আওয়ামীলীগ নেতার উলামা বিদ্বেষ: মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের নামে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা

উসামা মাহমুদ

2
2248
আওয়ামীলীগ নেতার উলামা বিদ্বেষ: মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের নামে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা নামে মুসলিম হলেও তাদের কার্যক্রম অমুসলিমদেরকেও হার মানায়। ইসলাম বিদ্বেষ তাদের দলীয় এজেন্ডা। হিন্দুত্ববাদীদের দালালী করতে গিয়ে তারা এদেশের আলেম উলামা ও তাওহীদবাদী মুসলিমদের উপর নির্মম নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। আলেমদের সত্য কথা বন্ধে নানাভাবে চক্রান্ত করে যাচ্ছে। ইসলামের বিধি বিধান ও বাস্তব সত্য কথা বলার জন্যেও আলেম উলামাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিন বাদী হয়ে একটি মাদ্রাসার শিক্ষক ছাত্রসহ ১০জনকে আসামী করে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করেছিল বেশ কয়েক বছর আগে।
গত ২৬ শে ডিসেম্বর ২১ই রোজ রোববার রাতে একটি মাদরাসা থেকে সেই মামলার অযুহােতে মোট ৪জনকে আটক করে সন্ত্রাসী র‍্যাব। পরে সোমবার বিকেলে তাদের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে কোর্টে প্রেরণ করেছে গাদ্দার পুলিশ।

উপজেলার সদর ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী জামিয়া গাফুরিয়া দারুসসুন্নাহ ইসলামপুর মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মুফতি কাওসার হাসান (৪২) ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজার চালমোহাল জামে মসজিদের খতিবের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এরই মাঝে গত ৫মার্চ শুক্রবার ওই মসজিদে জুম্মার নামাজের খুতবার পূর্বে বয়ানে তিনি বলেন “রাষ্ট্রপতি সেনাপ্রধানের ভাইয়ের মৃত্যুদন্ড মওকুফ করে দিয়েছে অথচ অভিজিৎ হত্যার আসামীদের ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাই আমরা এই জালিম শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করব আপনারা এতে রাজী আছেন তো?”
তার এমন বক্তব্যের বিষয়ে পরদিন ওই মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বুলবুল ওই শিক্ষক কাওসার হাসানের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন “আমি যা বলেছি ঠিক বলেছি। এবিষয়ে তাকে জ্ঞান না দিতে বলেন।” এ কখা বলায় সভাপতি ঐ আলেমকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে।

পরে ওই শিক্ষক বিষয়টি মাদ্রাসায় গিয়ে ছাত্র শিক্ষকদের কাছে জানান এবং মাদ্রাসা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির মোবাইল ফোনে ধারণ করা কথোপকথনের রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দেন। এনিয়ে ছাত্র ও শিক্ষক মিলে মাদ্রাসা থেকে প্রতিবাদে নামেন। এসময় তারা মাদ্রাসা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বুলবুলের পদত্যাগ দাবি করেন।
দূঃখজনক হলেও সত্য, আওয়ামী লীগের এই আলেম উলামা বিদ্বেষী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বুলবুলের পদত্যাগের পরিবর্তে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন সমঝোতার নামে কমিটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে দেয়।
পরে বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর মাদরাসাটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি মাদরাসার কার্যকরি পরিষদের মিটিংয়ে প্রতিবাদের ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও ছাত্রদের বহিষ্কার ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঘটনার সাথে জড়িত শিক্ষক ও ছাত্রদের বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত হওয়ার পরও আওয়ামী সন্ত্রাসীর রোষানল থেকে রেহাই পাননি তাঁরা। তাঁদের নামে মিথ্যে অভিযোগ এনে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল মতিন। তখন থেকেই ওই ছাত্র ও শিক্ষকদের জীবনে নেমে প্রসাশনিক হয়রানি। হয়রানি থেকে বাঁচতে বাড়িঘর ছেড়ে নিরুদ্দেশ জীবনযাপন করতে থাকেন।
এরই মাঝে গত রোববার রাতে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার জামিয়া দ্বীনিয়া দারুল উলুম মার্কাজ মাদরাসা থেকে র‍্যাব, শিক্ষক ছাত্র মিলিয়ে ৪জনকে আটক করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। পরে পুলিশ সোমবার বিকেলে তাদের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে কোর্টে প্রেরণ করা করে।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কাদের মিয়া বলে, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়েছে। তারপর থেকেই তারা পলাতক ছিলো। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এদেশে মুরাদের মত অপরাধীরা মামলা হওয়ার পর বিদেশে যেতে পারে, প্রিয়া সাহা রাষ্ট্রদোহীতা করেও কিছুই হয় না। সেনাপ্রধানের ভাই হওয়ায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী হওয়ার পরও রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দেয়। অথচ, আলেমরা ইসলামের কথা বললেই মামলা করে হয়রানি করা হয়। এর কারণ হল এদেশে ইসলামি বিচার ব্যবস্থা নেই। তাই জালেমদের হাত থেকে ইসলাম,আলেম-তলাবাদেরদের রক্ষা করে, প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য মুসলিমদের এক কালিমার পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নেই।
তথ্যসূত্র:
সন্ত্রাসী-আইনে-মাদরাসার-চার-শিক্ষক-ও-ছাত্র-গ্রেফতারঃ-৫দিনের-রিমান্ড-চেয়ে-কোর্টে-প্রেরণ
https://tinyurl.com/5rwr9uhn

2 মন্তব্যসমূহ

  1. ৫মার্চ শুক্রবার ওই মসজিদে জুম্মার নামাজের খুতবার পূর্বে বয়ানে তিনি বলেন “রাষ্ট্রপতি সেনাপ্রধানের ভাইয়ের মৃত্যুদন্ড মওকুফ করে দিয়েছে অথচ অভিজিৎ হত্যার আসামীদের ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাই আমরা এই জালিম শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করব আপনারা এতে রাজী আছেন তো?”

    ⚔️⚔️⚔️⚔️

    এই সত্যবাদী আলেমের মত
    যদি মসজিদের প্রতিটি মিম্বার থেকে জিহাদের আলোচনা করা হতো তাহলে আবু জাহেলের বাচ্ছারা পলানোর রাস্তা খুজে পেতো না…⚔️⚔️

Leave a Reply to রাফি প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধকীভাবে সম্ভব হয় রক্তপাতহীন কাবুল জয়?
পরবর্তী নিবন্ধভারতে ইনস্টাগ্রামে ভিডিও আপলোড করার অযুহাতে মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে হিন্দুত্ববাদীরা