দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীরে সন্ত্রাসী ইসরায়েলি সৈন্যদের গুলিতে এক ফিলিস্তিনি কিশোর নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে শনিবার এই খবর সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়।
এর আগে শুক্রবার (২৩ জুলাই) পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ শহরের কাছে নবী সালেহ গ্রামে ফিলিস্তিনিদের এক বিক্ষোভে অভিশপ্ত ইসরায়েলি সৈন্যরা গুলি করলে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে ওই কিশোর আহত হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত কিশোর ১৭ বছর বয়সী মোহাম্মদ মুনির আল-তামিমি নবী সালেহ গ্রামের বাসিন্দা।
দখলদার ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজের কাছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছে, এক ফিলিস্তিনি সন্দেহভাজন পাথর নিক্ষেপ করে ‘এক সৈন্যের জীবন হুমকির মুখে ফেললে’ তাকে আইন অনুসারে গুলি করা হয়।
অপরদিকে বার্তা সংস্থা এএফপির কাছে মোহাম্মদের মা বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ বুলেট ব্যবহার করে তাকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিও চিত্রে দেখা যাচ্ছে যে, ইসরায়েলি সৈন্য দরজা খুলে মোহাম্মদকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে গুলি করে শান্তভাবে স্থান ত্যাগ করে।
পশ্চিম তীরের নাবলুসের কাছাকাছি বেইতা গ্রামে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের প্রতিবাদে বিক্ষোভে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১৪৬ ফিলিস্তিনি আহত হওয়ার একদিন পরেই এই কিশোরের নিহত হওয়ার খবর এলো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যায়, শনিবার ওই কিশোরের জানাজায় শত শত ফিলিস্তিনি অংশ নিয়েছেন।
১৯৬৭ সালে ছয় দিনের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীর দখল করে ইসরায়েল। ওই সময় থেকে ইসরায়েলি নাগরিকরা পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন শুরু করে। দখলকৃত ভূমিতে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ অবৈধ হলেও বিশ্ব সম্প্রদায়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এখনো অবধি পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ করে আসছে সন্ত্রাসী ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
১৯৯৩ সালে অসলো শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পশ্চিম তীর থেকে ধীরে ধীরে ইহুদি বসতি সরিয়ে নিয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে তার নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তরের কথা থাকলেও সন্ত্রাসী ইসরায়েল এই বিষয়ে এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
বর্তমানে পশ্চিম তীরে ১৬৪ বসতি ও ১১৬ উপনিবেশে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ ইহদি বসতি স্থাপনকারী অবৈধভাবে বাস করছে।
সূত্র : মিডল ইস্ট আই