চকরিয়ায় ইমামের উপর সন্ত্রাসী হামলা; কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা, পুড়িয়ে দেয় বসতঘর

0
1123
চকরিয়ায় ইমামকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা, পুড়িয়ে দিল বসতঘর

কক্সবাজারের চকরিয়ায় টর্চ লাইটের আলো চোখে পড়ার প্রতিবাদ করায় হাফেজ ফরিদুল আলম (৫৫) নামে এক মসজিদের ইমামকে কুপিয়ে আহত করেছে একদল সন্ত্রাসী।

শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড নোয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ফরিদুল আলমকে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ফরিদুল আলম ওই এলাকার মোহাম্মদ ইসমাইলের ছেলে ও ইলিশিয়া মাঝেরপাড়া জামে মসজিদের ইমাম।

আহত হাফেজ ফরিদুল ইসলাম জানায়, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে আমার বাড়িতে অসুস্থ ছেলে আবদুল্লাহকে দেখতে ২ জন মেহমান আসে। তাদের নিয়ে বাড়ির উঠানে বসে নাস্তা করছিলাম। এসময় স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী নাজেম উদ্দিনের ছেলে নুরুল ইসলাম প্রকাশ লালাইয়াসহ তিন যুবক রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এসময় আমার উঠানের দিকে টর্চ লাইটের আলো ফেললে মেহমানদের চোখে পড়ে। পরে মেহমানদেরকে আগ বাড়িয়ে বিদায় দেওয়ার পর চোখে টর্চ লাইটের আলো পড়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে চিহ্নিত সন্ত্রাসী নুরুল ইসলাম, তার সহপাঠি মো.মিনার ও জমির অতর্কিত ভাবে আমাকে বেধড়ক মারধর করে ও কুপিয়ে আহত করে। আমার শোর চিৎকারে পরিবারের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের কবল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।

তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার জের ধরে ১০-১২জন স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী মিলে ঘরে  শনিবার ভোর রাত সাড়ে ৪টার দিকে আমার বসত ঘরে আগুন দিয়ে জালিয়ে দেয় তাঁরা। সন্ত্রাসীদের দেয়া আগুনে এতে বসত ঘরসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আরিফ দুলাল বলেন, মসজিদের এক ইমামকে কুপিয়ে আহত করে তার বসতঘর জালিয়ে ভস্মিভুত করে দেওয়া খুবই দু:খজনক।

 টর্চ মারার কারণ  জানতে চাওয়াটাই ইমাম সাহেবের ” বিরাট অপরাধ”। “শাস্তি” দিতে গিয়ে সন্ত্রাসীরা ইমাম সাহেবকে কুপিয়ে আহত করেই ক্ষান্ত হয়নি, সাথে সাথে তার ঘরবাড়ীও পুড়িয়ে দিয়েছে।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ঘটনাটা গত শুক্রবার রাতের। তিনদিন হয়ে গেল অথচ মিডিয়ায় এ নিয়ে কোন শোরগোল নেই। অপ্রাসঙ্গিক হলেও মিডিয়ার ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বোঝানোর জন্য এখানে একটা কথা বলতেই হয়, কোন হিন্দুর ঘর পুড়লে ঘটনার তদন্ত ছাড়াই এখানে কিছু মিডিয়া সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ খোজা শুরু করে দিত।
হ্যা,হিন্দু হোক বা মুসলিম যার ঘরেই সন্ত্রাসীরা আগুন দিক এর বিচার অবশ্যই করতে হবে। কিন্তু হাফেজ ফরিদুল ইসলাম একজন দুর্বল ইমাম বলে তার আলোচনায় আগ্রহ না দেখানোটা চরম অন্যায়। এই ঘটনায় শুধু মেইনস্ট্রিম মিডিয়া না, সোশাল একটিভিস্টরাও তো নীরব। স্থানীয় পত্রিকার নিউজ ছাড়া আর তেমন কিছুই চোখে পড়েনি।
ইমাম সাহেবের ব্যাপারে আমাদের এই নিরবতা যে অন্যায় এই উপলব্ধিটুকু থাকা উচিত। কোন খুটির জোরে একজন ইমামকে অকারণেই এভাবে কোপানোর সাহস পায়, হলুদ মিডিয়া চুপ থাকলেও এই প্রশ্ন তোলার দায়িত্ব সোশাল একটিভিস্টদের৷

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅধিকাংশ শিক্ষার্থী মুসলিম হলেও সকল শিক্ষক হিন্দু হওয়ায় ভোলার স্কুলে ইসলাম শিক্ষার ক্লাস হয়না ৩২ বছর ধরে
পরবর্তী নিবন্ধপ্রকৌশলী তুষার কান্তি সাহা বাড়ি ভারতে, অফিস করে বাংলাদেশে