আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য ইকোনমিস্ট চীনের জিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু উইঘুরদের মুসলিমদের বিষয়ে দেশটির সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেছে । শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) “Genocide” is the wrong word for the horrors of Xinjiang শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমটি।
প্রতিবেদনে তারা লিখেছে, স্বৈরশাসনের দেশ হিসেবে চীন প্রকৃত রূপ আড়াল করতে সবসময় মিথ্যা বলবে এবং আপত্তি জানাবে এটাই বাস্তবতা। উইঘুরদের ওপর চীনের অত্যাচারকে আপনি কি বলবেন? এটি কি গণহত্যা নাকি অন্যকিছু? এ বিষয়ে আপনাকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় মনে রাখতে হবে দেশটিতে স্বৈরাচারী শাসন চলছে।
উইঘুদের ওপর যা হচ্ছে শুধু শব্দের অর্থ দিয়ে বোঝালে সেটি ঠিক হবেনা। যেভাবে ‘হত্যাকাণ্ড’ অর্থ একজনকে হত্যা করা, ‘আত্মহত্যা’ মানে নিজেকে হত্যা করা, তেমনি ‘গণহত্যা’ অর্থ একটি জাতিকে হত্যা করা।
চীনে উইঘুর মুসলিমদের উপর অত্যাচার প্রচণ্ড ভয়াবহ। চীন সম্ভবত ১০ লাখ উইঘুরকে কারাবন্দি করে রেখেছে। যাকে ভুলভাবে ‘পেশাগত প্রশিক্ষণকেন্দ্র’(কনসেনট্রেশন কেম্প) উল্লেখ করা হচ্ছে। তারা উইঘুর নারীদের জোরপূর্বক বন্ধ্যা করছে। তবে তাদের হত্যা করছে না।
সংবাদ মাধ্যমটি গণহত্যার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে জাতিসংঘের একটি ঘোষণার ওপর নির্ভর করে, যাতে বলা হয়েছে, গণহত্যা হতে হলে প্রকৃতপক্ষে সরাসরি প্রাণ সংহারের প্রয়োজন নেই। কোনো জাতি বা নৃতাত্ত্বিক, জাতিগত ও ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধ্বংস করতে চাইলে ‘জন্ম প্রতিরোধের চেষ্টা’ বা ‘গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি’ করার মতো ব্যবস্থাই যথেষ্ট বলে বিবেচিত হবে।
তবে, এটি কত বড় পরিসরে হলে গণহত্যা ধরা হবে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে, উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন, সব নারীকে কৌশলে বন্ধ্যা করার মাধ্যমে একটি গোটা জাতি ধ্বংস করা সম্ভব। যা গনহত্যার চেয়েও বেশি কিছু।
দ্য ইকোনমিস্টের ভাষায়, চীন বৈশ্বিক রীতিনীতির জন্য হুমকি। তবে, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। (উল্লেখ্য যে,জলবায়ু পরিবর্তন নাম করে নিজেদের উদ্দ্যেশ বাস্তবায়নই হচ্ছে ক্রুসেডার জোটের মূল লক্ষ।)
সংবাদ মাধ্যমটি আরও উল্লেখ করে যে, চীন শুধুমাত্র ‘গণহত্যা’ই করেনি এর চেয়ে আরও বেশি কিছু করছে। এর মাধ্যমে দেশটি মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে।
উল্লেখ্য যে চীনে মুসলিমদের নির্যাতনের সংবাদ প্রচার করায় ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনকে (বিবিসি) সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে চীন। এর কয়েকদিনের মধ্যেই দ্য ইকোনমিস্ট উইঘুর মুসলিমদের নির্যাতনের বিষয়ে কথা বলেছে।