কথায় আছে নয়টার ট্রেন কয়টায় যায়? বলছি, বাংলাদেশ রেলওয়ের কথা! রেলের শিডিউল বিপর্যয়, কাঙ্ক্ষিত তারিখে টিকেট না পাওয়া, কর্মীদের বাজে স্বভাব আর ঘনঘন লাইনচ্যুতি যেন বাংলাদেশ রেলওয়ের নিত্যদিনের ঘটনা। রেলের সিগন্যাল ব্যবস্থা যেমন দুর্বল, তেমনি করুণদশা ব্রিটিশ আমলের স্টেশন অবকাঠামোগুলোর।
সিংহভাগ ইঞ্জিন চলাচলের অনুপযুক্ত হয়েছে সেই কবেই, তবুও মান্দাতার আমলের মৃতপ্রায় সেই ইঞ্জিনগুলো নিয়ে কোনমতে বেঁচে আছে রাষ্ট্রয়াত্ব এই সেবামূলক খাতটি।
লোক দেখানো নতুন কোচ এলেও তা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অকেজো যন্ত্রপাতির ভাগাড়ে স্থান পেতে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়না। পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাও নাজুক। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মান খুঁজতে হলে আপনাকে বৈশ্বিক সূচকের তলানিতেই আগে চোখ বুলাতে হবে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (WEF) ২০১৯ সালে প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এশিয়ার নিকৃষ্ট রেলওয়ের তালিকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের অবস্থান চতুর্থ। তাছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
উন্নত প্রযুক্তি, আধুনিক অবকাঠামো, উত্তম যাত্রী সেবা আর নিত্যনতুন দ্রুতগতির ট্রেন আবিষ্কার করে বিভিন্ন দেশ যেখানে বিশ্ববাসীকে রীতিমতো চমকে দিচ্ছে, সেখানে প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প আর অদক্ষ কর্মীদের নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ব্রিটিশ আমলের অবকাঠামোগুলো টিকিয়ে রাখতেই নাজেহাল!
ঝুঁকিপূর্ণ রেল লাইন থেকে বগির ঘনঘন লাইনচ্যুতির পাশাপাশি, সংস্কারের অভাবে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে কোন না কোন রেল দূর্ঘটনা।
রেলওয়ের উন্নয়নে ২০২০-২১ অর্থবছরে জনগণের টেক্সের টাকায় ১৫ হাজার ৫১৩ কোটি টাকার বিশাল বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হলেও খারাপ যাত্রীসেবা দিয়ে বছরের পর বছর ধরে কেবল লোকসানই গুনে যাচ্ছে রাষ্ট্রয়ত্ব বাংলাদেশ রেলওয়ে।