গাছে গাছে মাসনুন দোয়ার প্লেট : জামায়াত-শিবির ট্যাগের আড়ালে যুগান্তরের ইসলামবিদ্বেষ!

2
1497
গাছে গাছে মাসনুন দোয়ার প্লেট : জামায়াত-শিবির ট্যাগের আড়ালে যুগান্তরের ইসলামবিদ্বেষ!

ঘটনাস্থল রাজশাহী।

মোহনপুর থানার মোড় থেকে তানোরমুখী ১৫ কিলোমিটার কাশিমবাজার সড়কের দুই পাশের হাজারখানেক গাছে ‘সুবহানআল্লাহ্‌’, ‘আলহামদুলিল্লাহ্‌’, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’, ‘আল্লাহুম্মা আজিরনী মিনান্‌ নার’ – ইত্যাদি বিভিন্ন মাসনুন দোয়া ও যিকির এবং হাদিস ও কুরআনের কিছু আয়াত টিনের প্লেটে লিখে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আর এই যিকির ও দোয়া সমূহকেই ‘জামায়াত-শিবিরের দোয়া’ বলে কটাক্ষ করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে ইসলামবিদ্বেষের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী যুগান্তর পত্রিকা।

গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে যুগান্তরের রাজশাহী প্রতিনিধি আনু মোস্তফা দাবি করে যে, এলাকাবাসী তাকে বলেছে দোয়া সম্বলিত এই টিনের প্লেটগুলো একদল যুবক মোটরসাইকেলে করে রাতের বেলা এসে লাগিয়ে দিয়ে যায়।

এলাকার জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরাই নাকি এসব টিনের প্লেট গাছের গায়ে লাগাচ্ছেন। ঐ রিপোর্টার আরও দাবি করে যে, প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে না পেরে জামায়াত-শিবির গাছে গাছে দোয়ার প্লেট লাগানোর বিশেষ এ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন!

তবে যুগান্তরের এমন রিপোর্ট প্রকাশ করাকে কোন বিছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছেন না সচেতন মুসলিম চিন্তাবীদগণ; বাংলাদেশে ইসলামবিদ্বেষী সমাজ নির্মাণের যে ইহুদি-মুশরিক-নাসারাদের সম্মিলিত চক্রান্ত চলছে, এই রিপোর্ট তার-ই ধারাবাহিক অংশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এদেশের ইসলামবিদ্বেষীরা মূলত ইসলামের সামান্যতম উপস্থিতিও সহ্য করতে পারেনা, তা দেখতে যতই নিরীহ মনে হোক না কেন। -এর আগেও ইসলামবিদ্বেষী প্রফেসর জিয়া রহমান সহীহ্‌ভাবে সালাম দেওয়াকে ‘বিএনপি-জামায়াতের মাসলা’ বলে কটাক্ষ করেছে। -কথিত কাউন্টার টেররিজম ইউনিট তাদের প্রচারিত টিভিসি-তে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি বর্জন, গান-বাজনা ছেড়ে দেওয়া ও গারলফ্রেন্ডের সাথে অশ্লীলতা পরিত্যাগ করাকে জঙ্গিবাদের লক্ষণ বলে প্রচার করছে। -‘সম্প্রিতির বাংলাদেশ’ সংগঠনের ব্যানারে পীযূষ বন্দ্যোপধ্যায় দাড়ি রাখা, টাখনুর উপরে কাপড় পড়া, ইসলামি জ্ঞানচর্চা, জন্মদিন-গায়েহলুদ ইত্যাদি পরিহার করা সহ ইসলামের মৌলিক পালনীয় অনেক বিষয়কে উগ্রবাদের লক্ষণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

এভাবে তারা ইসলামের নানান তাহজিব-তামাদ্দুনকে জঙ্গিবাদ হিসেবে বার বার প্রচার করছে, ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে ভিন্ন ভিন্ন লোক দিয়ে; যাতে করে তা মানুষের মনে গেঁথে যায়।

এই প্রক্রিয়ার বাইরেও, ইসলামকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা আরেকটি পদ্ধতি প্রয়োগ করে।

ডিজিএফআই-এর সাবেক প্রধান মেজর জেনারেল এম এ হালিম, মেজর জেনারেল এম এ মতিন সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত প্রধানদের লিখায় দেখা গিয়েছে, ইসলামপন্থীদেরকে স্বাধীনতাবিরোধী আখ্যা দিয়ে ইসলামকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটা প্রোপাগান্ডা ভারত ও র’ এদেশে তাদের দালাল বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিকর্মী ও মিডিয়া হাউজগুলোকে দিয়ে বাস্তবায়ন করে আসছে।

উল্লেখ্য, ৭১ সালে জামায়াতের রাজনৈতিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে ইসলামবিদ্বেষী চক্র ইসলামের মৌলিক পালনীয় বিভিন্ন বিষয়কে জামায়াতের সাথে জুড়ে দিয়ে প্রচার চালাতে থাকে। এর মাধ্যমে এক শ্রেণীর মধ্যে বিরাজমান জামায়াতবিরোধী মনোভাবকে তাদের অজান্তেই তারা ইসলামবিরোধী মনোভাবে রূপান্তরিত করতে থাকে; ঠিক এমনটিই তারা করেছে রাজশাহীতে গাছে দোয়ার প্লেট ঝুলানোর ঘটনার ক্ষেত্রে।

2 মন্তব্যসমূহ

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারতে নারী-নির্যাতন বেড়েছে ৪৬ শতাংশ : শীর্ষে উত্তরপ্রদেশ আর দিল্লী
পরবর্তী নিবন্ধসোমালিয়া | মুজাহিদদের পৃথক হামলায় ৮ এরও বেশি মুরতাদ সেনা হতাহত