মিশরে সন্ত্রাস দমনের নামে সিলেবাস থেকে কুরআন-সুন্নাহ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে “সিসি”

0
884
মিশরে সন্ত্রাস দমনের নামে সিলেবাস থেকে কুরআন-সুন্নাহ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে “সিসি”

আরবের নামধারী কিছু ইসলামী সংস্থা, বুদ্ধিজীবি ও শাসকগোষ্ঠি চরমপন্থা দমনের নামে স্কুল কলেজের শিক্ষা সিলেবাস থেকে কুরআন হাদীস ও ইসলামী শিক্ষা উঠিয়ে দিবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তাদের ধারণা, কুরআন হাদীস ও ইসলামী শিক্ষা গ্রহণের ফলে মনুষ চরমপন্থী’ ও  ‘জঙ্গিবাদী’ হয়ে ওঠে৷ তারা সন্ত্রাস ও চরমপন্থা দমনের জন্য মৌলিক ধর্মীয় শিক্ষাটা বহাল রেখে সিলেবাস এবং আরবী ভাষা ও ইতিহাস থেকে  কুরআন হাদীস ও ইসলামী শিক্ষা তুলে দেওয়ার সিন্ধান্ত নিয়েছে৷

আরব বিশ্বের নামধারী কিছু ইসলামী সংস্থা এবং পশ্চিমা বিশ্বের কাছে মাথা বিক্রি করা একদল শাসকগোষ্ঠি ও বুদ্ধিজীবি এমন কিছু নোংরা ও পৈশাচিক চিন্তা ধারার প্রসার ও  বাস্তবায়নের উদ্যেগ নিয়েছে যা আরব প্রজন্মকে ইমান-আমল শূন্য করে ইহুদী খৃস্টানদের আদলে গড়ে তুলবে৷ সর্বপ্রথম এই কু-পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটাতে যাচ্ছে মিশরের ক্ষমতাদখলকারী সামরিক প্রেসিডেন্ট “সিসি”৷

গত(১৭ ফেব্রুয়ারি)আ’লাম টিভি নেট জানায়, দেশটির জাতীয় প্রতিরক্ষা ও সুরক্ষা কমিটির সদস্যে “ফ্রেডি আল-বেয়াদী” এই চিন্তাধারাটিকে বেশ পছন্দ করে৷ লোকটি আরবি ভাষা, ইতিহাস এবং ভৌগোলিক বিষয়গুলিতে ধর্মীয় পাঠ্যকে “মহা বিপদ” হিসাবে বিবেচনা করে৷ তার বক্তব্য, অযোগ্য শিক্ষকরা সিলেবাসে থাকা কুরআন-হাদীসের ব্যাখা করে উগ্রবাদ, সন্ত্রাস ও চরমপন্থী ধ্যান-ধারণা ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ করে দেয়।

এদিকে বিযয়টি মিশরের জনগণের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। মিশরসহ বিভিন্ন দেশের মানুষের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র নিন্দার ঝড় বইছে৷

দৈনিক সংবাদপত্র আ’লম টিভি ও ওয়াতন টিভি নেট জেনারেল সিসি বরাবর এক প্রতিবেদনে লিখেছে, মনে হচ্ছে সরকারের আদেশে মিশরের শিক্ষামন্ত্রণালয় কুরআন হাদীস উঠিয়ে দিয়ে পাঠ্যতালিকায়  ইসলাম ইহুদী ও খৃস্টবাদের সংমিশ্রন ঘটিয়ে এক নাস্তিক্যবাদী শিক্ষাসিলেবাস প্রণয়ন করতে চায়৷ যা বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জন্য চরম হুমকি৷

মিশর মুসলিম দেশ৷ এ দেশের সংবিধানে রয়েছে ‘রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম’, সুতরাং অন্যান্য দেশের মতো এ দেশের প্রতিটি মানুষের জন্যও ইসলামের উৎসগ্রন্থ কুরআন ও হাদীস থেকে ইসলামী শিক্ষা অর্জন করা,  দ্বীনকে বুঝা এবং ধর্মীয় জ্ঞানের প্রতিটি শাখায় পাণ্ডিত্য অর্জন করার অধিকার রয়েছে৷

সন্ত্রাস ও চরমপন্থার সাথে কুরআন হাদীসের নুন্যতম সম্পর্ক নেই- এটা তথাকথিত ইসলাম নামধারী সংস্থা ও শাসকগোষ্ঠি ভালো করেই জানে৷ আসলে তারা নিজেদের ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও অপকর্মগুলোকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই এমন জঘন্য সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে৷

একটু ক্ষতিয়ে দেখলে বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যায়, চরমপন্থা যদি সত্যিই ছড়িয়ে থাকে, তাহলে এর জন্য  মিশরের বৈধ সরকার মুরসিকে উৎখাত করে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারই দায়ী৷ কেননা ক্ষমতাসীন দলের দুর্নীতি, দুঃশাসন, জুলুম এবং জনগনের সম্পদ আত্মসাতের ফলে দেশটিতে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অবক্ষয় ও ক্রমবর্ধমান দারিদ্রতার ফলেই এসব পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে৷

তাদের দুর্নীতি ও অপকর্মের ফলে নবী-রাসূল ও সাহাবায়ে কেরামের ঐতিহ্যবাহী দেশটি ধ্বংস গহ্বরের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে৷ কিছু মানুষ চরম দারিদ্র ও খাদ্যসংকটের ফলে চুরি ও ছিন্তাইয়ের পথ পর্যন্ত বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে৷ এসবের জন্য দায়ী একমাত্র সরকার৷

একসময় ইসলামী সংস্কৃতি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ গৌরবোজ্জল একটি কেন্দ্র হিসেবে মিশর বিবেচিত হতো। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও  প্রাকৃতিক সম্পদের দিক দিয়ে মিশর অন্যান্য দেশের কাছে ঈর্ষণীয় ছিলো৷ আজ সেই মিশর শাসকগোষ্ঠীর কারণেই দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দয়া ও সাহায্যর ভিখারীতে পরিণত হয়েছে৷ এই দয়ার বিনিময়ে ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনে নিজ ভাইদের রক্ত ঝারানো, ফিলিস্তিনিদের মাতৃভূমি ও প্রথম কিবলা ‘‘মসজিদে আকসাকে” জায়নবাদীদের হাতে তুলে দেওয়ার চুক্তিতে দুর্নীতিবাজ কতিপয় আরব শাসকগোষ্ঠির সাথে হাত মিলাচ্ছে মিশর।

অতএব এমন আত্মঘাতিমূলক নিকৃষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়ে কুরআন-হাদীস ও ইসলামী শিক্ষা উঠিয়ে দিলে সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা নির্মূল তো হবেইনা, বরং ফিতনা-ফাসাদ, বিশৃঙ্খলা ও চর্মপন্থার জন্ম দিবে৷ কারণ, প্রজন্ম ইসলামী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হলে বুঝবে না- দেশপ্রেম কী? ধর্ম কী? মানবতা কী? এবং দেশ রক্ষার্থে সংগ্রাম করে প্রাণোৎসর্গ করার জন্যও তৈরী হবেনা তারা৷ কাজেই ইসলামী শিক্ষা রহিত করা মানে ফিতনার দ্বার খুলে দেওয়া৷

সূত্র: ওয়াতন নেট এবং আ’লম টিভি নেট

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘রক্তাক্ত কাশ্মিরে স্বাগতম’ ব্যানার ঝুলছে উপত্যকাজুড়ে
পরবর্তী নিবন্ধইয়েমেনে গোপন ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করছে ইসরাইল-আমিরাত