আজ বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ২৯তম বার্ষিকী। মুসলিমদের ঐতিহ্যবাহী বাবরি মসজিদকে হিন্দুত্ববাদিরা কাল্পনিক গল্প সাজিয়ে শহিদ করে দিয়েছে। শুধু এতেই ক্ষান্ত হয়নি আরো বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী মজজিদ ভেঙ্গে দেওয়ার চক্রান্ত করছে।
ভারতের গুজরাটে ২০০৩ সালে বাবরি মসজিদ ৬ মাস খোঁড়াখুঁড়ির পর আগস্টে ভারতের আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে বিভাগ (এ্যাএসআই) এলাহাবাদ হাইকোর্টকে জানায় যে, মসজিদের নিচে একটি মন্দির থাকার প্রমাণ মিলেছে। ১৯৯২ সালে করা সেবক নামে একদল উগ্রবাদী হিন্দু গোষ্ঠী বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে দেয়। তারা দাবি তুলে সেখানে রাম মন্দির ধ্বংস করে বাবরি মসজিদ স্থাপন করা হয়েছে। তাই মসজিদ ভেঙ্গে আবার রাম মন্দির করতে হবে।
কিন্তু দীর্ঘ গবেষণা করে ভারতের দুই প্রত্মতাত্ত্বিক সুপ্রিয় ভার্মা ও জয়া মেনন জানিয়েছে বাবরি মসজিদের মাটির নিচে কোনো মন্দিরের অস্থিত্ব নেই। সুপ্রিয় ভার্মা ভারতের জওহারলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্মতত্ব বিভাগের অধ্যাপক আর শিব নদর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রধান জয়া মেনন।
বাবরি মসজিদের নিচে রামমন্দিরের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে ভারতের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর (এএসআই) মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল বলেও দাবি করেছে দুই প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ। হাফিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ সুপ্রিয় ভার্মা ও জয়া মেনন বলেছিল, ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের নিচে রামমন্দির থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ২৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে তারা ওই সাক্ষাৎকার দিয়েছিল।
সুপ্রিয় ভার্মা ও জয়া মেনন দাবি করেছে, এএসআইয়ের দেওয়া তথ্য সঠিক নয়। তারা মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল।
সুপ্রিয় ভার্মা ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকায় খননকাজে নিয়োজিত বিশেষজ্ঞরা চাপের মধ্যে ছিলেন। তাদের আসলে বাধ্য করা হয়েছিল মন্দিরের পক্ষে বলতে। অনুসন্ধানের নেতৃত্বে ছিলেন বি আর মানি, যাকে এলাহাবাদ হাইকোর্ট দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার মানিকে জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক পদে বসায়।
সুপ্রিয় ভার্মার মতে, বাবরি মসজিদের নিচে পুরোনো ছোট মসজিদ ছিল। এর পশ্চিম পাশের দেয়াল, ৫০টি পিলার ও স্থাপত্যশৈলী তারই প্রমাণ। পশ্চিম পাশে দেয়াল দেখলেই বোঝা যায় যে এই পাশে মুখ করে নামাজ পড়া হয়েছে। এর কাঠামো মসজিদের মতো, মন্দিরের মতো নয়।
দিবালোকের ন্যায় এমনসব প্রমাণ থাকার পরও শুধু মুসলিম বিদ্বেষের কারণে হিন্দুত্ববাদিরা মসজিদ ভেঙ্গে দেওয়ার মত জঘন্য কাজ করেছে।
না ভারতের আদালতে উগ্র সন্ত্রাসীদের কোন বিচার হয় নি।
উল্টো অন্যায়ভাবে আদালতের রায় তাদের পক্ষে নেওয়ার পর হিন্দুত্ববাদিরা আরো বেপরোয়াভাবে হুমকি দেয়, এহতো সেরফ শুরু হ্যায়, কাশী, মথুরা বাকি হ্যয়।
তথ্যসূত্র:
১.ভারতের বাবরি মসজিদের নিচে কোন মন্দিরের অস্থিত্ব নেই: প্রত্মতত্ত্ববিদ
https://tinyurl.com/2my8rxy4
২. বাবরি মসজিদের নিচে মন্দির থাকার কথা মিথ্যা
https://tinyurl.com/2hdux7ya
৩.বাবরি মসজিদ: ভারতের অযোধ্যায় মসজিদ ভাঙ্গার ঘটনা সব আসামিকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত
https://tinyurl.com/mrywmcru
এরকম মিথ্যা নাটক সাজানোর ঘটনা এইবারই প্রথম নয়!