‘ সম্প্রতি বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশন’ একটি জরিপ চালাতে ঢাকার একটি স্কুলের নবম শ্রেণীর কক্ষে আকস্মিক প্রবেশ করে। সেখানে উপস্থিত ৩০ জন ছাত্রের ২৯ জনের কাছেই স্মার্ট মোবাইল ফোন পাওয়া যায়; এই ২৯ জনের মধ্যে ২৫ জনই পর্নোগ্রাফি দেখছিল ক্লাস চলাকালীন সময়ে!
‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ ২০১৩ সালে তাদের করা একটি জরিপে দেখিয়েছে যে, ঢাকা শহরের স্কুলগামী ছাত্রদের মধ্যে শতকরা ৭৭ ভাগ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত, যে হার এখন আরও বেড়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
ইউনিসেফের শিশু সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ সাবনাজ জাহেরিন এক জরিপ চালান ১৫০ জন স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীদের উপর, যাদের বয়স ১৬-১৯। তাদের শতকরা ৬০ ভাগই ইতিমধ্যে কোন না কোন উপায়ে যৌন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তিনি বিশেষভাবে ছেলে-মেয়ে উভয়ের কথাই উল্লেখ করেছেন। এর মূল কারণ হিসেবেও পর্নোগ্রাফি আসক্ত হয়ে এমন অভিজ্ঞতা লাভের আকাঙ্খাকে দায়ী করেছেন তিনি।
শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর,2021) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবি’র সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক দাবি করলেন, বর্তমানে দেশে ব্যবহৃত ২৬শ’ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথের অর্ধেকই ব্যয় হচ্ছে ভার্চুয়াল গেম, টিকটক, লাইকি ও পর্নোগ্রাফি দেখার পেছনে।
বিশেষজ্ঞদের মতে মাদকের মতোই পর্নোগ্রাফি ও একটি ভয়ংকর নেশা। এই নেশার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটে ধর্ষণের মাধ্যমে, আবার কখনো অনিয়ন্ত্রিত যৌন আচরণে লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে; যার হৃদয়বিদারক উদাহরণ দেখা গেছে দিহান-আনুস্কার ঘটনায়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের সমন্বয়ক ডাঃ বিলকিস বেগম জানান, কিছুদিন আগে তারা ৪ বছরের এক শিশুর একটা কেইস পেয়েছেন। ঐ বাচ্চাটিকে তার এক কাজিন ইন্টারনেটে পর্ন দেখিয়ে তার সাথে সকল ধরণের যৌন ক্রিয়া সম্পাদন করেছে। এরকম দুই-পাঁচ-সাত বছরের শিশুদের ধর্ষিত হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে, যার মধ্যে অল্প সংখ্যকই মিডিয়ায় আসছে। তবে আমাদেরকে আরো বেশি আশ্চর্যান্বিত করে ছেলে শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা!
কথিত প্রগতিশীলদের প্রচার করা অবাধ ব্যক্তি স্বাধীনতার নামে ফ্রি-মিক্সিং আর পর্ণ-আসক্তির আরেকটি বিষাক্ত প্রভাব হল অনিরাপদ গর্ভপাত। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে ১১ লাখ ৯৪ হাজার অনিরাপদ গর্ভপাত হয়েছে; অর্থাৎ, প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার ২৭১ টি। তবে বর্তমানে পরিস্থিতির ভয়াবহতা যে আরও মারাত্মক, তা সহজেই অনুমেয়।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সিটিউটের সাইকোথেরাপি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডাঃ মহিত কামাল বলেন, “গ্লোবাল সংস্কৃতির নেতিবাচক দিকে আমাদের তরুন প্রজন্ম, শিশু পজন্ম, টিনেজ প্রজন্ম- নেতিবাচক দিকটা গ্রহণ করতে করতে, প্রফেশনাল নারী-পুরুষের অসৎ অপকর্ম দেখতে দেখতে তাদের ভিতরে কিন্তু শ্রদ্ধাবোধ ও মূল্যবোধগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এবং তাদের ভিতরেও একটি সহিংস মনোবৃত্তিকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ঠেসে দিচ্ছি আমরা। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে, আমি প্র্যাকটিক্যাল অবজারভেশন থেকে বলছি, আগামী ১০ থেকে ২০ বছরের মধ্যে আমাদের যে সমস্ত সংস্কৃতিক জীবনধারা ছিল, ধর্মীয় অনুসাশন ছিল – সব ভেসে যাবে।”
এই বিশেষজ্ঞদের সাথে অনেক আগে থেকেই একমত প্রকাশ করে আসছেন ইসলামি চিন্তাবীদগণ। তাদের মতে ইসলাম আমাদেরকে ব্যক্তি স্বাধীনতার নামে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা বা পশ্চিমা নোংরা অপসংস্কৃতি অনুসরণের অনুমতি দেয় না। মহান আল্লাহ্ তাআলা মনোনীত একমাত্র দ্বীন ইসলামের বিধিবিধান পালন ও বাস্তবায়ন ব্যতীত যে এই বস্তুবাদী অসভ্যতা ও জাহিলিয়াত দূর করা সম্ভব নয়, এব্যপারে জাতিকে বরাবরই সতর্ক করে গেছেন উম্মাহদরদী আলিমগণ।
তথ্যসূত্র:
https://tinyurl.com/mym3r4sm
https://tinyurl.com/3cka78cd
https://tinyurl.com/jx6hrjcy
So sad
আচ্ছা ঐ সাইটগুলো কি নষ্ট করে দেওয়ার কোন সিস্টেম নেই??
এখানে ২০১৩ সালের ৭৩% আসক্ত বলা হয়েছে । কিন্তু বর্তমানে এই হারটা ৯৯% বললে কম হবে না । আমার নিজের চোখে দেখা ঘটনা বলছি । আমার স্কুলের বন্ধুরা প্রায় সবাই পর্ণগ্রাফি আর হস্তমৈথুনে আসক্ত ।
তবে ইতিবাচক বিষয় হল যে , এখন এসব থেকে অনেকেই দূরে সরে আসছে । অনেকেই নামাজ – কালাম নিয়মিত করছে । আলহামদুলিল্লাহ্ ।