সারা বিশ্ব যখন নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালন করছে, তখন ফিলিস্তিনিরা দখলদার ইসরাইলের কবল থেকে মুসলিম নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে লড়ছেন। মধ্যপ্রাচের বিষফোঁড়া ইসরাইলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক জাতিসংঘ যখন লোক ভোলানো নারীর অধিকার নিশ্চিতে ১৬ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইনের সুবিশাল কর্মসূচি পালনে ব্যতিব্যস্ত, ঠিক তখনো তার মদদপুষ্ট ইসরাইল বহাল তবিয়তেই ফিলিস্তিনকে নারীদের জন্য নরকে পরিণত করে রেখেছে।
ফিলিস্তিন ও ফিলিস্তিন সমর্থন গোষ্ঠীগুলো মানবতাবিরোধী ইসরাইলের কবল থেকে ফিলিস্তিনি নারীদের রক্ষায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছে।
অবৈধ ইসরাইল তার জন্মলগ্ন থেকে ফিলিস্তিনবাসীর উপর যে দমন নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে, তার কবল থেকে ফিলিস্তিনি নারী-শিশুরাও মুক্ত নয়। বরং ইসরাইল তার প্রাণঘাতী অত্যাধুনিক অস্ত্রভাণ্ডার ও উগ্র সৈন্যদের সাহায্যে প্রতিদিনই ফিলিস্তিনি নারীদের গণহারে আহত-নিহত করছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ শে মার্চ ফিলিস্তিনবাসীর শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশে দখলদার ইসরাইলি সৈন্যরা হামলা করে ১৮০০ অধিক মুসলিম নারীকে আহত করে।
২০০৮ সালে গাজায় ইসরাইলের বর্বরোচিত গণহত্যায় ১১০ জন ফিলিস্তিনি নারী নিহত হয়।
২০২১ সালের মে মাসে গাজায় জায়োনিস্ট ইসরাইল কর্তৃক নারকীয় গণহত্যায় ৩৮ জন নারী নিহত হয়, আহত হয় ৩৯৭ জন। তাছাড়াও সে সময়ে ১ হাজার ৬০৩ জন ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করে ইহুদীবাদী ইসরাইল।
ফিলিস্তিন পরিসংখ্যান মতে, ১৯৬৭ সাল থেকে সন্ত্রাসী ইসরাইল ১৬ হাজারেরও অধিক ফিলিস্তিন নারীকে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
গত ৪৩ বছরেরও অধিক সময় ধরে দখলদার ইসরাইল সামরিক অধ্যাদেশ বলে, ১০ হাজার ফিলিস্তিন নারীকে আটক কিংবা বন্দী করেছে।
শুধুমাত্র ২০০৭ সাল থেকে নভেম্বর, ২০০৮ সালের মধ্যে ১২৫ জন মুসলিম নারীকে গ্রেফতার কিংবা ইসরাইলি কারাগারে বন্দী করা হয়; যাদের ৫৬% নারীর বয়স ২০-৩০ বছরের মধ্যে এবং ১৩% এর বয়স ১৮ এর কম।
বর্তমানে ৩৪ জন ফিলিস্তিনি নারী ইসরাইলের কারাগারে বন্দী আছেন।
ইসরাইলি কারা অভ্যন্তরে মজলুম ফিলিস্তিনি নারীরা শিক্ষা, চিকিৎসা, পরিবারের সাথে সাক্ষাতের মতো মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে কঠোর কারা শর্তের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। মুসলিম নারীদের নির্জন সেলে কারাবাস কিংবা ক্ষতিকর পোকামাকড়, আবর্জনাপূর্ণ জনাকীর্ণ অন্ধকার কুঠুরিতে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। বন্দী নারীদের সু-চিকিৎসা, গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্য সেবা কিংবা স্বাস্থ্যবিধি কোনটিরই বালাই নেই ইসরাইলি প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত অত্র জেলগুলোতে।
গ্রেফতার ও কারাগারে অধিকাংশ ফিলিস্তিনি নারীদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, অপমান, হুমকি, দেহ তল্লাশি ও যৌন নিপীড়ন ইসরাইলি কারাগারের নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়।
তাছাড়াও সন্ত্রাসী ইসরাইল কর্তৃক জোরপূর্বক ফিলিস্তিন ঘরবাড়ি ধ্বংস ও উচ্ছেদের ফলে মুসলিম নারীরা তাদের ভিটেমাটি হারিয়ে দরিদ্র ও বাস্তুচ্যুত হতে হয়। ফলে নারীরা আর্থ-সামাজিক ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। বসবাসের অনুপযোগী পরিবেশ কিংবা শরণার্থী শিবিরে গাদাগাদি করে থাকতে হয়।
আল মিজানের প্রামাণ্যচিত্র মতে, গত মে মাসে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে ১১৪ টি নারীর গৃহ সহ ৭৪০ টি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে যায়।
উক্ত ইহুদিবাদী আগ্রাসনে গাজার পানি, বিদ্যুৎ সরবরাহ সহ শিল্প-বাণিজ্যিক অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নারীদের মালিকানাধীন ৩১ টি দোকান ধ্বংস হয়ে যায়, ফলে তারা একমাত্র আয়ের উৎস হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন।
দখলদার ইসরাইলি আগ্রাসনে পরিবারের একমাত্র অর্থ উপার্জনকারী স্বামী, পিতা কিংবা ভাইকে হারিয়ে অনেক ফিলিস্তিন নারী ও শিশু ইতিমধ্যে বেদনার অতল গহ্বরে হারিয়ে গেছেন।
তথ্যসূত্রঃ
1.On International Day for Elimination of Violence against Women, Palestinians urge to protect women living under Israeli occupation
https://tinyurl.com/yckmd34h
ওরাই নাকি আবার নারিঅধিকার নিশ্চিত করবে!
সম্ভবত আপনাদের তথ্য আন নসর করে থাকে যেন
কোন বিকৃত ছাড়া হুবহু কপি।