দখলাদার ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ তদন্তের ঘোরতর বিরোধী ইউরোপীয় দেশসমূহ

0
561
দখলাদার ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ তদন্তের ঘোরতর বিরোধী ইউরোপীয় দেশসমূহ

ইউরোপীয় দেশসমূহ চায় না অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরাইল কর্তৃক সংগঠিত যুদ্ধাপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত হোক।

সম্প্রতি অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সন্ত্রাসী ইসরাইল কর্তৃক বর্বরোচিত আগ্রাসন ও ফিলিস্তিনের অধিকৃত অঞ্চলসমূহে কৌশলগত দমন-নিপীড়নের তদন্ত করতে গত ৩ জুন বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে প্রস্তাবিত ভোটে তিনটি ইউরোপীয় দেশ আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠনের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ও নয়টি রাষ্ট্র ভোটদানে বিরত থাকে।

ইউরো-ম্যাডিটেরিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর এক বিবৃতিতে জানায়,”আন্তর্জাতিক তদন্ত বিরোধী ইউরোপের এমন মনোভাব জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির প্রচেষ্টাকে হ্রাস করবে।”

ইউরো-ম্যাডিটেরিয়ান মনিটর আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোরতর বিরোধী ভোটদাতা জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নিকট গভীর উদ্বেগ জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছে।

ইউরো ম্যাডিটেরিয়ান মনিটরের চেয়ারম্যান র‍্যামি আব্দু স্মারকলিপিতে লিখেন, আমরা এটি জেনে হতাশ যে, একাধিক ইউরোপীয় কাউন্সিলের সদস্যভুক্ত দেশসমূহ দখলদার ইসরাইলি আগ্রাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিরুদ্ধে নিজেদের ভোট দিয়েছে আর নয়টি দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক তদন্তটি অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসন নিরসনে প্রমাণিতভাবে দরকার ছিল।

আব্দু স্পষ্ট করে বলেন,”ইসরাইল কর্তৃক সম্প্রতি গাজায় ন্যাক্যারজনক হামলায় বহু মুসলিম নিহত হয়েছেন, অনেক বেসামরিক ফিলিস্তিনির আবাসন ধ্বংস হয়ে গেছে।”
তাই তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ইসরাইলকে জবাবদিহিতার সম্মুখীন করে ভবিষ্যতে এরুপ জঘন্য হামলার পুনরাবৃত্তি বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে সবাইকে বিশেষত, ইউরোপীয় দেশসমূহকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেন।

আব্দু বলেন,”মানবাধিকার সংরক্ষণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই তদন্তটি দায়িত্বশীল দেশসমূহের আন্তরিক সহযোগিতার উপর নির্ভর করছে।”

উল্লেখ্য, নির্যাতিত ফিলিস্তিন যেখানে ধারাবাহিক ভাবে তদন্তের স্বার্থে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছে, সেখানে দখলদার ইসরাইল হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ অঞ্চলে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক তদন্তকারীদের তদন্ত করতে বাঁধা প্রদান করছে।

মানবাধিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন আব্দু বলেন, “আইনের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক শাসন নিশ্চিত করতে ইউরোপীয় দেশসমূহের বৃহৎ নৈতিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব রয়েছে, ইসরাইলকে আন্তর্জাতিক তদন্তে সহযোগিতার জন্য চাপ প্রয়োগ করা।”

তিনি উল্লেখ করে বলেন,”ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর দুটি প্রধান মূলনীতি হচ্ছেঃ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাকে ব্যহত করার পরিবর্তে সহজতর করা।”

ইউরো-ম্যাডিটেরিয়ান মনিটর চেয়ারম্যান সতর্ক করে বলেন,”দখলদার ইসরাইলি আগ্রাসনের আন্তর্জাতিক তদন্ত বিরোধী ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোর অবস্থান তাদের নিজেদের ও ইউরোপের আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতাকে হ্রাস করবে।”

তিনি তার স্মারকলিপির উপসংহারে বিস্ময়প্রকাশক করে বলেন,”ইউরোপের কথিত আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে শাসনের ডাকে বিশ্বের যে কেউ কিভাবে সাড়া দিবে, যখন খোদ ইউরোপ সন্ত্রাসী ইসরাইলের প্রধান সহায়ক ও পৃষ্ঠপোষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে?”

উল্লেখ্য, গত ১০ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত ১১ দিন ব্যাপী ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় ৬৬ শিশু ও ৩৯ নারী সহ কমপক্ষে ২৫৪ জন মুসলিম নিহত হয়েছেন।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারতে মন্দিরের ‘নিরাপত্তায়’ মুসলিমদের ঘর বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ
পরবর্তী নিবন্ধফেরাউনের শিশু হত্যাকেও হার মানিয়েছে চীন