তৎকালীন মিশরের ত্বাগুত শাসক ফেরাউনের শিশু হত্যাকেও হার মানিয়েছে নাস্তিক্যবাদী ত্বাগুত শাসক চীন সরকার। এ যেন নব্য ফেরাউন। ফেরাউন বানু-ইসরাঈলের বংশ থেকে বেছে বেছে শুধু পুত্র সন্তানকে হত্যা করতো আর চীন সেখানে একধাপ এগিয়ে মায়ের গর্ভেই অনাগত উইঘুরদের হত্যা করছে। বন্দিশিবির থেকে পালিয়ে বেঁচে ফেরাদের জবানবন্দীতে উঠে এলো এমনি ভয়াবহ নিপীড়নের ঘটনা। চীনের নিরাপত্তা বাহিনী কীভাবে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটিয়েছে মুসলিম নারীদের তুরস্কে আশ্রয় নেয়া উইঘুররা তারই বর্ণনা দেন। পুরুষদের জবানবন্দীতেও উঠে এসেছে ক্যাম্পগুলোতে নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র।
জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো হয় উইঘুর নারী বামেরিয়াম রোজির। সেই থেকে চোখের পানিতেই বেঁচে আছেন এই নারী। অনাগত সন্তান হারানোর কষ্ট তিনি ভুলতে পারছেন না।
বেদনার্ত কণ্ঠে বামেরিয়াম রোজি বলেন, ‘আমিসহ একসঙ্গে আরও ৮ অন্তঃসত্ত্বাকে পুলিশ জোর করে নিয়ে যায় হাসপাতালে। এরপর আমাদের একটি করে ট্যাবলেট খেতে দেয়া হয়। ওষুধ খাওয়ার আধা ঘন্টা পর আমাদের পেটে ইনজেকশন দেয়া হয়। এভাবেই ওরা আমার গর্ভের সন্তানকে মেরে ফেলে। অথচ তখন সাড়ে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে ছিলাম আমি।’
রোজির মতো এমন লাখো লাখো নারী দুর্বিষহ জীবন পার করছেন চীনের বিভিন্ন ক্যাম্পে। শুধুমাত্র উইঘুর মুসলিম হওয়ার অপরাধে গর্ভপাতের মাধ্যমে সন্তান নষ্ট ও চিরতরে বন্ধ্যা করে দেয়া হচ্ছে। চীনে কি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন এসব উইঘুররা, তা উঠে এসেছে ব্রিটিশ গণট্রাইব্যুনালে প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দীতে।
দেশটিতে নাস্তিক্যবাদী কর্তৃপক্ষের বর্বরতার শিকার অন্তত ১ মিলিয়ন উইঘুর। কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে আটক, গুম, হত্যা এবং ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে জিনজিয়াং প্রদেশে। এমনকি সংখ্যালঘু মুসলিমদের ঘরবাড়ি মাটির সাথে গুড়িয়ে চলছে উচ্ছেদ অভিযান।
উইঘুর মুসলিম সেমসিনার আব্দুল গফুর বলেন, জোর করে গর্ভপাত ঘটানো হয়। যারাই গর্ভপাতে অস্বীকৃতি জানায় তাদেরই ঘরবাড়ি গুড়িয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়। আমি নিজেই দেখেছি সেই ভয়াবহতা।
বামেরিয়াম রোজি আবারও বলেন, আমি এখানে পালিয়ে আসতে পারলেও চীনাদের ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে আমার ছেলেকে। যেকোনো মূল্যে আমার সন্তানকে ফেরত চাই। ও ছাড়া আমার আর কেউ নেই।
ক্যাম্পগুলোয় জিজ্ঞাসাবাদের নামে বর্বরতা চলছে পুরুষদের ওপরও। আরবিতে বই প্রকাশের অভিযোগে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার মাহমুত তেভেক্কুল।
মাহমুত তেভেক্কুল বলেন, আমাকে আর আমার ভাইকে মাটিতে পিছমোড়া করে বেধে সারারাত পেটানো হয়। টাইগার চেয়ার নামক একটি বিশেষ চেয়ারে বেধে রেখে নির্যাতন করা হতো। একটু নড়াচড়া করলেই, উপড়ে ফেলা হতো হাত-পায়ের নখ।