ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের কারাগারে প্রতিনিয়ত যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন ফিলিস্তিনের নারী বন্দীরা। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি’র সাথে আলাপকালে এমন অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী মা-বোন।
দীনা কারমী (৪১) নামে এক ফিলিস্তিনি মহিলা ইসরায়েলের কারাগারে ১৬ মাস বন্দী ছিলেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের কারাগারে যৌন নির্যাতনের কথা মনে হলে গা শিউরে ওঠে। প্রতিদিন রাতে জিজ্ঞাসাবাদের নামে আমার উপর জঘন্য যৌন নির্যাতন চালাতো দখলদার ইসরায়েলী পুলিশ অফিসাররা। একপর্যায়ে তারা আমার কাপর খোলে ফেলতো। অনুসন্ধানের নামে আমার উপর যৌন নির্যাতন চালাতো। আমি সবসময় কাঁদতে থাকতাম।পাষবিক নির্যাতন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম।
দীনা কারমীর মতো আরো অনেক ফিলিস্তিনী মা-বোন ইসরায়েলের কারাগারে তল্লাশীর ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
এ ব্যাপারে ফিলিস্তিনের প্রিজনার সাপোর্ট এন্ড হিউম্যান রাইটস গ্রুপ ‘আদামীর’ এর পরিচালক সাহার ফ্রান্সিস বলেন, কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নারী ও শিশু বন্দীদের উপর চাপ প্রয়োগের জন্য যৌন হয়রানিকে বেছে নিয়েছে দখদার ইসরায়েলী পুলিশ।
ফ্রান্সিস আরো বলেন, ইসরায়েলী বিচার ব্যবস্থা যৌন হয়রানির সাথে সম্পর্কিত অভিযোগগুলি গুরুত্বের সাথে নেয় না। আমরা ইসরায়েলী আদালত এবং জাতিসংঘে অনেক অভিযোগ নথিভুক্ত করেছি কিন্তু এখন অবধি তারা এ ব্যাপারে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
২০১৮ সালে ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরস্থ হেবরন শহরের নিজ বাড়ি থেকে দীনাকে ধরে নিয়ে যায় অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলী সৈন্যরা। এরপর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সাথে যুক্ত হয়ে সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার তথাকথিত অভিযোগে তাকে ১৬ মাসের কারাদণ্ড দেয় দখলদার আদালত।
২০১০ সালে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষের সময় তার স্বামী নাশাত কারমী শহীদ হন। তাই তার একা থাকার পরিস্থিতিকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে জিজ্ঞাসাবাদকারীরা বারবার তাকে অবৈধ যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চাপ প্রয়োগ করতো বলে অভিযোগ করেন দীনা কারমী।
ফিলিস্তিনের পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরায়েলের কারাগারে বর্তমানে ৪১ জন মহিলা ও ১৬০ জন শিশুসহ প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ফিলিস্তিনি আটক রয়েছেন।
সূত্র: ইনসাফ টুয়েন্টিফোর ডটকম।