চীনের দীর্ঘমেয়াদি ঔপনিবেশিক দখলদারিত্বের অংশ হিসাবে পূর্ব তূর্কিস্তানের উইঘুর নারীদের গর্ভপাতের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জাতিগোষ্ঠী নিশ্চিহ্নকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কম্যুনিস্ট চীনের এক সন্তান নীতির অংশ হিসেবে নিয়মিত ভাবে লক্ষাধিক উইঘুর মহিলাদের জোড় করে গর্ভপাত করানো হয়। যেসব পিতামাতা শিশুদের বাঁচাতে চেষ্টা করতো, তাদের পাকড়াও করতে প্রায় চার হাজার চাইনিজ সৈন্য নিযুক্ত করা হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী স্থানীয় ২৫০ জন মুসলিম নারীকে চাইনিজ প্রশাসন জোড় পূর্বক গর্ভপাত ঘটায়।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা ও পূর্ব তূর্কিস্তানের স্বাধীনতার দাবীতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠা জনগণ ১৯৯০ সালের ৫ ই এপ্রিল পূর্ব তূর্কিস্তানের আকু প্রদেশের বারেন গ্রামে একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ আয়োজন করে। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নে মত্ত জান্তা চীন সেই বিক্ষোভ সমাবেশে নির্মমভাবে আক্রমণ করে, ঝাপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র উইঘুরদের উপর।
আগ্রাসী আক্রমণের মাধ্যমে উইঘুর, কাজাক, কিরগিজ ও তূর্কি জাতিগোষ্ঠীর অর্ধশত মুসলিমকে তারা নিহত করে, আটক করে শতশত প্রতিবাদী মুসলিমকে।
বর্হিঃবিশ্বের উদাসীনতা আর সাহায্যের অভাবে পূর্ব তূর্কিস্তানি মুসলিমদের সেই আন্দোলন ভেস্তে যায়।
পূর্ব তূর্কিস্তানের বরফ ধোঁয়া শান্ত জনপদ রক্তের বন্যায় ভেসে যায়। টানা দুই মাস ধরে চলে দখলদার চীনের সেই লুন্ঠন, দমন-নিপীড়ন।
বারেন গণহত্যার ৩১ বছর পূর্তিতে সমবেদনা জানাই দশকের পর দশক জুড়ে নির্যাতিত-নিষ্পেষিত সেইসব সংগ্রামী তরুন ও বৃদ্ধদের, যারা স্বাধীনতা ও ইনসাফের দাবীতে আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত চাইনিজ বৌদ্ধাদের বিরুদ্ধে শক্তহাতে লড়েছেন। বুকের তাজা খুন ঢেলে দিয়ে সূচনা করেছেন প্রতিরোধের সাহসী উপাখ্যান!
১৯৯০ সালের ৫ ই মার্চ স্মরণ করিয়ে দেয় চাইনিজ কম্যুনিস্ট পার্টির নির্মমতা, যারা তাদের বিরোধীদের কঠোরতার মাধ্যমে দমনে সিদ্ধহস্ত।
ঔপনিবেশিক আধিপত্যের উন্মাদনায় নিমজ্জিত চাইনিজ বৌদ্ধাদের মানবতাবিরোধী দখলদাত্বের ফিরিস্তি সুদীর্ঘ। সম্প্রতি চাইনিজ প্রশাসন মসজিদকে নৃত্যশালা ও বিনোদন কেন্দ্রে রূপান্তরিত করছে।
পূর্ব তূর্কিস্তানের উইঘুর মুসলিমদের ভাগ্যে কী ঘটছে একনজরে দেখে নেয়া যাকঃ
– জোড়পূর্বক কারাগারে বন্দীত্ব
– কারাগারে বন্দী নারীদের ধর্ষণ
– কারাগারে বন্দী মুসলিমদের নাপাক শুকরের গোশত ভক্ষণে বলপ্রয়োগ
– ইসলামী রীতিনীতি নিষিদ্ধ
– মুসলিম শিশুদের নাস্তিক্যবাদে দীক্ষা
– জোড়পূর্বক চাইনিজ মুশরিকদের সাথে মুসলিম নারীদের বিয়ে দেয়া
– মসজিদকে ধ্বংসকরণ
– ইসলামি বিয়ে ও নারীদের পর্দাকরণ রহিতকরন
পরিশেষে দখলদার চাইনিজদের জাতিগত নিশ্চিহ্নকরণ কৌশলের নীলনকশা তুলে ধরেছি।
পূর্ব তূর্কিস্তানে নিযুক্ত কম্যুনিস্ট চীনের প্রশাসনিক প্রধান চেন কুয়াংউ বলে,” জাতিগত ধর্মান্তরিতকরণ কেন্দ্রগুলো দীক্ষা দিবে স্কুলের ন্যায়, পরিচালিত হবে সামরিক কায়দায়, নজরদারি হবে কারাগারের মতো, বিদ্রোহীদের কঠোর হাতে দমন করা হবে, অবশ্যই কোন দয়া এখানে নাই, কেন্দ্রগুলো যুদ্ধের দুর্গের ন্যায় শক্তিশালী হবে।”