সাল ১৯৯০, অগাস্ট ১০ এবং ১১ এর ঘটনা।
লোভ হিংসা আর প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত ভারতীয় সেনারা সেদিন ঘুরে বেড়াচ্ছিলো ‘ভূস্বর্গ’ কাশ্মীরের পাজিপোরা, বালিপোরা, কোনান এবং অন্যান্য এলাকায়। সেনাদের হাব-ভাব দেখে যেকেউ বুঝতে পারছিলো- এরা এখন যে কাউকে গুলি করতে প্রস্তুত; পথচারী, কিশোর, বৃদ্ধ-বণিতা কিংবা যুবক- কেউই রেহাই পাবে না মানুষরূপী এই হিংস্র হিন্দুত্ববাদী পশুগুলোর হাত থেকে। পাজিপোরা এলাকায় সেদিন নেমেছিলো এক কোম্পানীরও বেশি সেনা, সকলের পকেটে ছিল মদের বোতল, হাতে তাদের অস্ত্র।
প্রথমেই তারা জোড়পূর্বক শিশু এবং পুরুষদের থেকে নারীদেরকে আলাদা করে ফেলে। প্রতিবাদ, কান্নাকাটি কিংবা অসহায় আর্তনাদ- কোন কিছুই সেদিন ঐ অবলা মুসলিম নারীদের সম্ভ্রম রক্ষা করতে পারেনি হিন্দুত্ববাদের পোষা হিংস্র হায়েনাদের হাত থেকে।
নারীদের মধ্যে অনেকেই ততক্ষণে নিজেদের ইজ্জত রক্ষার্থে ছুটে পালিয়েছিলেন অন্ধকার গহীন বনের দিকে। তবে অন্য উপায় করতে না পেরে তখনও ২০-৩০ জনের মতো অসহায় নারী নিজেদের লুকিয়ে রেখেছিলেন একটি ঘরে।
দুর্ভাগ্যবশত, ভারতীয় হায়েনারা তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে যায়। হিংস্র শকুনের মতো তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই অসহায় নারীদের ওপর। সাত থেকে পঞ্চাশ বছরের ১০-১৫ জনের মতো স্বাস্থ্যবান এবং সুন্দরী নারীদের তারা বাছাই করে নেয় সেখান থেকে।
ঐ কামুক নরপশুর দল এসে টেনে-হেঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলে তাদের পড়নের কাপড়গুলো। তাদের সেই টুকরো টুকরো ছেঁড়া কাপড় ধান ক্ষেতের কিনারায় জড়ো করে তা দিয়ে অগ্নিকুন্ড তৈরী করে ঐ হায়েনার দল। গ্রামের কমিটি মেম্বাররা এক সপ্তাহ পরেও খুঁজে পেয়েছিল তাদের সেই পোড়া কাপড়গুলো।
আরেকদিকে ঐ নরপশুদের আরেকটি দল সেই বাছাইকৃত সুন্দরী নারীদের আবারও নিয়ে যায় সেই ঘরের ভেতর, যেখান থেকে বের করে আনা হয়েছিলো তাদের। তারপর সেখানেই তাদের উপর চলতে থাকে সম্ভাব্য সকল উপায়ের অমানবিক নির্যাতন, করা হয় লাগাতার গণধর্ষণ।
মানুষরূপী ঐ হিন্দুত্ববাদী হিংস্র পশুগুলোর নির্যাতন এতটাই বর্বরোচিত এবং অমানবিক ছিলো যে, ধর্ষণের শিকার সাত বছরের একটি মেয়ের রক্তক্ষরণ চলতে থাকে বিরামহীন- এই ভয়াবহ ঘটনার পাঁচ দিন পর পর্যন্ত।
দখলদার ভারতীয় হায়েনারা সেদিন ‘জয় হিন্দ’ স্লোগান দিতে দিতে পালাক্রমে ধর্ষণ করতে থাকে ঐ অসহায় মুসলিম নারীদের।
[“কাশ্মীর এ ফ্লেইম”, ভলিউম ১ ও ২, অগাস্ট ১৯৯০, তাহ্রীক-ই-হুরিয়াত-ই-কাশ্মীর]
বেসামরিক মুসলিমদের ধর্ষণ বা সমকাম এই হিন্দুত্ববাদী কুকুর সেনাদের কাছে খুব সাধারণ ব্যপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদেরকেও এই ভারতীয় হায়েনারা ধর্ষণ করে তাদের পরিবারের লোকদের সামনেই।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, পরিবারের এক সদস্যকে অন্য সদস্য দ্বারা জোর করে ধর্ষণ করাতেও বাধ্য করা হয়। বন্দীদের চরম অপমান করা ও মনোবল ভেঙ্গে ফেলার জন্য তাদের যোনি এবং মলদ্বারের ভেতরে ঢুকানো হয় লোহার রড ও জ্বলন্ত সিগারেট! এমনকি বন্দীদের স্তন ও যৌনাঙ্গগুলি সংকুচিত করা সহ, তাদের বাধ্য করা হয় ওরাল সেক্স করতে, এমনকি মুখে পতিত ঐ পসুদের বীর্য গিলতে!
২১ বছরের বি.কম. পড়ুয়া একজন ছাত্র মুশতাক মালিক। যখন ভারতীয় সেনাবাহিনির গোলাগুলি চলছিলো, সোনার ছিল তখন বাজার মহল্লা থেকে মাত্র দুই ব্লক দূরে। ঐ সময় দখলদার সেনাদের ছোঁড়া একটি গুলি মুশতাকের মাথা এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয়। মুশতাকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয় তাঁর হাতঘড়ি শনাক্ত করার মাধ্যমে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক, ভাবে তার আগেই মুশতাককে দাফন করে দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী।
[আয়েশা কাগাল, সানডে রিভিউ টাইমস অফ ইন্ডিয়া, নয়াদিল্লী, এপ্রিল ২৯, ১৯৯০]
এই হচ্ছে বিগত কয়েক যুগের কাশ্মীরি মুসলিমদের জীবন-মান উন্নয়ন করার কিছু টুকরো বাস্তবতা; যে বাস্তবতা মিডিয়া সন্ত্রাস, তথ্য ইতিহাসস বিকৃতি, গুম-খুন ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন আর লক্ষ লক্ষ ডলার (ও রূপী) খরচ করার মাধ্যমে ঢেকে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়েছে, হচ্ছে। তবে হিন্দুত্ববাদীরা অন্তত এদিক থেকে বিশ্ববাসী ও ঘুমন্ত মুসলিম উম্মাহর দৃষ্টি অনেকাংশেই ঘুরিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছ – এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
অনুবাদক : ওবায়দুল ইসলাম
এই লেখা একজন মুসলিম ভাইয়ের ঘুমকে হামার করে দেই।
আমরা অবশ্যই মনে রাখবো এবং প্রতি কাজের বদলা নিবো ইনশাআল্লাহ।