প্রায় দুই দশক পূর্বে শুরু হয়েছিল সোমালিয়ায় দখলদার পশ্চিমা শক্তির বিরুদ্ধে দেশটির তাওহিদী জনতার সংগ্রাম। যা ধীরে ধীরে দখলদার শক্তিকে হটিয়ে শরিয়াহ্ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের রুপ নেয়। আর এই আন্দোলনে জনগণকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাহযোগিতা করে বৈশ্বিক ইসলামিক প্রতিরোধ বাহিনী জামা’আত-আল কায়েদাহ্। সেই থেকে শুরু হয় সোমালিয়ায় ইসলামের নতুন এক জাগরণ, যা বর্তমানে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে প্রতিবেশি দেশগুলোতেও।
আল্লাহ্র ইচ্ছায় সোমালিয়ায় শুরু হওয়া শরিয়াহ্ প্রতিষ্ঠার এই আন্দোলন এখন বিজয়ের ধারপ্রান্তে এসে উপনীত হয়েছে। সাধারন জনগণ আর মুসলিম বীরেরা প্রতিদিনই দখলদার শক্তি আর তাদের গোলামদের বিরুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অভিযান চালাচ্ছেন। বিজয় করছেন একের পর এক এলাকা ও শহরসমূহ, যেখানে স্বগর্বে উড়ছে তাওহীদের কালিমাখচিত পতাকা।
সেই ধারাবাহিতায় হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদগণ গত ১৩/১২/২০২১ তারিখ দ্বিপ্রহরের কিছু সময় পর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন সেন্ট্রাল সোমালিয়ার কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ মাতাবান জেলা। এটি ছিল মধ্য সোমালিয়ার হিরান রাজ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জেলা।
হারাকাতুশ শাবাব সূত্রে জানা গেছে, মুজাহিদগণ ঐদিন খুব ভোর থেকেই জেলাটির আশপাশের এলাকায় অভিযান চালাতে শুরু করেন এবং ভোরের আলো ছড়িয়ে পড়ার আগেই শহরের প্রধান সড়কগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেন তাঁরা।
আর এই সংবাদ খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে শত্রু শিবিরে, সেই সাথে আল্লাহ্ তা’আলা শুত্রুদের অন্তরে ভয় ঢুকিয়ে দিলে জেলাটির অনেক এলাকা থেকে গাদ্দার সৈন্যরা ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ভয়ে যুদ্ধের চিন্তাভাবনা করার আগেই পালিয়ে যায়। সেই সাথে জেলাটির গুরুত্বপূর্ণ ২টি শহর ছেড়েও পালিয়ে যায় পশ্চিমা ক্রুসেডার ও সেক্যূলার তুরষ্কের প্রশিক্ষিত সোমালি গাদ্দার সৈন্যরা। ফলে মুজাহিদগণ কোন যুদ্ধ ছাড়াই দ্বিপ্রহরের আগেই জেলাটির ‘বিরজাদাদ এবং বা’আদা’ নামক দু’টি শহরের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।
শহর ২টি বিজয়ের পর মুজাহিদগণ মাতাবানের কেন্দ্রীয় শহরের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করেন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই শহরের আশপাশের এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেন। আর দ্বিপ্রহরের পর মুজাহিদগণ পৌঁছে যান শহরে প্রাণকেন্দ্রের নিকট। মাত্র ২ ঘন্টার ব্যবধানে মুজাহিদগণ কেন্দ্রীয় শহরে ঢুকে পড়েন এবং পুলিশ স্টেশনে হামলা চালিয়ে তা ধ্বংস করে দেন। এতে গাদ্দার সামরিক বাহিনীর ভিতরে ভয় ঢুকে যায় এবং সৈন্যরা যে যার মত করে পালাতে শুরু করে।
অনলাইনে প্রচারিত ছবিগুলোতে দেখা যায়, ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাবের মুজাহিদরা তখন দলে দলে তাওহীদের কালিমা খচিত কালো পতাকা হাতে শহরের প্রাণকেন্দ্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা নিশ্চিত করেছেন যে, ভারী অস্ত্রে সজ্জিত ইসলামিক প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন জেলাটির উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন। মুজাহিদগণ শহরের সামরিক ঘাঁটি, জেলা প্রশাসক ভবন, প্রশাসনিক সদর দফতর সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও সরকারি ভবনগুলোতে তাওহীদের পতাকা উড়িয়ে দিয়েছেন।
আশ-শাবাবের মুখপাত্র ইসলামিক রেডিও ‘আন্দালুস’-কে বলেছেন যে, মুজাহিদগণ সম্পূর্ণ মাতাবান জেলা এবং এর আশপাশের এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। বর্তমানে মুজাহিদগণ জেলাটির পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের অভিযান চালাচ্ছেন বলেও তিনি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ইসলামিক রেডিও ‘আন্দালুস’ স্থানীয় বাসিন্দাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে, যেখানে মুসলিম জানসাধারণ আশ-শাবাবের এই বিজয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তাদের অনেকে বলছেন যে, জনগণ আশ-শাবাব মুজাহিদদের ব্যাপকভাবে স্বাগত জানিয়েছে, মানুষ আনন্দ মিছিল করছে। মুসলিম বীরেরা এখন জেলা ও এর আশেপাশের এলাকাগুলোতে টহল দিচ্ছেন।