ধু নেশার টাকার জন্য মা, বাবা, স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে। নেশাগ্রস্ত বেকাররাই এ হত্যাগুলো করেছে। রাজশাহী মহানগরী, গোদাগাড়ী, পুঠিয়া ও বাগমারায় ২০১৯ ও ২০২১ সালে ছয়টি হত্যাকান্ড ঘটেছে।
পুলিশ জানায়, ২০১৯ সালের ৯ জুলাই টাকা না পেয়ে মা সেলিনা বেগমকে হত্যা করেন ছেলে আবদুস সালেক। গোদাগাড়ী সার্কেলের এএসপি আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন সালেক উচ্চশিক্ষিত। বাবা স্কুলশিক্ষক মো. শাহাবুদ্দিন। কিন্তু ছেলে দীর্ঘদিন থেকে মাদকাসক্ত। টাকার জন্য মাকে চাপ দিচ্ছিলেন। ঘটনার দিন একপর্যায়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মাকে হত্যা করেন।
একই বছরের ৫ আগস্ট বাগমারার সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নে টাকা না দেওয়ায় মা চম্পা বেগমকে (৭০) পিটিয়ে হত্যা করেন নেশাগ্রস্ত ছেলে আবুল কাসেম (৫০)। ২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি গোদাগাড়ীতে মাদকাসক্ত ছেলের লাঠির আঘাতে মা শঙ্কর রানীর (৬৫) মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা জানান, সুমন দীর্ঘদিন থেকে নেশাগ্রস্ত। নেশা করার জন্য মায়ের কাছে টাকা চান। টাকা দিতে অস্বীকার করায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন সুমন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মায়ের মৃত্যু হয়।
এ বছরের ৫ জানুয়ারি পুঠিয়া উপজেলায় স্ত্রী পলি খাতুন (২০) ও পাঁচ মাসের শিশু সন্তান ফারিয়া খাতুনকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মাদকাসক্ত স্বামী। রাজধানীর দারুসসালাম থেকে ঘাতক ফিরোজকে আটক করে পুলিশ। পুঠিয়ার ওসি রেজাউল ইসলাম জানিয়েছেন, ফিরোজ আরপিএল এলিগেন্স বাসের সুপারভাইজার ছিলেন। একটি সড়ক দুর্ঘটনায় তার একটি পা কাটা পড়ে। এর পরই ফিরোজ হেরোইন সেবন শুরু করেন। হেরোইন কেনার টাকার জন্য মাঝেমধ্যেই স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতেন। এ নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হতো প্রতিদিন। এর সূত্র ধরেই রাগে-ক্ষোভে স্ত্রী ও কন্যাশিশুকে ঘুমের ঘোরে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক ধারণা। সর্বশেষ রাজশাহীতে নেশার টাকা না দেওয়ায় মুমিনুল ইসলাম পিয়াস নামে এক ছেলে তার বাবা জুয়েলকে (৪৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছেন। রবিবার দুপুরে মহানগরীর অচিনতলায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জুয়েল একই এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে। জানা গেছে, দুপুরে মাদক কেনার জন্য বাবার কাছে টাকা চান পিয়াস। টাকা দিতে আপত্তি জানালে ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে তাকে আঘাত করেন। তিনি গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।