতেও এই গান ব্যবহার করার অনুমতি নেই।’
মিনাক্ষি আরো বলেন, ‘কাশ্মীরে প্যালেট গান ব্যবহারের ফলে মানুষ যেমন আহত হচ্ছেন, ঠিক তেমনই নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। নিহতদের সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান যদিও আমাদের হাতে নেই। তবে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছিলো যে, ২০১৫-২০১৭ সালের মাঝে কাশ্মীরে প্যালেট গানের দ্বারা ১৭ জন নিহত হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘এক সূত্র মতে জুলাই ২০১৬ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত প্যালেট গানের দ্বারা ১৩৯ জন কাশ্মীরী চক্ষু হারিয়েছেন।’
বিবৃতি মতে, ‘কাশ্মীরের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহবুবা মুফতি ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বলেছিলো, জুলাই ২০১৬ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৭ পর্যন্ত কাশ্মীরে প্যালেট গানের আঘাতে ৬ হাজার ২শত একুশ জন আহত হয়েছেন। তন্মধ্যে ৭শত বিরাশি জন চোখ হারিয়েছেন।’
অবশেষে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা কাশ্মীরে ব্যবহৃত এই হাতিয়ারকে ভয়ংকর সাব্যস্ত করলো এবং এর ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের জোর দাবি জানালো।
মিল্লাত টাইমস